ঢাকা, সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪
আপডেট : ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২০ ১১:৩৬

ব্যথানাশক নিষিদ্ধ ট্যাবলেটে ইয়াবার বিকল্প নেশা!

অনলাইন ডেস্ক
ব্যথানাশক নিষিদ্ধ ট্যাবলেটে ইয়াবার বিকল্প নেশা!

মাদকের বিকল্প হিসেবে নিষিদ্ধ ব্যথানাশক ট্যাবলেটকে বেছে নিচ্ছে মাদকসেবীরা। এতে ওই এলাকায় ব্যথানাশক ট্যাবলেটের চাহিদা ব্যাপকভাবে বেড়েছে বগুড়ার ধুনট উপজেলায়।

পুলিশের মাদকবিরোধী তৎপরতায় ইয়াবা-হেরোইন-ফেনসিডিলের দাম বেড়ে যাওয়ায় কম দামের এসব ট্যাবলেট মাদকসেবীদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এই সুযোগে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই এসব ট্যাবলেট অবাধে বিক্রি হচ্ছে ফার্মেসিগুলোতে। 

জানা গেছে, মাদকের বিকল্প হিসেবে মূলত সব ধরনের ব্যথানাশক ট্যাবলেটের চাহিদা নেই মাদকাসক্তদের কাছে। বেশ কিছু ওষুধ কম্পানি ব্যথানাশকের নামে কৌশলে নেশা জাতীয় ট্যাবলেট বাজারজাত করছে। এসব ওষুধ সেবন করলে ব্যথার পাশাপাশি ঘুম ও নেশার চাহিদা বাড়ে। ওষুধ কম্পানির বিপণন কর্মকর্তাদের মাধ্যমে গোপনে ওষুধের দোকানগুলোতে এমন প্রচারণা চালানো হচ্ছে। মাদকাসক্তদের চাহিদার বিষয়টি লক্ষ্য করে বিভিন্ন কম্পানি ভিন্ন ভিন্ন নামে ব্যথানাশক ট্যাবলেট বাজারে ছেড়েছে।

অনুসন্ধান করে জানা গেছে, দিনের চেয়ে রাতে এসব ট্যাবলেটের চাহিদা অনেক গুণ বেড়ে যায়। তাই প্রতিদিন সন্ধ্যা হলেই ওষুধের দোকানগুলোতে মাদকসেবীদের আনাগোনা বাড়তে থাকে। তারা ওষুধের দোকান থেকে অবাধে নিষিদ্ধ ব্যথানাশক ট্যাবলেট কিনে সেবন করে। এসব ট্যাবলেট চলতি বছরের ১০ জুলাই সরকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। এর পরও কিছু অসাধু ওষুধ ব্যবসায়ী অধিক লাভের আশায় মাদকসেবীদের কাছে গোপনে এসব ট্যাবলেট বিক্রি করছে।

ব্যথানাশক ট্যাবলেট কিনতে আসা একাধিক সেবনকারী জানান, প্রশাসনের কঠোর তৎপরতায় বাজারে ইয়াবাসহ সব ধরনের মাদকের সংকট সৃষ্টি হয়েছে। দামও অনেক চড়া। তাই ইয়াবার বিকল্প হিসেবে টাপেন্টা, লোপেন্টা, পেন্টাডল ও সিনটা বিকল্প নেশা হিসেবে সেবন করছি। এরমধ্যে শুধু লোপেন্টাতে হুবহু হিরোইনের স্বাদ পাওয়া যায়। বাকি সব ট্যাবলেটে ইয়াবার মতো নেশা হয়। ব্যথানাশক ট্যাবলেট সেবনে ঘুম ভালো হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এক ধরনের অনুভূতি পাওয়া যায়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ওষুধের দোকানের মালিক বলেন, বর্তমানে মাদকসেবীদের কাছে ব্যথানাশক ট্যাবলেট ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। মাদকসেবীদের শতকরা ৬০-৬৫ ভাগই এখন ব্যথানাশক ট্যাবলেটে আসক্ত। বেশি চাহিদার কারণে এসব ট্যাবলেটের খুচরা মূল্য ২৫-৩০ টাকা হলেও বর্তমানে প্রতি পিস ট্যাবলেট ১০০-১৫০ টাকা দামে বাজারে বিক্রি হচ্ছে।

ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, সব ধরনের মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। মাদকের বিকল্প হিসেবে নিষিদ্ধ ব্যথানাশক ট্যাবলেট সেবনের কোনো তথ্য পাওয়া গেলে অবশ্যই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সঞ্জয় কুমার মহন্তম জানান, বাজারে যারা ফার্মেসিতে নিষিদ্ধ ব্যথানাশক ট্যাবলেট বিক্রি করছেন তাদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত আছে। কোনো দোকানে নিষিদ্ধ ব্যথানাশক ট্যাবলেট পাওয়া গেলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

উপরে