যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদায় সারাদেশে ঈদে মিলাদুন্নবী পালিত
যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে আজ শুক্রবার রাজধানীসহ সারাদেশে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) পালিত হয়েছে।
মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম ও ওফাত দিবসই হচ্ছে বিশ্বের মুসলিম সম্পদ্রায়ের কাছে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) ।
এ উপলক্ষ্যে রাজধানী ঢাকায় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদসহ বিভিন্ন মসজিদে আজ জুমার নামাজের সময় দিনটির তাৎপর্য তুলে ধরে বয়ান এবং দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর উন্নতি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মুনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
জুমার নামাজের রাজধানীর নানা জায়গায় জসনে-জুলুসে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষ্যে খন্ড-খন্ড মিছিল বের হতে দেখা যায়।-খবর বাসসের
এদিকে, দিবসটি উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী প্রদান করেছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার পৃথক বাণীতে তারা উভয়েই দেশবাসীসহ বিশ্বের মুসলিম উম্মাহর প্রতি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ জানান।
মূলতঃ আরবি সালের ১২ রবিউল আওয়াল মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম ও ওফাত দিবস । আরবি মাসের হিসেব শুরু হয় সন্ধ্যা রাত থেকে।
এজন্য, ১২ রবিউল আওয়াল শুরু হওয়ার পর অর্থাৎ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা রাত থেকে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা রাজধানীর বিভিন্ন মসজিদ এবং বাসবাড়িতে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষ্যে কোরআন খতম ও জিকির-আজগারের বিশেষ মোনাজাতে নিজ-নিজ পরিবারের সদস্য এবং মুসলিম উম্মাহর জন্য মহান রাব্বুল আলামিনের বিশেষ রহমত কামনা করেন।
এদিকে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষ্যে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে আজ শুক্রবার বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হয়েছে। এ দিবসের গুরুত্ব তুলে ধরে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি), বাংলাদেশ বেতার এবং অন্যান্য স্যাটেলাইট টেলিভিশন বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করে এবং করছে।
অপরদিকে আজ ছিল সরকারি ছুটি । তবে সাপ্তাহিক ছুটির কারণে সরকারি ছুটির গুরুত্ব বোঝা যায়নি।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন (ইফা) পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে কর্মসূচি অনুযায়ী সব অনুষ্ঠান করা হচ্ছে এবং হবে। বৃহস্পতিবার বাদ মাগরিব বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের পূর্ব সাহানে ইফার অনুষ্ঠানমালা উদ্বোধন করা হয়।
এছাড়াও এ দিবস উপলক্ষ্যে দেশের সব বিভাগ, জেলা, উপজেলাসহ সরকারি-বেসরকারি সংস্থাগুলোও মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর জীবনীর ওপর আলোচনা সভা ও মাহফিলসহ বিশেষ কর্মসূচি পালন করে।
৫৭০ খ্রিস্টাব্দের ১২ রবিউল আউয়াল ইসলামের শেষ নবী (সা.) আরবের মরু প্রান্তরে মা আমিনার কোল আলো করে জন্মগ্রহণ করেন। ৬৩২ খ্রিস্টাব্দের এ দিনে মাত্র ৬৩ বছর বয়সে তিনি ইন্তেকাল করেন।
দিনটিকে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী বা সিরাতুন্নবী (সা.) হিসেবে পালন করে আসছে বিশ্বের মুসলমান সম্প্রদায়।
একটা সময় আরবজাহান ঘোর অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল। মানুষ হয়ে পড়েছিল বেদিন। তারা আল্লাহকে ভুলে গিয়ে নানা অপকর্মে লিপ্ত হয়ে পড়ে। সর্বত্র দেখা দিয়েছিল অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলা।
মারামারি আর হানাহানিতে লিপ্ত ছিল মানুষ। মূর্তিপূজা করত। এ যুগকে বলা হয় ‘আইয়ামে জাহেলিয়াত’। এ থেকে মানুষকে মুক্তি দিতে, তাদের আলোর পথ দেখাতে আল্লাহতায়ালা মুহাম্মদ (সা.)-কে এ পৃথিবীতে পাঠান।
পবিত্র কোরআনে বর্ণিত আছে, ‘মহানবীকে সৃষ্টি না করলে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পৃথিবী সৃষ্টি করতেন না।’ এ কারণে এবং তৎকালীন আরবজাহানের বাস্তবতায় এ দিনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অনেক বেশি।