ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ধীরে ধীরে বাড়ছে
দেশে ডেঙ্গু রোগী সংখ্যা ধীরে ধীরে বাড়ছে। গত জুলাই মাসে ২৩ জন রোগী ভর্তি হলেও আগস্ট মাসে ৬৬ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
অর্থাৎ আগস্ট মাসে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে প্রায় তিনগুণ রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবং স্বাস্থ্য তথ্য ইউনিটের (এমআইএস) ডেপুটি চীফ (মেডিক্যাল) ডা. এ বি মো. শামছুজ্জামান জানান, ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানী ঢাকা ও ঢাকার বাহিরে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে কোনো রোগী ভর্তি হয়েনি। তবে বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে মোট ৯ জন রোগী ভর্তি আছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কন্ট্রোল রুম তথ্য থেকে জানা যায়, ১ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত রাজধানীসহ সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু ও সন্দেহজনক ডেঙ্গু নিয়ে ৪১৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ছাড়পত্র নিয়ে চলে গেছেন ৪০৬ জন।
এদের মধ্যে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে সবচেয়ে বেশি ১৯৯ জন, ফেব্রুয়ারী মাসে ৫৪ জন, মার্চ মাসে ২৭ জন, এপ্রিল মাসে ২৫ জন, মে মাসে ১০ জন, জুন মাসে ২০ জন, জুলাই মাসে ২৩ জন, আগস্ট মাসে ৬৬ জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছেন।
এছাড়া চলতি বছরে ডেঙ্গু ও ডেঙ্গু সন্দেহে এ পর্যন্ত এক রোগীর মৃত্যুর তথ্য সরকাররে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটে (আইইডিসিআর) পাঠানো হয়। উক্ত ব্যক্তির মৃত্যুর তথ্য বিশ্লেষণ করে আইইডিসিআর নিশ্চিত হয়েছে, মৃত্যুটি ডেঙ্গু জনিত নয়। তাই এ বছর এখনো কোনো ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়নি বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধীদপ্তর।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ স্বাস্থ্য অধিদপ্তেরর রোগতত্ত্ব বিভাগের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. বেনজির আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, সাধারণত একসঙ্গে দুইটি ( কোভিড-১৯ ও ডেঙ্গু) ভাইরাসের সংক্রমণ হয় না। দেশে যেহেতু করোনার সংক্রমণ ব্যাপক আকারে ছড়িয়েছে। তাই ডেঙ্গুর সংক্রমণ অনেক হবে, তা মনে হয় না।
তিনি বলেন, গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা অনেক কম। অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছরে শুরুর দিক থেকেই ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনসহ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর খুবই তৎপর।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, মশার আবাস ও প্রজননক্ষেত্র ধ্বংস করতে পারলেই এডিস মশা নিমূল করা যাবে। রাজধানীসহ সারা দেশে এডিস মশামুক্ত করতে সিটি করপোরেশনের পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসন দায়িত্বের সঙ্গে কাজ করছে। এডিস মশার লার্ভা ধ্বংস করতে প্রতিনিয়ত অভিযান চলছে। তবে ডেঙ্গু মোকাবিলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর প্রস্তুত রয়েছে।
ডেঙ্গু কার্যক্রমের উপ-কর্মসূচি ব্যবস্থাপক ডা. আফসানা আলমগীর খান ডেঙ্গুর প্রজননস্থল ও প্রকোপ নিয়ে একাধিক জরিপ পরিচালনা করেছেন। তিনি বিভিন্ন জরিপের তথ্য উল্লেখ করে জানান, এডিস মশার প্রজনন এবার অনেক কম। গত বছর যেখানে আটটি মশার উপস্থিতি পাওয়া গেছে সেখানে এবার মাত্র দুটি পাওয়া গেছে। ডেঙ্গু মৌসুম নিয়ে শুরুর দিকে আতঙ্ক ছিল। বর্তমানে ডেঙ্গুর প্রকোপ ও আতঙ্ক নেই।