ক্রিকেটারদের জন্য খুলছে শেরেবাংলার দুয়ার
দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হওয়ার পরপরই সব ধরনের ক্রিকেটীয় কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। লকডাউন শুরুর আগেই মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামও কার্যত বন্ধ করে দেওয়া হয়। গত ২৬ মার্চ থেকেই মূলত নিস্তব্ধতায় আচ্ছন্ন হয়ে আছে দেশের হোম ক্রিকেট। গত এক-দেড় মাস ধরে বিসিবি কার্যালয় সচল হলেও শেরেবাংলায় প্রাণ ফেরেনি। এখনো মূল ফটকে ঝুলছে বিশাল তালা।
অবশেষে সব প্রতীক্ষার অবসান ঘটছে। শেরেবাংলার নীরবতা ভাঙতে যাচ্ছে। স্টেডিয়ামে প্রবেশের অনুমতি পাচ্ছেন ক্রিকেটাররা। আগামী সপ্তাহ থেকেই মিরপুর স্টেডিয়ামের সুযোগ-সুবিধা ব্যবহার করতে পারবেন ক্রিকেটাররা। তবে শুরুতে ফিটনেস সম্পর্কিত কাজের সুযোগ পাবেন তারা। এবং অবশ্যই বিসিবি ডাকবে না ক্রিকেটারদের। বরং আগের মতোই নিরুত্সাহিত করবে বিসিবি। তার পরও নিজ ইচ্ছায় কেউ চাইলে জিম, রানিংয়ের জন্য মাঠ ব্যবহার করতে পারবেন।
ফিটনেসের জন্য ক্রিকেটারদের এসব সুযোগ-সুবিধা ব্যবহার করতে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিসিবি। গতকাল বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সুযোগ-সুবিধা সব প্রস্তুত থাকলেও মিরপুর রেড জোনে থাকায় বিসিবি ক্রিকেটারদের নিরুত্সাহিত করেছে স্টেডিয়াম ব্যবহারে। ক্রিকেটাররা অবশ্য বসে নেই। ব্যক্তিগত উদ্যোগে অনুশীলন শুরু করেছেন অনেকেই। মুশফিকুর রহিম ফিটনেস, রানিং করছেন বাড্ডার বেরাইদে ফর্টিস গ্রুপের মাঠে। তাসকিন আহমেদ, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনরাও থেমে নেই। নিজেদের মতো করে অনুশীলন করছেন তারা।
ক্রিকেটারদের বিচ্ছিন্নভাবে নানা জায়গায় অনুশীলনের চিত্র দেখেই নতুন করে ভেবেছে বিসিবি। সিদ্ধান্ত নিয়েছে মিরপুর স্টেডিয়ামের সুযোগ-সুবিধা মুশফিকদের জন্য আবার উন্মুক্ত করার। গতকাল জানতে চাইলে বিসিবির প্রধান নির্বাহী বলেছেন, ‘বিষয়টা হচ্ছে যে আমরা আমাদের সুযোগ-সুবিধা আগে থেকেই প্রস্তুত করে রেখেছি। এর কারণ পরিস্থিতি যখন স্বাভাবিক হবে, তখন আমরা আর বাড়তি সময় নষ্ট করব না সবকিছু প্রস্তুত করার জন্য। আমাদের সবকিছু প্রস্তুত। যেহেতু দেখছি যে প্লেয়াররা বাইরে বাইরে অনুশীলন করছে, যদিও আমরা বর্তমান পরিস্থিতিতে নিরুত্সাহিত করি, তার পরও বাইরে না করে অন্তত যদি করেও কেউ, নিজ ইচ্ছায়, নিজ দায়িত্বে আমাদের সুযোগ-সুবিধা ব্যবহার করতে পারে।’
ক্রিকেটাররা ইচ্ছা প্রকাশ করলে সুযোগ দেবে বিসিবি। তবে এর জন্য গাইডলাইন তৈরি করা হচ্ছে। বিসিবির মেডিক্যাল বিভাগ ঠিক করে দেবে কীভাবে ক্রিকেটাররা জিম, মাঠ ব্যবহার করবেন। নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন বলেন, ‘চাইলে এখানে (ফিটনেসের কাজ) করতে পারবে। সেক্ষেত্রে আমাদের ক্রিকেট অপারেশন্সকে তারা বলবে। ক্রিকেট অপারেশন্স বিভাগ আমাদের মেডিক্যাল কমিটির সঙ্গে কথা বলে তাদের সূচি ঠিক করে দেবে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে কীভাবে করবে, সেগুলো দেখবে। যদিও এখনো আমরা নিরুত্সাহিত করি।’
অবশেষে কিছুটা আলোর রেখা দেখা দিল। স্টেডিয়ামের প্রাণ ক্রিকেটাররা। দ্রুতই তাদের পদচারণায় মুখর হতে পারে শেরেবাংলার প্রাঙ্গণ।