ঈদ শেষে এবার ফেরার পালা
পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপনে সরকার নির্ধারিত তিন দিনের ছুটি শেষে খুলছে অফিস-আদালত। যারা ঈদ উপলক্ষে বাড়তি ছুটি নেননি, তারা সবাই যোগ দেবেন কাজে।
ঈদ উৎসবের স্বল্প বিরতি শেষে আবারো সরগরম হবে অফিসপাড়া। করোনা ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট সংকটকালীন পরিস্থিতিতেও প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে গ্রামে পাড়ি দিয়েছিলেন অনেক রাজধানীবাসী। ঈদের ছুটি শেষে তারা আবার ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছেন।
সোমবার (৩ আগস্ট) রাজধানীর কল্যাণপুর-গাবতলী বাসস্ট্যান্ড এলাকা ঘুরে অনেককেই ঢাকায় ফিরতে দেখা গেছে। তবে ঈদ শেষে গতানুগতিক রাজধানীমুখী মানুষের চাপ দেখা যায়নি।
বাস কাউন্টারগুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঈদের আগমুহূর্তে প্রায় সবাই একসঙ্গে ঢাকা ছাড়লেও ফেরার সময় আস্তে আস্তে ফেরেন। অনেকেই ঈদের নির্ধারিত ছুটির সঙ্গে বাড়তি ছুটি যোগ করে নেন। আবার কেউ কেউ ঈদ শেষে অফিস ধরতে ঢাকায় ফিরলেও তাদের পরিবার বাড়িতে থেকে যান আরো কিছুদিন।
করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার কিছুটা কম সংখ্যক মানুষ ঢাকা ছেড়েছেন। তাই স্বাভাবিকভাবেই ফেরার সংখ্যাটাও কম।
গাবতলী এলাকায় শ্যামলী পরিবহন বাস কাউন্টারের দায়িত্বরত রায়হান নামে একজন বলেন, মানুষ ফিরছে, কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে পুরো বাসও ভর্তি হয়ে আসছে না। এবার ঈদে যে সংখ্যক মানুষ ঢাকা ছেড়েছেন, সে সংখ্যক মানুষের ফিরতে আরো দেরি হতে পারে। কারণ, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে। যারা করোনা পরিস্থিতির কারণে দীর্ঘদিন ঢাকাতেই অবস্থান করছিলেন, তাদের অনেকেই ঈদ উপলক্ষে গ্রামে গেছেন। তাদের ফিরতে স্বাভাবিকভাবেই দেরি হবে।
সোহাগ পরিবহনের একটি বাসে খুলনা থেকে ঢাকায় ফিরেছেন বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরত জাহিদ। কথা প্রসঙ্গে তিনি জানালেন, এবার করোনা পরিস্থিতির কারণে বেশিরভাগ কর্মীকেই বাড়তি ছুটি দেওয়া হয়নি। অফিস শুরু হচ্ছে তাই ঢাকায় ফিরতে হলো। তবে পরিবারের অন্য সদস্যদের বাড়িতে রেখে এসেছেন।
তিনি বলেন, খুলনায় বাড়ি হওয়ায় ঈদের ছুটির তিন দিনের দুইদিন যেতে-আসতেই চলে গেল। তারপরেও অফিস খোলা যেহেতু তাই ফিরতেই হলো। স্ত্রী-সন্তানদের রেখে এসেছি, তারা কিছুদিন থাকুক। পরে একসময় গিয়ে নিয়ে আসবো।
এদিকে, ছুটি শেষে ঢাকায় ফেরার পাশপাশি অনেককেই ঢাকা ছাড়তেও দেখা গেছে। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে যারা ঈদের সময়েও বিশেষ দায়িত্বে ছিলেন সাধারণত তারা ঢাকা ছাড়ছেন। এছাড়া ঈদ উপলক্ষে ঢাকায় স্বজনদের বাসায় বেড়াতে আসা লোকজন এবং ঈদকেন্দ্রীক জীবিকার তাগিদে ঢাকায় আসা নিম্নবিত্ত মানুষরা এখন বাড়ির পথে পা বাড়িয়েছেন।
রাজধানীর গুলশানে একটি ২৪ ঘণ্টার বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত প্লাবন নামে এক ব্যক্তি। তিনি কল্যাণপুরে মানিক পরিবহনের বগুড়াগামী বাসে চেপে বাড়ি ফিরছিলেন।
তিনি বলেন, এবারের ঈদে আমার ছুটি হয়নি। ছুটিতে যাওয়া অন্য সহকর্মীরা আজ থেকে কাজে ফিরছেন আর আমি ছুটিতে যাচ্ছি। করোনা পরিস্থিতির কারণে বাড়ি যাওয়া নিশ্চিত ছিল না, তারপরেও আর মন মানলো না। তাই দেরিতে হলেও ঈদ উদযাপনে বাড়ি যাচ্ছি। একদিকে ভালোই হলো, যাওয়ার পথে ঈদের আগ মুহূর্তের মতো পথে দুর্ভোগ পোহাতে হবে না।