ঈদের পর খুলছে পর্যটন শিল্প
মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে দীর্ঘ চার মাস কক্সবাজারের পর্যটন শিল্প বন্ধ থাকলেও ঈদুল আজহার পর খুলে দেওয়া হচ্ছে। এতে আশান্বিত হয়েছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। গত চার মাস ধরে ৪৭০টি হোটেল-মোটেল, দুই হাজারের বেশি খাবারের দোকান, বার্মিজ মার্কেটসহ পর্যটননির্ভর পাঁচ হাজার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। এতে কর্মহীন হয়ে পড়েন আবাসিক হোটেল, মোটেল, রেস্টুরেন্টের প্রায় ৪০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী ও দেড় শতাধিক ট্যুর অপারেটরসহ দেড় লক্ষাধিক মানুষ। যাতে প্রায় হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আগামী ঈদুল আজহার পর পর্যটন সংশ্লিষ্ট সব কার্যক্রম শর্ত সাপেক্ষে খুলে দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এতে আশান্বিত হয়েছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, আগামী ঈদুল আজহার পর কক্সবাজারের পর্যটন শিল্প ও সংশ্লিষ্ট ব্যবসা-বাণিজ্য কঠিন শর্ত সাপেক্ষে খুলে দেওয়া হবে। আবাসিক হোটেল, রেস্টুরেন্টসহ পর্যটন শিল্প সংশ্লিষ্ট যেসব প্রতিষ্ঠানে পর্যাপ্ত কোভিড-১৯ সংক্রমণ প্রতিরোধ ব্যবস্থা থাকবে এবং স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলবে শুধু সেসব প্রতিষ্ঠানকে খোলার অনুমতি দেওয়া হবে।
কক্সবাজার আবাসিক হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম জানান, গত ৪ মাস পর্যটকশূন্য হয়ে পড়ে আছে পর্যটন নগরী কক্সবাজার। সেই সঙ্গে বন্ধ রয়েছে অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এতে ক্ষতি হয়েছে হাজার কোটি টাকা। ঈদের পর খুলে না দিলে সামনে ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে মালিক সমিতির নেতা কাশেম বলেন, মহামারি পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীদের ব্যাংক ঋণ বেড়েছে।
চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। গত ৮ মার্চ দেশে প্রথমবারের মতো করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার ১০ দিন পর দেশে করোনায় প্রথম মৃত্যুর দিনে কক্সবাজারে পর্যটক আগমন বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে ধীরে ধীরে জনশূন্য এলাকায় পরিণত হয় পর্যটন নগরী কক্সবাজার। সব ধরনের বাণিজ্য বন্ধ থাকায় চার মাস আয়-রোজগার শূন্যের কোটায়। কোটি কোটি টাকার আবাসন প্রতিষ্ঠান নিয়ে চরম বেকায়দায় রয়েছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
কক্সবাজার বাঁচাও আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আয়াছুর রহমান জানান, করোনাভাইরাস জেলার অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দিয়েছে। পর্যটনের সঙ্গে বার্মিজ, ঝিনুক, রেস্তোরাঁ, শুকনো খাবার, পান-সিগারেটসহ সংশ্লিষ্ট প্রায় অর্ধশত ক্ষুদ্র ব্যবসা ও নানা ধরনের পরিবহন যুক্ত। এসব ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত প্রায় লক্ষাধিক মানুষ। ব্যবসা বন্ধ থাকায় এরা সবাই বেকার হয়েছেন। এদের ঘরের চুলায় ঠিকমতো ভাতের হাঁড়ি ওঠে না। কক্সবাজার ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশনের (টুয়াক) সভাপতি রেজাউল করিম বলেন, দীর্ঘ ৪ মাস পর্যটন ব্যবসায়ীরা বেকার হয়ে চরম দুর্ভোগে দিনাতিপাত করছেন। করোনার কারণে এসব ব্যবসা ৪ মাসেরও অধিক সময় বন্ধ।