হাসিনা-মোদি ভার্চুয়াল বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে ‘বিস্তারিত আলোচনা’ হবে
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যকার ১৭ ডিসেম্বরের ভার্চুয়াল বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের পুরো বিষয়গুলো নিয়ে ‘বিস্তারিত আলোচনা’ করবেন। সোমবার (১৪ ডিসেম্বর) ভার্চুয়াল বৈঠকের আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা দিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (এমইএ) জানিয়েছে, বৈঠকে তারা কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে সহযোগিতা আরো জোরদারের উপায় নিয়ে আলোচনা করবেন।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়মিত যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৮ সালের অক্টোবরে এক সরকারি সফরে ভারতে গিয়েছিলেন। ২০২০ সালের মার্চে ঐতিহাসিক মুজিব বর্ষ উপলক্ষে এক ভিডিও বার্তা দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
এমইএ জানিয়েছে, দুই দেশের উভয় নেতার মধ্যই মহামারি কোভিড-১৯ চলাকালীন নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে।
রোববার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন জানিয়েছিলেন, বৈঠকে পানি ও সীমান্তসহ বড় বড় যতগুলো সমস্যা আছে সেগুলো বাংলাদেশ উত্থাপন করবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের বড় বড় যতগুলো সমস্যা আছে সেগুলো উত্থাপন করা হবে।…বেশ কয়েকটি ‘কুইক ইমপেক্ট’ রাখার মতো প্রকল্পেরও উদ্বোধন করা হবে।’
বৈঠক চলাকালে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ১৯৬৫ সালের আগের পুরনো চিলাহাটি-হলদিবাড়ী রেল সংযোগ পুনরায় উদ্বোধন করা হবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এ বৈঠকে বিজয়ের মাস বড় আকারে উঠে আসবে। কারণ এ বিজয় ভারতের পক্ষেও এক বিজয়, কেননা তারা বাংলাদেশকে বিজয় অর্জনে সাহায্য করেছিল। ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী যে অবদান রেখেছেন তা আমাদের অবশ্যই স্বীকার করতে হবে।’
‘বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যে সম্পর্ক রয়েছে তা ঐতিহাসিক ও রক্তের। ভারত আমাদের সবসময়ের বন্ধু। আমাদের বিজয়ে তাদেরও যথেষ্ট অহংকার করার কারণ আছে,’ বলেন তিনি।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জীবিত দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য ভারত ও যুক্তরাজ্যের তৎকালীন সরকারের অবদানের কথা স্মরণ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের তা অবশ্যই স্বীকার করতে হবে।’
ড. মোমেন বলেন, সম্প্রতি ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক সোনালি অধ্যায়ে বিরাজ করছে। দুদেশের মধ্যকার এলবিএ ও সমুদ্র সীমাসহ বিভিন্ন ইস্যু আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে নজির স্থাপন করেছে।’
‘দুদেশই বিশ্বাস করে যে, আলোচনার মাধ্যমে সব বিষয়ের সমাধান করা সম্ভব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমস্যা সমাধানে তার নেতৃত্বের পরিপক্কতা দেখিয়েছেন,’ বলেন তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে ড. মোমেন বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আগামী বছরের ২৬ মার্চ একটি স্বাধীনতা সড়ক চালু করা হবে।
ওই সড়কের ভারতের অংশটি চালু আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এতে মেহেরপুর জেলার মুজিবনগরকে যুক্ত করা হবে। এ সড়কটি দুদেশের মধ্যে জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানোর ক্ষেত্রে সহায়তা করবে।’
২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস যৌথভাবে উদযাপনের জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ব্যক্তিগতভাবে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ভারতের পক্ষ থেকে এই আমন্ত্রণটি নীতিগতভাবে গ্রহণ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের মার্চে দক্ষিণ এশিয়ায় কোভিড-১৯ পরিস্থিতি মোকাবিলায় সহযোগিতা নিয়ে সার্কভুক্ত দেশগুলোর ভার্চুয়াল বৈঠকে দুই প্রধানমন্ত্রী যোগ দিয়েছিলেন।