কাটলো ৩০ বছরের জনদুর্ভোগ
জনসাধারণের চলাচলের সুবিধার জন্য সড়ক নির্মাণ করেছে সরকার। আর সেই সড়ক দখল করে গড়ে উঠেছিল দোতলা ভবন।
দিন, সপ্তাহ, মাস কিংবা কয়েক বছর নয়। বরং টানা তিন দশক এভাবেই বেদখল হয়ে ছিল সরকারি জায়গা। জনগণের ভাগ্যে জুটেছিল বিড়ম্বনা আর ভোগান্তি। অবশেষে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলামের উপস্থিতিতে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) অভিযানে ভাঙা পড়ে ভবনটি।
মঙ্গলবার (৫ জানুয়ারি) রাজধানীর ভাসানটেক এলাকায় অবৈধ দখল উচ্ছেদে দিনভর অভিযান পরিচালনা করে রাজউক। ওই এলাকায় ঢাকা সেনানিবাস থেকে ভাসানটেক বাজারগামী সড়কের উপর একটি পকেট গেট নির্মাণ করে তার সামনে নির্মাণ করা ভবনটি উচ্ছেদ করা হয়।
ভবন উচ্ছেদের আগে এর বাসিন্দাদের মালামালসহ সরে যেতে সময় দেয় রাজউক। এক পর্যায়ে বিকেল ৫টার দিকে ভবনটি ভেঙে দেওয়া হয়। এর ফলে ৩০ বছর ধরে থাকা এই বাধা থেকে মুক্তি পান সড়কটির উপর নির্ভরশীল মানুষেরা। আর এতে বেশ স্বস্তি প্রকাশ করেন সাধারণ পথচারী এবং এলাকাবাসী। পকেট গেট আর ভবন উচ্চেদের পর ওই এলাকায় যে এমন একটি সড়ক আছে সেটি দেখেও বেশ বিস্মিত অনেকেই।
হাসিবুর রহমান নামে এক বাসিন্দা বাংলানিজককে বলেন, এখানে যে এমন একটি সড়ক আছে তাই জানতাম না। এতদিন জানতাম যে, পকেট গেট করা হয়েছে যাওয়া-আসার জন্য। কিন্তু স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত করে যে এটি নির্মাণ করা হয়েছে আজ বুঝলাম। এই গেট বন্ধ থাকলে দীর্ঘ পথ ঘুরে যেতে হতো। আশা করছি এখন আর এমন সমস্যা হবে না।
এদিকে পকেট গেট উঠে যাওয়ায় খুশি যানবাহন চালকেরাও। স্থানীয় এক বাসিন্দার গাড়ি চালক মাঈনুদ্দীন করীম বলেন, এই গেটের কারণে অনেকখানি ঘুরে আসতে হতো। জ্যামও হতো। এমন হতো যে মতিঝিল থেকে এখানে আসতে যে সময় যায়, প্রায় একই সময় যায় এখানে মোড় ঘুরে বাসায় গাড়ি নিয়ে ঢুকতে। এখন ভবন ভেঙেছে। সবকিছু সরিয়ে সড়কটি উন্মুক্ত করে দিলে হয়তো যানবাহন চলাচল করবে।
ভবনটি উচ্ছেদ সম্পর্কে ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, মাটিকাটা থেকে ভাসানটেক পর্যন্ত আসার সময় দেখা যায়, মাটিকাটায় ১০০ ফুট রাস্তা, ভাসানটেকে ১০২ ফুট প্রশস্ত রাস্তা। কিন্তু তার মাঝখানে, যেখানে আমরা দাঁড়িয়ে আছি এই জায়গাতে রাস্তা ২০ ফুট থাকার কথা। রাজউকের নকশা অনুযায়ী এই রাস্তাটি ২০ ফুট। কিন্তু এ রাস্তাটির দুই পাশের ভবন মালিকরা ভবন তৈরি করার সময় কয়েক ফুট রাস্তা দখল করে ভবন তৈরি করেছেন।
‘এ মুহূর্তে এখানে রাস্তা আছে মাত্র ৮ থেকে ৯ ফুট। ফলে এই সামান্য রাস্তায় ভয়াবহ যানজট তৈরি হয়। এইটুকু রাস্তা পার হতে দীর্ঘ সময় লেগে যায়। আমার কাছে এই এলাকার জনগণ ও জনপ্রতিনিধিরা এসে অনুরোধ করেছে রাস্তা বড় করার জন্য। তাই আমরা আজ এখানে এসেছি। এই রাস্তা যদি চওড়া হয়, মানুষ তার উপকার ভোগ করবে। ’
বিগত ১ ডিসেম্বর এক ফেসবুক লাইভে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের মুখোমুখি হন ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম। এসময় ডিএনসিসি এলাকায় অবৈধ গেট নিয়ে মেয়রকে প্রশ্ন করলে গেট অপসারণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিগত ২২ ডিসেম্বর পল্লবী থানাধীন এলাকায় প্রধান সড়কের সঙ্গে সংযোগকারী অন্য সড়কের মুখে থাকা বিভিন্ন সড়ক থেকে মোট ৮টি গেট ভেঙে দেওয়া হয়।