লাখ টাকায় জাল পরিচয়পত্র বানাতেন ইসির দুই কর্মী
রাজধানীর মিরপুর এলাকা থেকে দ্বৈত, জাল ও ডুপ্লিকেট জাতীয় পরিচয় পত্র তৈরি করে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে লোন উত্তোলনে সহায়তাকারী চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) লালবাগ বিভাগের সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়ি চুরি প্রতিরোধ টিম। এরমধ্যে নির্বাচন কমিশনের দুই ডেটা অপারেটরও রয়েছেন।
শনিবার রাতে মিরপুরের চিড়িয়াখানা রোডের ডি-ব্লক এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, সুমন পারভেজ (৪০), মজিদ (৪২), সিদ্দার্থ শংকর সূত্রধর (৩২), আনোয়ারুল ইসলাম (২৬) ও আব্দুল্লাহ আল মামুন (৪১)। এ সময় তাদের কাছ থেকে দ্বৈত, জাল ও ডুপ্লিকেট ১২টি জাতীয় পরিচয় পত্র উদ্ধার করা হয়।
রোববার লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার রাজীব আল মাসুদ সাংবাদিকদের বলেন, সুমন পারভেজ ও মজিদ ব্যাংকঋণ পাইয়ে দেবেন, এই শর্তে একেকজনের কাছ থেকে ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা নিতেন। ঋণ হাতে পাওয়ার পর তাদের দিতে হতো মোট টাকার ১০ শতাংশ পর্যন্ত।
জানা যায়, ব্যাংকের লোন নিয়ে কেউ ঋণ খেলাপি হলে তাদের সিআইবি খারাপ হয় ফলে পুনরায় তারা ব্যাংকে লোনের জন্য আবেদন করতে পারেন না। তখন গ্রেপ্তারকৃত সুমন ও মজিদ লোন পাশ করে দিবে মর্মে প্রথমে জাল জাতীয় পরিচয় পত্র তৈরির জন্য প্রত্যেকের নিকট হতে ৮০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা গ্রহণ করতেন। পরবর্তী সময়ে লোন পাশ হলে লোনের সমূদয় টাকার ১০% হারে দিতে হবে মর্মে চুক্তি করতেন। চুক্তিতে একমত হলে তারা প্রথমে জাল জাতীয় পরিচয় পত্র তৈরি করে দিতেন। পরে লোন পাশ হলে চুক্তি অনুযায়ী লোনের সম্পূর্ন টাকার ১০% হারে নিয়ে নিতেন। এ জাল পরিচয় পত্র তৈরি করে দিতেন তাদের অপর সহযোগী গ্রেপ্তারকৃত সিদ্দার্থ শংকর সূত্রধর ও মো: আনোয়ারুল ইসলাম। তারা প্রত্যেকটি জাল জাতীয় পরিচয় পত্র তৈরি বাবদ ৩৫ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা করে নিতেন।
সিদ্ধার্থ শংকর সূত্রধর ও আনোয়ারুল ইসলাম ই-জোন কোম্পানির মাধ্যমে আউট সোর্সিংয়ে নিয়োগ পেয়ে নির্বাচন কমিশনের অধীনে খিলগাঁও ও গুলশান অফিসে ডাটা এন্ট্রি অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন। এ কারণে তারা নির্বাচন কমিশন অফিসের সফটওয়্যার ব্যবহার করে সহজেই জাল জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করতে পারতেন। তারা এভাবে অনেককে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে লোন তুলে দিয়েছেন বলে গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়।
এ ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে মিরপুর মডেল থানায় মামলা হয়েছে।