আরও লকডাউন চান বিশেষজ্ঞরা
ওয়ারীর পর ঢাকা শহরে লকডাউনের নতুন কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এ মাসের শুরুতেই ঢাকা শহরে শতাধিক এলাকা রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত করে চূড়ান্তভাবে তৈরি করা নতুন ম্যাপ স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। সেই ম্যাপ নিয়ে নতুন করে কোনো আলোচনা বা সিদ্ধান্ত হয়নি। একইভাবে ঢাকার বাইরে আর কোনো নতুন রেড জোন চিহ্নিত করা হয়নি। রেড জোন বা লকডাউনের ব্যাপারে সরকারের উচ্চপর্যায়ের নতুন কোনো সিদ্ধান্ত স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে পৌঁছায়নি। ফলে ঢাকা শহরের বিভিন্ন রেড জোনসহ দেশের অন্যান্য জেলায় আদৌ লকডাউন করা হবে কি না, হলেও কবে নাগাদ, তা সঠিক করে বলতে পারছেন না কেউ।
অথচ রাজধানীর পূর্ব রাজাবাজারের পর গত শুক্রবার রাতে শেষ হওয়া ওয়ারীর লকডাউন করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে সফল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা এই দুই এলাকার অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে অতিদ্রুত ঢাকা শহরসহ দেশের সর্বোচ্চ সংক্রমিত এলাকাগুলোতে দ্রুত লকডাউন দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তারা মনে করছেন, স্থানীয় বাসিন্দাদের স্বেচ্ছায় নমুনা পরীক্ষা ও লকডাউন সফল করতে স্বাস্থ্যকর্মীসহ স্বেচ্ছাসেবকদের স্বেচ্ছাশ্রমের অভিজ্ঞতা পরবর্তী যেকোনো লকডাউন সফলে বড় ভূমিকা রাখতে পারে; বিশেষ করে কোরবানির ঈদের পরপরই ঢাকাসহ অন্যান্য শহর এলাকায় অতিদ্রুত লকডাউন প্রয়োজন বলে সতর্ক করে আইইডিসিআরের পরামর্শক ও সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুশতাক হোসেন দেশ রূপান্তরকে বলেন, কোরবানির ঈদের পরপরই একসঙ্গে লকডাউন দিতে হবে। কারণ তখন এমনিতেই সংক্রমণ ছড়াবে। ফলে সর্বোচ্চ সংক্রমিত এলাকাগুলোকে রেড জোন ঘোষণা করে লকডাউনে যাওয়া উচিত। তা হলে জনস্বাস্থ্যের কাঠামো যে নগরগুলোতে নেই সাময়িকভাবে সেটার অভাব পূরণ হবে। সার্বিক সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।
একইভাবে ওয়ারীর ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সারোয়ার হোসেন আলো দেশ রূপান্তরকে বলেন, আমি মনে করি খুব সুন্দর পরিকল্পনার কারণে ওয়ারীতে লকডাউন সফল হয়েছে। আমরা তো এভাবে রোগ নিয়ে সব বন্ধ করে থাকতে পারি না। জীবিকা চলতে হবে, অর্থনীতি দরকার। আমরা অত ধনী দেশ না। এভাবেই লকডাউন দিয়ে সমাধান করতে হবে। যেখানেই ঝুঁকি, সেখানেই লকডাউন। এভাবেই সংক্রমণ কমবে।
লকডাউনের ব্যাপারে স্পষ্ট কোনো তথ্য দিতে পারেননি স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি গতকাল শনিবার রাতে দেশ রূপান্তরকে বলেন, এ মুহূর্তে এ ব্যাপারে সঠিকভাবে আমার কিছু জানা নেই। আমার মেয়রদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। কারণ লকডাউন প্রয়োগ করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, মেয়ররা, আবার নির্দেশনা আসে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা ম্যাপিং (ঢাকার রেড জোন) করে দিয়েছিলাম। ম্যাপিং কীভাবে প্রয়োগ হবে, সেটাও বলে দিয়েছি। সেটা তারা জানেন। একসঙ্গে বসেই কাজটা করেছিলাম। এ পর্যন্তই আমার জানা আছে। এ মুহূর্তে ম্যাপে কোনটা আছে, কোনটা করবে, সেটা ঠিক বলতে পারছি না। সেটা তারাই বলতে পারবেন। আমাদের কাজ ছিল বানিয়ে দেওয়া, সেটা সবাই মিলে বসে বানিয়ে দিয়েছিলাম। বাকি কাজ তাদের।
