ঢাকা, বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪
আপডেট : ২২ অক্টোবর, ২০২০ ১০:৪৮

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা এড়িয়ে শ্যামলীর সঙ্গে রেলের চুক্তি

অনলাইন ডেস্ক
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা এড়িয়ে শ্যামলীর সঙ্গে রেলের চুক্তি

সরকারি, আধা সরকারি এবং স্বায়ত্ত্বশাসিত সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানগুলোতে শারীরিক প্রতিবন্ধীদের দ্বারা তৈরি মুক্তা পানি ব্যবহারের নির্দেশনা আছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। কিন্তু সেই নির্দেশনা এড়িয়ে রেলের ক্যাটারিং সার্ভিসে পানি সরবরাহ করার চুক্তি করা হয়েছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান শ্যামলী ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের সঙ্গে।

অভিযোগ আছে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা উপেক্ষা করেই রেলপথ পরিদর্শন অধিদপ্তরের কিছু কর্মকর্তার যোগসাজশে নেওয়া হয়েছে এমন সিদ্ধান্ত। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন শারীরিক প্রতিবন্ধী ট্রাস্ট, মৈত্রী শিল্পের মাধ্যমে মুক্তা পানি প্রস্তুত করা হয়। গাজীপুরে অবস্থিত এর কারখানা প্রতিবন্ধী কর্মীদের দিয়ে পরিচালিত হয়। মুক্তা পানির বিক্রি থেকে যে লাভ হয় তার পুরোটাই ব্যয় হয় প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে।

গত বছরের বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবসে ‘মুক্তা পানি’ সবাইকে কিনতে বলেন প্রধানমন্ত্রী। সেবছরের ৪ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জারি করা এক নির্দেশনায় সব সরকারি দপ্তরে মুক্তা পানি ব্যবহারে অগ্রাধিকার দেওয়ার বিষয়ে বলা হয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের ১৯ আগস্ট অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ একটি নির্দেশনা জারি করে।

সেই নির্দেশনায় বলা হয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিবন্ধীদের পরিচালিত শারীরিক প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্ট, মৈত্রী শিল্প, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় পরিবেশিত ও বোতলজাতকরা মুক্তা পানি পরিবেশন ও ব্যবহারে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো।

তবে তারও আগে থেকেই সরকারি বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয় ও দপ্তরে মুক্তা পানি ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ২০১৭ সালের এপ্রিলে নিজেদের সভায় মুক্তা পানির সিদ্ধান্ত দিয়ে এক নির্দেশনা জারি করে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়য়। শুধু তা-ই নয় মুক্তা পানি বিনা টেন্ডারে সরাসরি কেনারও সুযোগ রয়েছে।

এসব নির্দেশনা এবং নজির থাকার পরও পুরো উল্টো দিকে হেঁটেছে রেল অধিদপ্তর। চলতি বছরের ১৩ আগস্ট রেলওয়েতে এবং রেলওয়ে ক্যাটারিং সার্ভিসে পানি সরবরাহ বিষয়ে নিজস্ব ব্র্যান্ড চালু করার সিদ্ধান্ত নেয় অধিদপ্তর। এর জন্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠান শ্যামলী ফুড অ্যান্ড বেভারেজের সঙ্গে চুক্তি করে বাংলাদেশ রেলওয়ে।

এই চুক্তির বিষয়ে সেসময় রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশ রেলওয়েতে নিজস্ব ব্র্যান্ডের বোতলজাত পানি সরবরাহ করার মাধ্যমে যাত্রীদের কাঙ্ক্ষিত পানির চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি রেলওয়েকে একটি ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার সুযোগ তৈরি হবে।

রেলমন্ত্রী এবং রেল অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ শামছুজ্জামানের উপস্থিতিতে অধিদপ্তরের যুগ্ম মহাপরিচালক (অপারেশন) রশিদা সুলতানা গণি শ্যামলীর সঙ্গে চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন।

নিজস্ব ব্র্যান্ড তৈরির জন্য হলেও কেন মুক্তা পানিকে ব্যবহার করা হলো না আর কেনই বা শ্যামলীর সঙ্গে চুক্তি করা হলো এ বিষয়ে জানতে রেল মহাপরিচালক মোহাম্মদ শামছুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য মুঠোফোনে কয়েক দফা চেষ্টা করা হয়। তবে তিনি ফোন ধরেননি। একইসঙ্গে চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করা যুগ্ম মহাপরিচালক রশিদা সুলতানার মুঠোফোনেও ফোন করা হলে তিনিও ফোন ধরেননি। ফোন করার উদ্দেশ্য উল্লেখ করে তাদের নম্বরে খুদেবার্তা পাঠানো হলেও কোন প্রতি-উত্তর পাওয়া যায়নি।

 

উপরে