যেকোনো হুমকি মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে হবে: সেনাপ্রধান
কর্মদক্ষতা, কঠোর পরিশ্রম ও কর্তব্যনিষ্ঠার স্বীকৃতিস্বরূপ পাওয়া জাতীয় পতাকার মর্যাদা রক্ষা এবং দেশমাতৃকার যেকোনো প্রয়োজনে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে ইউনিটসমূহকে প্রস্তুত থাকতে নির্দেশনা দিয়েছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ। তিনি বলেছেন, দেশের অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক যেকোনো হুমকি মোকাবিলায় সদা প্রস্তুত থাকতে হবে।
বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরে নবগঠিত কক্সবাজারের রামু সেনানিবাসে চারটি ইউনিটের পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ নির্দেশনা দেন সেনাপ্রধান।
পতাকা উত্তোলন প্যারেডে উপস্থিত সবার উদ্দেশে সেনাপ্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি প্রাকৃতিক ও মানব সৃষ্ট দুর্যোগ মোকাবিলাসহ দেশের আর্থসামাজিক এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে।’
সেনাপ্রধান তার দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্যের শুরুতে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। একইসঙ্গে তিনি স্মরণ করেন ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের আত্মত্যাগকারী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের।
১০ পদাতিক ডিভিশন রামু সেনানিবাসে উপস্থিত সেনা সদস্যদের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বের প্রতি আস্থা, পারস্পরিক বিশ্বাস, সহমর্মিতা, ভ্রাতৃত্ববোধ বজায় রেখে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সুশৃঙ্খল, দক্ষ ও যোগ্য সেনা সদস্য হিসেবে গড়ে উঠার নির্দেশ প্রদান করেন জেনারেল আজিজ আহমেদ। সেইসঙ্গে পেশাদারত্বের আকাঙ্ক্ষিত মান অর্জনের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক যেকোনো হুমকি মোকাবিলায় সদা প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেন তিনি।
পরিশেষে সেনাপ্রধান পতাকা উত্তোলন উপলক্ষে একটি সুশৃঙ্খল, মনোজ্ঞ ও বর্ণিল কুচকাওয়াজ প্রদর্শনীর জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
অনুষ্ঠানে ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তারা ও বিভিন্ন পদবির সেনা সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সেনাপ্রধান আরো বলেন, ‘১০ পদাতিক ডিভিশন ও কক্সবাজার অঞ্চলের চারটি ইউনিটের নবযাত্রার মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ‘উন্নয়ন রূপকল্প পোর্সেস গোল-২০৩০’ এর বাস্তবায়নের পথে আরেকটি মাইলফলক সংযোজিত হলো। এই ডিভিশন সব প্রশিক্ষণ ও প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের নিরাপত্তা এবং ত্রাণ বিতরণের দায়িত্বে সফলভাবে নিয়োজিত রয়েছে।’
অনুষ্ঠানস্থলে সেনাপ্রধান উপস্থিত হলে ১০ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি ও এরিয়া কমান্ডার, কক্সবাজার এরিয়া মেজর জেনারেল আহমদ তাবরেজ শামস চৌধুরী তাঁকে অভ্যর্থনা জানান। এরপর প্যারেড কমান্ডার মেজর রিফাত উদ্দিন ভূঁইয়ার নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর একটি সম্মিলিত চৌকষদল কুজকাওয়াজ প্রদর্শন এবং সেনাপ্রধানকে জেনারেল সালাম দেয়।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর স্টেশন সদর দপ্তর রামু স্টাটিক সিগন্যাল কোম্পানি রামু, সিএমএইচ রামু এবং ১০ ফিল্ড ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের পতাকা উত্তোলন করেন সেনাপ্রধান ও উচ্চ পদস্থ সেনা কর্মকর্তারা।
রামু সেনানিবাসে নবগঠিত চারটি ইউনিটের পতাকা উত্তোলন শেষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সার্বিক তত্ত্বাবধানে ‘মুজিব বর্ষ সাইক্লিং এক্সপেডিশন-২০২০’-এর সমাপনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ। তিনি সাইক্লিং এক্সপেডিশন-২০২০-এ অংশগ্রহণকারী সাইক্লিষ্টদের মধ্যে সনদপত্র ও মেডেল প্রদান করেন।