এবারের আইপিএলে যত নিয়ম
মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের ১২তম আসর মাঠে গড়ানোর অপেক্ষায়। ভারতে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ বৃদ্ধির কারণে সংযুক্ত আরব আমিরাতে এবারের আসর স্থানান্তরিত হয়েছে। যে কারণে এবারের আইপিএলে বেশ কিছু নতুন নিয়ম দেখা যাবে। প্রথমত অনুশীলনে নামার আগে পাঁচবার করোনা পরীক্ষা হবে ক্রিকেটার এবং সাপোর্ট স্টাফদের। টেস্টে নেগেটিভ আসলে তবেই মাঠে নামার অনুমতি মিলবে।
এছাড়াও টুর্নামেন্ট চলাকালীন প্রতি পাঁচদিন অন্তর করোনা টেস্ট করতে হবে সবাইকে। দেশ ছাড়ার আগে কেউ পজিটিভ হলে তাকে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিনে রাখা হবে। সেখানে আবার ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে দুইবার করোনা টেস্ট করা হবে। এখানে নেগেটিভ হলে তবেই যাওয়া যাবে আরব আমিরাত।
এবারের আসরে থাকছে কোভিড-বদলি, অর্থাৎ খেলার মধ্যে কোনো ক্রিকেটার করোনায় আক্রান্ত হলে তার বদলি নামানোর ব্যবস্থাও থাকছে। এখন পর্যন্ত বলা হচ্ছে মাঠে থাকবে না দর্শক প্রবেশাধিকার। জাঁকজমকপূর্ণ এই আসরের ম্যাচগুলো আয়োজন হবে তাই শূন্য গ্যালারির সামনে। যদিও আরব আমিরাত ক্রিকেট বোর্ড চেষ্ঠা করছে ৩০ থেকে ৫০ ভাগ দর্শক মাঠে আসার অনুমতির।
অন্যদিকে ক্রিকেটারদের মানসিক দিক বিবেচনায় অভিনব এক উদ্যোগ নিয়েছে আইপিএল ম্যানেজমেন্ট। ক্রিকেটারদের আরব আমিরাতে থাকতে হবে ৫৩ দিন। তাই ক্রিকেটাররা চাইলে তাদের পরিবার নিয়ে সেখানে যেতে পারবেন। তবে পরিবার নিয়ে গেলেও আয়োজকদের বেঁধে দেওয়া গণ্ডির বাইরে যেতে পারবেন না তারা।
আইপিএলের ত্রয়োদশ আসর অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল মার্চের শেষের দিকে। তবে করোনা ভাইরাসের কারণে এই কুড়ি ওভারের ঘরোয়া ক্রিকেটের আসর আয়োজন নিয়েই জেগেছিল শঙ্কা। আইপিএল স্থগিত হলে বিসিসিআইয়ের লোকসান হতো প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা। অনেক জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে শেষমেশ দেশের বাইরে আইপিএল আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয় বিসিসিআই।
‘স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি)’ শিরোনামে ১৬ পৃষ্ঠার বিশদ নিয়মকানুন প্রকাশ করেছেন আয়োজকরা, যা সব খেলোয়াড় ও ফ্র্যাঞ্চাইজিকে মানতে হবে পুরো আসরজুড়েই।
নিয়মগুলো হলো–
১. আমিরাতে আইপিএল খেলতে যাওয়ার আগে টিমগুলোর সব খেলোয়াড় ও স্টাফদের অন্তত ৫টি বাধ্যতামূলক কোভিড-১৯ পিসিআর টেস্ট করাতে হবে।
২. টুর্নামেন্ট চলাকালীন প্রতি ৫ দিন পর পর করোনা টেস্ট করাতে হবে।
৩. প্রতিদিন দেহের তাপমাত্রা মেপে তার তথ্য সরবরাহ করতে হবে।
৪) প্রতিজন খেলোয়াড়ের স্বাস্থ্যবিষয়ক কিছু তথ্য প্রদানের পর খেলতে নামার অনুমতি মিলবে।
৫) প্রতিটি ম্যাচের দিনে খেলোয়াড়ের দেহের তাপমাত্রা স্বাভাবিক এবং স্বাস্থ্যবিষয়ক সব প্রশ্নের উত্তর সন্তোষজনক হলেই তার মাঠে নামার অনুমতি মিলবে। এর ব্যত্যয় ঘটলেই করানো হবে করোনা টেস্ট।
৬. করোনার উপসর্গ দেখা দিলে বা নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষায় কারও মধ্যে অস্বাভাবিক কিছু দেখা দিলেই ওই খেলোয়াড়কে আইসোলেশনে পাঠিয়ে দেয়া হবে।
৭. নিয়মে আরও বলা হয়েছে, সব খেলোয়াড়কে ম্যাচের দিন হোটেল থেকেই যথাযথভাবে ম্যাচের জন্য প্রস্তুত হয়ে আসতে হবে। ড্রেসিংরুমে বেশি সময় ব্যয় বা ভিড় বাড়ানো যাবে না।
৮. যার যার ব্যাট-বল, প্যাডসহ ক্রিকেটের সরঞ্জামগুলো প্রতিবার যাত্রার পর পুরোটা গুছিয়ে ব্যাগে রাখতে হবে এবং নিয়মিত পরিষ্কার করা হয়- এমন একটি জায়গায় রাখতে হবে।
৯. ম্যাচ শুরুর আগে দুই অধিনায়ক টসের সময় ছাপানো তালিকার বদলে ইলেকট্রনিক তালিকার মাধ্যমে নিজেদের একাদশ বদল করবেন।
১০. খেলা চলাকালীন পানি পানের বিরতিতে সব খেলোয়াড়কে তাদের নিজেদের নামে লেখা বোতল থেকেই পানি পান করতে হবে।
১১. এ ছাড়া মাঠে করোনার বিস্তার কমাতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের করোনা নিয়ম মানা বাঞ্ছনীয়। যেমন লালার ব্যবহার নিষিদ্ধ, ডাগআউটে বসার সময় সামাজিক দূরত্ব মেনে বসা, ফেস মাস্ক ব্যবহার করা ইত্যাদি।