বঙ্গবন্ধুকে হত্যায় জিয়া ও মোশতাকের ইন্ধন ছিল: প্রধানমন্ত্রী
আজ ১ আগস্ট। শোকাবহ মাসের প্রথম দিন। ১৯৭৫ সালের এই মাসেই পুরো পরিবারসহ হত্যা করা হয়েছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। এদিকে বঙ্গবন্ধুকে হত্যায় জিয়া ও খন্দকার মোশতাকের ইন্ধন ছিল বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ রোববার (১ আগস্ট) ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে কৃষক লীগের অনুষ্ঠানে গণবভন থেকে ভার্চুয়ালে যুক্তহয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একথা বলেন। এর আগে জাতীয় শোক দিবস’ উপলক্ষে বাংলাদেশ কৃষক লীগ আয়োজিত ‘স্বেচ্ছায় রক্ত ও প্লাজমা দান কর্মসূচি’র উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর খুনিচক্র বাংলাদেশের নাম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ পরিবর্তন করে ইসলামিক রাষ্ট্র বাংলাদেশ করতে চেয়েছিল। যদিও এটা টেকাতে পারেনি। মানুষ তা মেনে নেয়নি। খুনিদের চাকরি ও অর্থের মালিক করে দেয় জিয়াউর রহমান। বঙ্গবন্ধুকে হত্যায় জিয়া ও খন্দকার মোশতাকের ইন্ধন ছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘জাতির পিতার কেউ যেন আর এ দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করতে না পারে এ জন্য পরিবারের অন্যদেরও হত্যা করা হয়। উদ্দেশ্য ছিল একটাই; বাংলাদেশের বিজয়কে হত্যা করা।’
১৫ আগস্টের স্মৃতিচারণ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘এটি শুধু বঙ্গবন্ধুকে হত্যা নয়, একটি আদর্শকে হত্যা করা। এ দেশের বিজয়কে নস্যাৎ করা এবং একটি জাতিকে জাতি হিসেবে মর্যাদা নষ্ট করা।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার কোন চাওয়া-পাওয়া নেই, আমরা মানুষের মুখে হাসি ফুটাতে চাই। আমরা বীরের জাতি সকলে বীরের মতোই বাঁচবো।’
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাসায় আক্রমণ করে। এ সময় বঙ্গবন্ধু ছাড়াও হত্যা করা হয় তার স্ত্রী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামাল, দ্বিতীয় পুত্র শেখ জামাল, কনিষ্ঠ পুত্র শিশু শেখ রাসেল, পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, বঙ্গবন্ধুর একমাত্র ভাই শেখ আবু নাসেরকে।
এ ছাড়া বেইলি রোডে সরকারি বাসায় হত্যা করা হয় বঙ্গবন্ধুর ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত, তার ছোট মেয়ে বেবি সেরনিয়াবাত, কনিষ্ঠ পুত্র আরিফ সেরনিয়াবাত, দৌহিত্র সুকান্ত আবদুল্লাহ বাবু, ভাইয়ের ছেলে শহীদ সেরনিয়াবাত ও আবদুল নঈম খান রিন্টুকে। আরেক বাসায় হত্যা করা হয় বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ ফজলুল হক মণি ও তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বেগম আরজু মণিকে।
সেদিন দেশে না থাকায় বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। তারা সে সময় বিদেশে অবস্থান করছিলেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফেরার পর এই দিনটিকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করা শুরু হয়।
প্রতি বছর আগস্টজুড়ে শোকের নানা কর্মসূচি পালন করে থাকে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলো। কিন্তু এবার করোনার কারণে ব্যাপক জনসমাগম এড়িয়ে চলতে চাইছে দলটি। আর এ কারণেই আগস্টের সব কর্মসূচি স্বাস্থ্য সুরক্ষা বজায় রেখে পালনের প্রস্তুতি নিয়েছে তারা।