ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী, ২০২৫
আপডেট : ২৩ জুলাই, ২০২০ ১৫:১২

স্বাস্থ্য অধিদফতরের ডিজির পদত্যাগই যথেষ্ঠ নয়, বিচার চাই : ফখরুল

অনলাইন ডেস্ক
স্বাস্থ্য অধিদফতরের ডিজির পদত্যাগই যথেষ্ঠ নয়, বিচার চাই : ফখরুল

সদ্য পদত্যাগকারী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদের বিচার দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৃহস্পতিবার দুপুরে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব এই দাবি করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রিজাইন করেছেন এবং শোনা যাচ্ছে যে, তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হবে। আসলে তাকে তো বরখাস্ত করা উচিত ছিলো এবং শুধু স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকই নয় এর সঙ্গে যারা যারা জড়িত আছেন, ভুল তথ্য দিয়েছেন জনগণকে। তার দায়-দায়িত্ব অবশ্যই সরকারের উপরে বর্তায়।’

তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি এখানে শুধু মহাপরিচালকের রেজিগনেশন নয়, মহাপরিচালকের বিচার এবং একইসঙ্গে স্বাস্থ্য মন্ত্রীর পদত্যাগ করা উচিত। ইতিমধ্যে যে দাবি (স্বাস্থ্য মন্ত্রী) করা হয়েছে- এটা অত্যন্ত যৌক্তিক।’

ফখরুল বলেন, ‘করোনা প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই দুর্নীতি শুরু হয়েছে। সরকারের আশীর্বাদপুষ্টদের কাছে করোনা যেন এক আশীর্বাদরূপে আবির্ভূত হয়েছে। নিম্নমানের সুরক্ষা সামগ্রী, যেমন পিপিই, মাস্ক ও ওষুধ সরবরাহ দিয়েই শুরু বলা যায়।’

তিনি বলেন, ‘২০১৪ সাল থেকেই রিজেন্ট হাসপাতালের লাইসেন্স অবৈধ জানা সত্ত্বেও হাসপাতালটিতে করোনা টেস্ট ও চিকিৎসার জন্য সরকার কিভাবে চুক্তি করলো? চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে খোদ স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্বাস্থ্যসচিবসহ কয়েকজন সচিব এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন। এ ধরনের চুক্তি সই অনুষ্ঠানে মন্ত্রীরা উপস্থিত থাকার প্রটোকল নেই। প্রটোকল ভেঙ্গে এ ধরনের চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে মন্ত্রীর উপস্থিতি এবং অনুষ্ঠানটির ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় বহুল প্রচার করে মহোদয়ের এ কুকর্মের সাথে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের অনেকেই জড়িত রয়েছেন।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘বহুরূপী এ সাহেদের হাত অনেক লম্বা। গণভবন, রাষ্ট্রভবন, সচিবালয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তার অবারিত দ্বার এবং রাষ্ট্র ও সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে মন্ত্রী, এমপি, সচিব, দলীয় নেতৃবৃন্দের সাথে সাহেদের ফটো ও সেলফি তার স্বাক্ষ্য বহন করে। করোনা রোগীদের চুক্তি অনুযায়ী রিপোর্ট ও জিকেজি বিনামূল্যে চিকিৎসা দেবে এবং সরকার এ ব্যয় বহন করবে। কিন্তু একদিকে রিজেন্ট রোগীদের বিপুল পরিমাণ বিল পরিশোধে বাধ্য করেছে, অপরদিকে চিকিৎসা বাবদ সরকারের কাছে ১ কোটি ৯৬ লাখ টাকার বিল জমা দিয়েছে। সীমাহীন অনৈতিকতার এর চেয়ে নগ্ন উদাহরণ আর কী হতে পারে? সাহেদ গ্রেপ্তার নিয়েও নাটক হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন ফখরুল।’

তিনি বলেন, ‘করোনা মহামারীর এ সংকটকালে পুরো জাতি যখন ভীষণভাবে উদ্বিগ্ন, যখন প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ করোনায় সংক্রমিত হচ্ছে, যখন সরকারি হিসাব মতেই দৈনিক প্রায় ৪০ জন করে করোনা রোগী মারা যাচ্ছেন তখন স্বাস্থ্যখাতের অব্যবস্থাপনা ও দায়িত্বহীনতা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধের শামিল। স্বাস্থ্য খাতের জবাবদিহিতাহীন দুর্নীতির দায় দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে।’

ভার্চুয়াল এই সংবাদ সম্মেলনে করোনা সম্পর্কিত জাতীয় পর্যবেক্ষণ কমিটির সমন্বয়ক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ফরহাদ হালিম ডোনার, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, ড্যাবের হারুন আল রশিদ, আবদুস সালাম, সহ-স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, যুব দলের সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল ও ছাত্র দলের ইকবাল হোসেন শ্যামল যুক্ত ছিলেন।

 

উপরে