১০ প্রতিবেশী দেশ নিয়ে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স চুক্তির পরামর্শ মোদির
১০টি প্রতিবেশী রাষ্ট্রের চিকিৎসক ও নার্সদের জন্য বিশেষ ভিসা প্রকল্পের ব্যবস্থা করতে একটি আঞ্চলিক এয়ার অ্যাম্বুলেন্স চুক্তির পরামর্শ দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
রবিবার ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশন এ তথ্য জানিয়েছে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে ‘কোভিড-১৯ ব্যবস্থাপনা: অভিজ্ঞতা, সুঅভ্যাস ও ভবিষ্যৎ পন্থা’-শীর্ষক কর্মশালায় দেওয়া এক বক্তব্যে এ পরামর্শ দেন তিনি।
১০টি দেশ হলো-ভারত, আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, ভুটান, মালদ্বীপ, মরিশাস, নেপাল, পাকিস্তান, সেশেলস ও শ্রীলঙ্কা। হাইকমিশন জানায়, মহামারির সময় এই দেশগুলো যেভাবে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বিষয়ে নিজেদের মধ্যে সহযোগিতার পরিবেশ গড়ে তুলেছিল এবং সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে বিশ্বে সর্বাধিক জনবহুল অঞ্চলে মহামারিসৃষ্ট চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী তার প্রশংসা করেন।
ওষুধ, পিপিই কিট এবং নমুনা পরীক্ষার সরঞ্জামের মতো বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকরণ বণ্টন এবং মহামারি মোকাবিলায় তাৎক্ষণিক ব্যয় নির্বাহের জন্য কোভিড-১৯ জরুরি প্রতিক্রিয়া তহবিল গড়ার বিষয়টি উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। নমুনা পরীক্ষা, সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ ও চিকিৎসা সংক্রান্ত বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বিভিন্ন রাষ্ট্রের সেরা অনুশীলনগুলি ভাগ করে নেওয়া এবং শিক্ষা নেওয়ার বিষয়টিও উল্লেখ করেন তিনি।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহামারি থেকে আমাদের মূল্যবান শিক্ষা হলো সহযোগিতার মনোভাব। আমাদের উদারতা ও দৃঢ়সংকল্পের কারণেই বিশ্বে এই অঞ্চলে মৃত্যুহার সর্বনিম্ন রাখতে পেরেছি, যা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। আজ আমাদের ও সারা বিশ্বের আশা, সবার কাছেই দ্রুত টিকা পৌঁছে যাক। এক্ষেত্রেও আমাদের অবশ্যই একই রকম সহযোগিতার মানসিকতা বজায় রাখতে হবে।
এই প্রত্যাশা আরও বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী চিকিৎসক ও নার্সদের জন্য একটি বিশেষ ভিসা ব্যবস্থা গড়ে তোলার পরামর্শ দেন, যেন স্বাস্থ্য সংক্রান্ত যে কোনো জরুরি পরিস্থিতিতে সেই দেশের অনুরোধক্রমে তারা আমাদের এই অঞ্চলে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় দ্রুত ভ্রমণ করতে পারেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রীরা চিকিৎসার জন্য একটি আঞ্চলিক এয়ার অ্যাম্বুলেন্স চুক্তি করতে পারেন কিনা সেই বিষয়টি নিয়েও ভাবনাচিন্তার কথা বলেছেন। আমাদের জনসাধারণের মধ্যে কোভিড-১৯ টিকার কার্যকারিতা নিয়ে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে তা বিশ্লেষণের জন্য একটি আঞ্চলিক প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলার প্রস্তাবও তিনি দিয়েছেন। ভবিষ্যতে মহামারি প্রতিরোধে মহামারি সংক্রান্ত প্রযুক্তিভিত্তিক গবেষণার বিষয়টি নিয়েও চিন্তাভাবনা করতে পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী।
কোভিড -১৯ ছাড়াও ভারতের প্রধানমন্ত্রী সফল জনস্বাস্থ্য নীতি ও পরিকল্পনার তথ্য বিনিময়ের পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেন, আয়ুষ্মান ভারত ও জন আরোগ্য প্রকল্পের মতো সফল কর্মসূচিগুলি এই অঞ্চলের জন্য প্রয়োজনীয় কেস স্ট্যাডি হতে পারে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেন, একবিংশ শতাব্দীকে এশীয় শতাব্দী হতে হলে দক্ষিণ এশিয়া এবং ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলির মধ্যে বৃহত্তর সমন্বয় ছাড়া তা সম্ভব হবে না। মহামারির সময় যে আঞ্চলিক ভ্রাতৃত্ববোধ আপনারা দেখিয়েছেন, তার মাধ্যমে এটা স্পষ্ট যে, এ ধরনের সংহতি গড়ে তোলা সম্ভব।