এলপিজির অভিন্ন দাম নির্ধারণ করে দিতে চায় বিইআরসি
সারাদেশে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) অভিন্ন দাম নির্ধারণ করে দিতে চায় বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)।
শনিবার অনলাইনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ প্রস্তাব দিয়েছে সরকারি সংস্থাটি। তারা বলছে, একইসঙ্গে মাসিক বা প্রতি ৩ মাসে একবার করে এলপিজির দাম নির্ধারণ করতে চায় তারা। এজন্য ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে দাম নির্ধারণ করতে চায় বিইআরসি।
এলপিজির দাম কিভাবে আরও কমিয়ে আনা সম্ভব এ বিষয়ে বিইআরসির পক্ষ থেকে কিছু উদ্যোগের কথা জানানো হয়। এতে বলা হয়, বাংলাদেশের এলপিজির দাম নিয়ন্ত্রণে বড় জাহাজে করে এলপিজি আনতে হবে। এককভাবে না পারলে যৌথ ভাবেও এলপিজি আনা সম্ভব।
মূল প্রবন্ধে বিইআরসির উপ পরিচালক (ট্যারিফ) কামরুজ্জামান বলেন, এলপিজির রফতানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের টন প্রতি পরিবহন ব্যয় ভারতের চেয়ে দ্বিগুণ। এই ব্যয় কমানো গেলে দেশে এলপিজির দাম কমানো সম্ভব।
এতে আরও বলা হয়, ভারতের হলদিয়া বন্দরে টনপ্রতি এলপিজি আমদানি ব্যয় ৬০ ডলার অন্যদিকে বাংলাদেশে যা সর্বোচ্চ ১৩০ ডলার। মংলা বন্দরের পোতাশ্রয় এলাকায় ৩০ হাজার টন এলপিজির জাহাজ আনা সম্ভব। এটি করা সম্ভব হলেও দেশে এলপিজির পরিবহন ব্যয় টনপ্রতি ৮০ ডলারে নামিয়ে আনা সম্ভব।
বিইআরসি বলছে, ভারতের কলকাতায় এলপিজির দর কেজি প্রতি ৫০ টাকা। অন্যদিকে বাংলাদেশে এই দাম স্থান ভেদে সর্বোচ্চ ৮৩ টাকা। ভারতে পরিবহন ব্যয়ের তুলনায় বাংলাদেশে পরিবহন ব্যয় দ্বিগুণ এছাড়া ভারতে এলপিজির বিপণন ব্যয় কেজিতে ১৫ টাকা হলেও বাংলাদেশে তা ৩০ থেকে ৩২ টাকা। এলপিজি পর্যায়ে মূসক আছে পাঁচ ভাগ। এটি সরকার নির্ধারিত সময়ে সময়ে পরিবর্তন হতে পারে। স্টোরেজ এবং বোতলের দাম বছরে একবার ঠিক করতে চায়।
এলপিজি সংগঠনের সভাপতি আজম জে চৌধুরী বলেন, বেসরকারি খাতে যদি কোনও ব্যবসা করতে চায় তাহলে বিপিসির জন্য একটি মার্কেটিং ফি দিতে হয়। পাঁচ লাখ টাকা করে বিপিসিতে বছরে দিতে হয়। আবার এখন বিইআরসি চিঠি দিয়ে বলছে তারা দাম ঠিক করতে চায়। যেহেতু দু পক্ষই আমাদের কাছ থেকে অর্থ নিচ্ছে তাই আমরা ঠিক জানি না কে রেগুলেটর, বিইআরসি না বিপিসি?
তিনি বলেন, দাম নির্ধারণ করতে গিয়ে বিইআরসি যে কমিটি করেছে সেখানে কোন ব্যবসায়ী প্রতিনিধি রাখা হয়নি। তাহলে আমাদের আর প্রয়োজন কী? তারাই দাম ঠিক করে দিয়ে দেন।
তিনি জানান, বিইআরসি বছরে একটি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ৫৬ লাখ টাকা বিভিন্ন ধরনের ফি নিচ্ছে। তাদের কাছে আমরা এসব ফি কমাতে বলেছি। কিন্তু তারা এখনও কমায়নি। তিনি বলেন, এভাবে এগুলো কার্যকর করা সম্ভব না। ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা শামসুল আলম বলেন, আইন অনুযায়ী লাইসেন্সধারীরা আবেদন না করলে বিইআরসি মূল্য নির্ধারণ করতে পারে না। কিন্তু কেউ আবেদন না করলে বিইআরসি তাহলে কিভাবে দাম নির্ধারণ করছে।
এসময় বিইআরসির চেয়ারম্যান বলেন, কেউ না চাইলে আমরা দাম পরিবর্তন করতে পারি না। কিন্তু এখন আমরা দাম নির্ধারণ করছি।
ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা বলেন, বিইআরসির প্রবিধানমালা প্রস্তুতই হয়নি। তিনি বলেন, বিষয়টি উচ্চ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। যেহেতু এলপিজির দাম বৃদ্ধির প্রবিধানমালাই নেই সে জন্য কোনওভাবে এই আলোচনাই হতে পারে না।
আলোচনা সভায় বিআইরসি চেয়ারম্যান ছাড়াও সদস্য মকবুল ই ইলাহী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক বদরুল ইমামসহ এলপিজি প্রতিনিধিরা বক্তব্য রাখেন।