বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী আজ
বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী আজ। ১৯৭১ সালের এ দিনে করাচির মশরুর বিমানঘাঁটি থেকে টি-৩৩ প্রশিক্ষণ বিমান নিয়ে পালিয়ে আসার চেষ্টা করেন তিনি। সেখানে বিমানবাহিনীর সেফটি অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় রশিদ মিনহাজ নামে একজন শিক্ষানবিশ পাইলটকে অজ্ঞান করে বাংলাদেশ অভিমুখে রওনা দেন। বিপদবার্তা শত্রুদের কাছে পৌঁছালে আরও চারটা বিমান মতিউর রহমানকে ধাওয়া করে। একপর্যায়ে মতিউরের সামনের আসনে বসে থাকা মিনহাজের জ্ঞান ফিরে এলে শুরু হয় ধস্তাধস্তি। এর ফলে ভারত-পাকিস্তান সীমান্তের খুব কাছে বিমানটি মিনহাজসহ বিধ্বস্ত হয়, আর নিজ আসন থেকে ছিটকে পড়ে শহীদ হন মতিউর রহমান। মুক্তিযুদ্ধের সময় মতিউর রহমান ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট পদে ছিলেন।
১৯৪১ সালের ২৯ নভেম্বর জন্ম নেন জাতির এ বীরসেনানী। ১৯৬১ সালে পাকিস্তান বিমানবাহিনীতে যোগ দেন তিনি। ১৯৬৩ সালে রিসালপুর পিএএফ কলেজ থেকে পাইলট অফিসার হিসেবে কমিশন লাভ করেন। কমিশনপ্রাপ্তির পর তিনি করাচির মৌরিপুর (বর্তমান মাসরুর) এয়ার বেজের ২ নম্বর স্কোয়াড্রনে জেনারেল ডিউটি পাইলট হিসেবে নিযুক্ত হন। এখানে তিনি টি-৩৩ জেট বিমানের ওপর কনভার্সন কোর্স সম্পন্ন করেন। ইরানের রানী ফারাহ দিবার সম্মানে পেশোয়ারে যে বিমান মহড়া অনুষ্ঠিত হয়, তাতে তিনিই একমাত্র বাঙালি পাইলট ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধে মতিউরের অসম সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে সর্বোচ্চ জাতীয় খেতাব ‘বীরশ্রেষ্ঠ’ উপাধিতে ভূষিত করে।
পাকিস্তান সরকার মতিউর রহমানের মরদেহ করাচির মাসরুর বেসের চতুর্থ শ্রেণীর কবরস্থানে সমাহিত করেছিল। পরবর্তীতে ২০০৬ সালের ২৪ জুন মতিউর রহমানের দেহাবশেষ পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনা হয়। তাকে পূর্ণ মর্যাদায় ২৫ জুন শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে পুনরায় দাফন করা হয়।