অভিযানে হাজী সেলিম দম্পতির দেখা পায়নি র্যাব

নৌবাহিনীর এক কর্মকর্তাকে মারধরের ঘটনায় ছেলে গ্রেপ্তার এবং বাসায় অভিযান চললেও দেখা যায়নি ঢাকা-৭ আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য (এমপি) হাজী সেলিমকে। গতকাল সোমবার দুপুর থেকে পুরান ঢাকার সোয়ারিঘাটের দেবীদাস লেনে হাজী সেলিমের বাড়ি ঘেরাও করে অভিযান চালায় র্যাব। তবে তখন বাড়িতে হাজী সেলিম ছিলেন না বলে র্যাব জানিয়েছে। অভিযান শেষে গতকাল সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিক বিল্লাহ তার (হাজী সেলিম) অবস্থানের বিষয়ে কিছু বলেননি।
তবে এর আগে দুপুরে আশিক বিল্লাহ গণমাধ্যমকে বলেন, হাজী সেলিম বাড়িতে নেই। অভিযানের আগেই তিনি তার স্ত্রীসহ ডাক্তারখানায় গেছেন বলে জানা গেছে। তবে কোন চিকিৎসকের কাছে গেছেন, তা জানাতে পারেননি এ র্যাব কর্মকর্তা। পরে ওই ভবন থেকে লাইসেন্সহীন বিদেশি পিস্তল, গুলি, এয়ারগান, ৩৮টি ওয়াকিটকি, একটি হাতকড়া এবং বিদেশি মদ ও বিয়ার জব্দ করার কথা জানান র্যাব কর্মকর্তারা।
নৌবাহিনী কর্মকর্তাকে মারধরের ঘটনায় মামলা হওয়ার পর গতকাল দুপুরে সোয়ারিঘাট এলাকায় সাংসদ হাজী সেলিমের বাড়ি ঘেরাও করে অভিযান শুরু করে র্যাব। এর আগে গত রবিবার রাতে ধানমণ্ডি এলাকায় সংসদ সদস্যের স্টিকারযুক্ত হাজী সেলিমের গাড়ি থেকে নেমে নৌবাহিনীর এক কর্মকর্তাকে মারধর করা হয়। এ ঘটনায় হাজী সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিম, সাংসদের প্রটোকল অফিসার এবি সিদ্দিক দিপু, ইরফানের দেহরক্ষী মোহাম্মদ জাহিদ ও গাড়িচালক মিজানুর রহমানের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও তিনজনকে আসামি করে গতকাল সকালে ধানমণ্ডি থানায় একটি মামলা হয়। ওই মামলায় ইরফান সেলিমসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
হাজী সেলিম বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েই ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। সে সময় সাবেক ঢাকা-৮ আসনের বিএনপিপ্রার্থী আবুল হাসনাতকে হারালেও ২০০১ সালের নির্বাচনে তিনি হেরে যান বিএনপিপ্রার্থী নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টুর কাছে। এরপর সংসদীয় এলাকার সীমানা পুনর্বিন্যাসের পর ২০০৮ সালের নির্বাচনে ওই আসনে আওয়ামী লীগের তৎকালীন স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদক মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বিএনপির নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টুকে হারিয়ে সাংসদ নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে বিএনপিবিহীন নির্বাচনে দলের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনকে হারিয়ে চমক দেখান হাজী সেলিম। এরপর ২০১৮ সালে আবার আওয়ামী লীগের মনোনয়নে ঢাকা-৭ আসনে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীকে হারান তিনি।