আশুরার নামেও চাঁদাবাজি!
আশুরার শিরনির নামে রাজধানীর পুরান ঢাকায় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের দিয়ে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চাঁদাবাজি করানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
শুক্রবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর লালবাগ এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেকশন রোডের বাটা মসজিদ স্টাফ কোয়ার্টার মোড় এলাকায় কয়েক কিশোর টাকা তুলছে। লেগুনা, অটোরিকশা, প্রাইভেট কার, পিকআপ থেকে শুরু করে রিকশাও বাদ যায় না।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, সকাল থেকে ঢোলের শব্দে অতিষ্ঠ করে ফেলে কিছু কিশোর। তাদের মধ্যে ৮-৯ বছরের শিশুও দেখা যায়। তাদের ঢোল বাজাতে মানা করলে খারাপ আচরণ করে। তবে আগে বাসায় গিয়ে টাকা তোলার চেষ্টা করলেও এবার সেটা কম। রাস্তায় দাঁড়িয়ে ১০ টাকার বেশি না দিলে ছাড়তে চায় না। প্রতিবছরই অন্যায়ভাবে মানুষকে বিরক্ত করে তারা টাকা তোলে। এবার আশুরার কোনো আনুষ্ঠানিকতা না থাকলেও টাকা তোলা হচ্ছে।
রিকশাচালক কিশোর মিয়া বলেন, কামরাঙ্গীর চর, হাজারীবাগ, জিগাতলা আর বেড়িবাঁধের রাস্তায় গেলে পোলাপাইন রিকশা থামাইয়া পাঁচ থেকে ১০ টাকা নিয়া নেয়। না দিলে আবার রিকশার বাতাস ছাইড়া দেয়। নইলে হাতে থাহা লাঠি দিয়া রিকশায় বাড়ি মারে।
অভিযোগ পাওয়া গেছে, ছাত্রলীগের কয়েক নেতার ইশারায় বেড়িবাঁধ, লালবাগ ও আজিমপুর এলাকায় কিশোরদের কয়েকটি গ্রুপ মহররমের নামে চাঁদাবাজি করে। যুবলীগের কয়েকজনের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ করেছেন খোদ স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা। তাদের মধ্যে লালবাগ থানা যুবলীগের নেতা পরিচয় দেয়া হাবীবের বিরুদ্ধেও অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগ অনুযায়ী, তিনি বিভিন্ন সময় কিশোরদের দিয়ে চাঁদা তোলার কাজ করিয়ে থাকেন। তবে এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করেও হাবীবের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
দিনভর কাজের বিনিময়ে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের দেয়া হয় ১০০ থেকে ১২০ টাকা। এই কাজে সম্পৃক্ত কয়েক কিশোর জানায়, রসুলবাগ, শহীদনগর, সেকশন, হাজারীবাগসহ আশপাশের এলাকায় জাতীয় বিভিন্ন দিবস উপলক্ষে তাদের দিয়ে চাঁদা তোলানো হয়, যার সামান্যই পায় তারা।
লালবাগ থানার ওসি কে এম আশরাফ উদ্দিন বলেন, থানার পুলিশ সব সময় টহলে আছে। আশুরা উপলক্ষে কোনো আনুষ্ঠানিকতা হবে না। এর সঙ্গে জড়িত কারো সন্ধান পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।