সেন্টমার্টিন বিক্রি করে ক্ষমতা চাই না: শেখ হাসিনা
সেন্টমার্টিন বিক্রি করে ক্ষমতা চান না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি কি এবার দেশ বিক্রি করবে? নাকি সেন্টমার্টিন বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় আসতে চায়? এটা তাকে দিয়ে হবে না। এ ছাড়া কাউকে দেশ বিক্রি করতে দেবেন না বলেও জানান তিনি।
বুধবার (২১ জুন) দুপুরে গণভবনে সুইজারল্যান্ড ও কাতার সফর শেষে পূর্বনির্ধারিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
বাজার নিয়ন্ত্রণে কালোবাজারি ও মজুতদারির বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর অবস্থান তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিছু লোক থাকে সুযোগসন্ধানী। যারা মজুতদারি, কালোবাজারি করে, তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। খুঁজে খুঁজে বের করা হবে।
আগামী নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী পাল্টা প্রশ্ন রাখেন: ‘কী এমন পরিস্থিতি তৈরি হলো যে নির্বাচন আগে হতে হবে?’
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনই সরকারের লক্ষ্য। যারা ভোট ডাকাতি ও গণতন্ত্রহরণ করেছে, তারাই এখন নির্বাচন নিয়ে নানা কথা বলছে। গণতান্ত্রিক ধারা বিনষ্ট করতেই দেশি-বিদেশি অনেকে ঘোট পাকাচ্ছে।
দুপুর ১২টার পর শুরু হওয়া সোয়া এক ঘণ্টাব্যাপী সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে লিখিত বক্তৃতায় তুলে ধরেন সফরের নানা অর্জন। জানান, রোহিঙ্গা ইস্যু, জ্বালানি নিরাপত্তা জোরদারের বিষয়টি বেশ গুরুত্ব পেয়েছে দুই সফরে। তবে বরাবরের মতো এবারও প্রধানমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনে উঠে আসে সাম্প্রতিক নানা ইস্যু।
সরকারপ্রধান বলেন, ‘অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন হোক, এটা তো আমাদেরই দাবি। অনেক আন্দোলনের মধ্যে ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছি। আমরা মানুষের ভোটের জন্য সংগ্রাম করেছি; অথচ আমাদেরই ভোটচোর বলে, কিন্তু ওরা তো ভোট ডাকাত।
‘দেশকে নিয়ে কেউ খেলবে, এটা আমি হতে দেব না। বিএনপি কি এবার দেশ বিক্রি করবে? নাকি সেন্টমান্টিন বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় আসতে চায়? এটা আমার দ্বারা হবে না। কাউকে দেশ বিক্রি করতে দেব না,’ যোগ করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের কন্যা। কারো কাছে এ দেশের সম্পদ বিক্রি করে ক্ষমতায় আসতে চাই না। গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিলে আমিও ক্ষমতায় থাকতে পারতাম। এখন যদি বলি সেন্টমার্টিন দ্বীপ কারো কাছে বিক্রি করব কিংবা লিজ দেব, তাহলে ক্ষমতায় থাকায় কোনো অসুবিধা নেই। আমার দ্বারা এটা হবে না।’
বিশ্ববাজার পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা ইউক্রেন যুদ্ধ। যেসব জিনিস বাইরে থেকে আনতে হয়, সেগুলোর দাম বেড়ে গেছে। তারপরও মানুষের কষ্ট যাতে না হয়, যেদিকে নজর রাখছি। বিদ্যুৎ সমস্যাও ধীরে ধীরে কেটে যাবে। কাতারের কাছ থেকে যেভাবে চেয়েছি, সেভাবেই এলএনজি আমদানির দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি হয়েছে।’
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ওয়েস্টমিনস্টার মডেলেই নির্বাচন হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিএনপিই নষ্ট করেছে। এখন তারাই সেটা ফেরত চাচ্ছে। নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে সব জানার পরও সাংবিধানিক ধারা নিয়ে জটিলতা তৈরির উদ্দেশ্যটা কী? গণতান্ত্রিক ধারা বিনষ্ট করতেই এটা করা হচ্ছে। এটা দেশের মানুষকেই বিবেচনা করতে হবে, তারা কী চান?’
বিএনপিসহ মাঠে নামা কিছু দলের সমস্যা কী জানতে চেয়ে তিনি বলেন, জনগণকেই বেছে নিতে হবে তারা গণতান্ত্রিক ধারা চায়, নাকি আবার সন্ত্রাস যুগে, ভোট ডাকাতির যুগে ফিরে যাবে? ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যবহার করে নানা অপ্রপ্রচার চালানো হচ্ছে। নির্বাচন যত এগিয়ে আসবে, তত বেশি এ ধরনের প্রচারণা চালাবে। দেশবাসীকে অপপ্রচারে বিভ্রান্ত ও কান না দেয়ার আহ্বান।