সাকিব এখন ভিন্ন মানুষ: পাপন
ক্রিকেটার হিসেবে তিনি বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা। তবে সাকিব আল হাসানকে নিয়ে একটা অভিযোগ অনেকেরই- তিনি সবার সাথে মিশতে পারেন না। এমনকি ড্রেসিং রুমেও তিনি সব সতীর্থের সঙ্গে সেভাবে মিশতে পারেন না বলে শোনা যেত। তবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের চোখে, সাকিব এখন বদলে যাওয়া এক মানুষ। তার কথায়, ‘আমি ধরি সে ভিন্ন একটা মানুষ।’
হঠাৎ বিসিবি সভাপতি এমন বলছেন, সাকিবের নেতৃত্ব গুন নিয়ে বলতে গিয়ে। আইসিসির দেওয়া নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ক্রিকেটে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন সাকিব। ২৮ অক্টোবর শেষ হচ্ছে তার নিষেধাজ্ঞা। শ্রীলঙ্কা সিরিজ হলে, দ্বিতীয় টেস্ট থেকেই সাকিবকে পাওয়ার আশা বিসিবির।
ক্রিকেট ভক্তদের অনেকের মনেই প্রশ্ন, সাকিব নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফিরলেই কি অধিনায়কত্ব ফিরে পাবেন? এমন কৌতূহলের কারণ নিষেধাজ্ঞার আগে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক ছিলেন তিনিই।
সাকিব নিষিদ্ধ হওয়ায় টেস্ট দলের দায়িত্ব দেওয়া হয় মুমিনুল হককে, টি-টোয়েন্টি দলের মাহমুদউল্লাহ। আর মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা ওয়ানডে নেতৃত্ব ছাড়ার পর অধিনায়ক করা হয় তামিম ইকবালকে।
এমন প্রেক্ষিতে বিসিবি সভাপতি নিজের একান্ত ভাবনা জানিয়েছেন। ইউটিউব শো নটআউট নোমান অনুষ্ঠানকে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে বিসিবি সভাপতি নিজের ভাবনা তুলে ধরতে গিয়ে বলেন, ‘ব্যাপারটা হচ্ছে, সাকিব তিন ফরম্যাটেই হতে পারে। এই সামর্থ্য ওর আছে। সাকিব কিন্তু আগের সাকিব নেই। আমার ধারণা পুরো ভুলও হতে পারে। সাকিব কিন্তু আগে সব খেলোয়াড়দের সাথে যতটা মিশত, তার চেয়ে এখন অনেক বেশি মিশে। আগে সাকিব যতটুকু মাঠে ইনভলব হতো, তার অনেক বেশি ইনভলব হয় এখন। এই সম্পর্কটা অনেক উন্নতি হয়েছে এখন। সে এখন একটা ভিন্ন মানুষ। আমি ধরি সে ভিন্ন একটা মানুষ। সবার কাছে তার গ্রহণযোগ্যতাও অনেক বেশি। এটা অধিনায়কত্বের ক্ষেত্রে কিন্তু অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। ওর সব গুনই আছে তিন ফরম্যাটে নেতৃত্ব দেওয়ার।’
তাহলে সাকিবকে কি তিন ফরম্যাটেই নেতৃত্বে ফেরাচ্ছে বিসিবি? দেশের ক্রিকেটের অভিভাবক সংস্থা আসলে ওভাবে ভাবছে না বিষটি। নাজমুল হাসান পাপন বললেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে মনেকরি, আমাদের আসলে ফরম্যাট অনুযায়ী অধিনায়ক আলাদা রাখতে পারলে ভালো হয়। এই পরিকল্পনাটা হচ্ছে আলাদা যদি দল থাকে। এখন পুরো টিম তো আর আলাদা হবে না। অন্তত প্রতি ফরম্যাটের জন্য যদি তিন-চারটা স্পেশালিস্ট খেলোয়াড় পাওয়া যায়। বিশেষ করে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি, তাহলে আমাদের জন্য ভালো হয়। এই প্রক্রিয়া থেকেই আসছে অধিনায়ক আলাদা হলে ভালো হয়। এর মানে এই না সাকিব হলে বা অন্য কেউ হলে পারবে না।’
বিসিবি সভাপতির এ কথাতেই সব পরিষ্কার হয়, ‘একটা জিনিস ঠিক করেছি যে, যাকেই যেটা দেওয়া হয়, এটা আমরা দীর্ঘ সময়ের জন্য দেব। উদাহরণ স্বরূপ আমরা যখন ওয়ানডেতে তামিম ইকবালকে দিয়েছি, সেটা আমরা দীর্ঘ সময়ের জন্য দিয়েছি। একটা সমস্যা হয় কি, কয়েক দিন পর পর পরিবর্তন করলে এটা অনেকে নিতেও চায় না। অস্বস্তি বোধ করে। ওরা বলে আমি সুযোগই পাইনি প্রমাণের। আমরা কিন্তু একটু দীর্ঘ মেয়াদেই চিন্তা করছি।’
নাজমুল হাসান পাপন যোগ করেন, সাকিব নিঃসন্দেহে তিন ফরম্যাটেই হতে পারে। কিন্তু আমাদের মধ্যে এরকম কোনো চিন্তা নেই, সব ফরম্যাটে সাকিব হবে।’