দেশে করোনার নতুন ৫ উপসর্গ
আনিস সাহেব (ছন্দ নাম) অফিস থেকে ফিরেই ক্লান্তি বোধ করছিলেন। অফিস থেকে ফিরলে এ রকম ক্লান্তি বোধ মাঝে মাঝেই হয়। কাজেই বিষয়টি গায়ে মাখলেন না। রাতে তার পেট খারাপ হলো। কয়েকবার বাথরুমে গেলেন। স্ত্রী ভৎর্সনা করলেন নিশ্চয়ই বাইরে কিছু খেয়েছো।
কিন্তু আনিস সাহেব নিশ্চিত যে, তিনি বাইরের কোন খাবার খাননি। সকালে ঘুম থেকে উঠতে ইচ্ছে করছিলো না তার। ক্লান্তি এবং আলস্য লাগছিলো। তারপরও অফিসে গেলেন। সকালের নাস্তা খেতে পারলেন না। দুপুরে অফিসে খেতেও পারলেন না। ধারণা করলেন পেট খারাপের জন্যই সম্ভবত খাবার রুচি নষ্ট হয়েছে। অফিসে দুচারবার মাথা চক্কর দিলো। সেটারও পেট খারাপ এবং না খাওয়ার জন্য মনে করে উপেক্ষা করলেন। অফিসে খারাপ লাগায় তাড়াতাড়ি বাড়িতে ফিরলেন।
রাতে আনিস সাহেবের অবস্থা আরো খারাপ হলো। পরদিন সকালে তাকে হাসপাতালে নেয়া হলো। সেখানে কোভিড পরীক্ষায় ফল এলো পজেটিভ। তিন দিন হাসপাতালে থাকার পর, তাকে আইসিইউ তে স্থানান্তর করা হলো। পঞ্চম দিনে তিনি মারা গেলেন।
করোনার যে সব উপসর্গ গুলোর কথা বহুল উচ্চারিত সেই সব উপসর্গ কোনটাই তার ছিলো না। জ্বর, গলাব্যথা, শুকনো কাশি ইত্যাদি উপসর্গ ছাড়াই তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন। শুধু আনিস সাহেব নন। গত এক সপ্তাহে যারা মারা গেছেন, তাদের ১০ জন করোনার প্রচলিত উপসর্গ ছাড়াই আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। তাদের পরিবারের সদস্যরা বলেছেন, উপসর্গ না থাকায় তারা ভাবতেও পারেননি যে, এটা করোনার কিছু নতুন উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। এগুলো হলো:
১. পেট খারাপ: হঠাৎ করেই ডায়রিয়ার মতো পরিস্থিতি হচ্ছে কারো।
২. শরীর দূর্বল: অনেক করোনা রোগী শুধু মাত্র দূর্বলতা অনুভব করছেন। শুয়ে বা ঘুমিয়ে থাকতে ইচ্ছে করছে এ রকম উপসর্গ দেখা যাচ্ছে অনেকের।
৩. খাবার রুচি নষ্ট: হঠাৎ করেই ক্ষুধা মন্দা হচ্ছে। পেট খারাপের সঙ্গে এই উপসর্গ থাকায় অনেকে মনে করছেন এটা ডায়রিয়া জনিত।
৪. শরীরে কোথাও ব্যথা: হাতে, পায়ে কিংবা পিঠে প্রচন্ড ব্যাথা অনুভব হচ্ছে কোন কোন করোনা রোগীর।
৫. হঠাৎ মাথা ঘোরা: আকস্মিক ভাবে মাথা ঘুরছে অনেকের।
সমস্যা হলো, করোনার প্রধান উপসর্গ হলো জ্বর। এজন্য সর্বত্র জ্বর মাপার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু এই নতুন উপসর্গ নিয়ে করোনা রোগীরা দ্রুত রোগ ছড়াচ্ছেন। তাই এটা এখন নতুন আতঙ্কের কারণ হয়ে উঠছে।