অথচ ঢাকাসহ সারা দেশে ধীরগতিতে হলেও সংক্রমণ বাড়ছে বলে জানান সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণাপ্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরামর্শক ও সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. মুশতাক হোসেন। তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেন, শহরাঞ্চলে, বিশেষ করে বড় বড় শহরে কোথাও সংক্রমণ কমেছে, কোথাও স্থিতিশীল আছে। কিন্তু গ্রামাঞ্চলে সংক্রমণ বেড়েছে; বিশেষ করে যেসব উপজেলার সঙ্গে শহরের যোগাযোগ ভালো, সেখানে সংক্রমণ বেড়েছে। যেমন হাতিয়া দ্বীপে সংক্রমণ বাড়ার কারণ ঢাকা, চট্টগ্রাম ও নোয়াখালী থেকে সেখানে লঞ্চ যায়। ভোলা ও মনপুরায়ও সংক্রমণ বেড়েছে একই কারণে। কারণ এর ফলে সার্বিকভাবে সংক্রমণ ধীরগতিতে বাড়ছে।
এই বিশেষজ্ঞ বলেন, খুবই নিবিড়ভাবে কাজ করে সংক্রমণ কমাতে হবে। ঈদের সময় একটা বড় ঝুঁকি আছে। সেই ঝুঁকি সামলাতে এখনই কাজ শুরু করতে হবে। বাইরে থেকে যারা যাবে তাদের কোয়ারেন্টাইন করতে হবে। আর যেখানে সংক্রমণ বেশি, সেখানে ওয়ারীর মতো মহল্লাভিত্তিক স্বাস্থ্যবেষ্টনীতে যাওয়া দরকার। মহল্লাবাসী নিজেরাও স্বাস্থ্য বিভাগের সহযোগিতায় করতে পারে।
তবে বর্তমানে সরকারের লকডাউনের পদ্ধতি সঠিক না বলে মনে করেন করোনা মোকাবিলায় গঠিত জাতীয় পরামর্শক কমিটির সদস্য ও প্রবীণ ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম। তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেন, লকডাউন করছে কিন্তু মানুষকে সঙ্গে নিচ্ছে না। স্বাস্থ্য বিভাগের ধারণা তারা জোর করে লকডাউন করবে। মানুষকে বন্ধ করে রাখবে। সেটা তো হলো না। যদি কেউ মনে করে তারা নিজেরাই পরীক্ষা করাবে। অযথা কিছু কড়াকড়ি আরোপ করে লকডাউন সম্পর্কে একটা ভীতির সঞ্চার হয়েছে। আমরা চেয়েছিলাম লকডাউনের ব্যাপারে মানুষের মধ্যে যেন ভীতির সঞ্চার না হয়। এ ছাড়া লকডাউন হচ্ছে খুবই ধীরগতিতে; বিশেষ করে ঢাকা শহরে যেসব জায়গায় লকডাউন প্রয়োজন, সেখানে হচ্ছে না বলে মনে করেন ডা. নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, উত্তরা, মিরপুর, মোহাম্মদপুরে চার শরও বেশি সংক্রমিত রোগী। সেগুলোর কাছেই যাচ্ছে না। ছোট ছোট জায়গায় লকডাউন করছে। এটা কি দেখানোর জন্য করছে, বুঝতে পারছি না। ওয়ারী ক্লিন করতে তিন সপ্তাহ লাগল। এভাবে পুরো ঢাকা শহর লকডাউন করতে তো বছরের পর বছর লাগবে। তত দিনে আবার পুরনো জায়গাগুলোতে নতুন করে সংক্রমণ দেখা দেবে। কত গতিতে লকডাউন কার্যকর করতে হবে, সেটার বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি আছে, সেভাবে করতে হবে। সেটা করা যাচ্ছে না।
দুভাবে সফল ওয়ারীর লকডাউন : ৪ জুলাই ভোর ৬টা থেকে ২১ দিনের জন্য লকডাউন করা হয় এখানে। এ সময় ৩০৯ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৮০ জন করোনা শনাক্ত হয়। পরীক্ষা অনুপাতে শনাক্তের হার ২৮ শতাংশের কিছু বেশি। অথচ শুরুর তিন দিনের মাথায় ৫১ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ২৪ জনের মধ্যে করোনা পজিটিভ পাওয়া যায়, যা মোট পরীক্ষা অনুপাতে সংক্রমণের হার ৫০ শতাংশ। পরে ধীরে ধীরে সংক্রমণ কমতে থাকে। এখন সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে স্থানীয় কাউন্সিলরের উদ্যোগে মাইকিং করা হচ্ছে, যা ৩০ জুলাই পর্যন্ত চলমান থাকবে।
ওয়ারীর লকডাউনকে দুভাবে সফল বলছেন ডা. মুশতাক হোসেন। তিনি দেশ রূপান্তরকে বলেন, ওয়ারীতে সংক্রমণের সংখ্যাতত্ত্ব ও পরীক্ষার ব্যাপারে সামাজিকভাবে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ এবং সংক্রমণ প্রতিরোধে কমিউনিটির অংশগ্রহণ উভয় দিক থেকেই ওয়ারীর লকডাউন সফল। জোনভিত্তিক যে বেষ্টনী সেটার প্রধান সাফল্য হলো কমিউনিটির অংশগ্রহণ। ঢাকা শহরে বা সিটি করপোরেশনে তো স্বাস্থ্যকাঠামো নেই। এলাকাভিত্তিক কোনো হেলথ কমিউনিটি বা হেলথ ওয়ার্কার নেই। কোনো স্বাস্থ্যকেন্দ্রও নেই। কাজেই কমিউনিটি যদি নিজেদের দায়িত্ব নিজেরাই নেয়, তাহলে খুবই ভালো। ভলান্টিয়ারটা প্রশিক্ষণ পেয়েছে কীভাবে স্বাস্থ্যবিধি রক্ষা করতে হয়। রাজাবাজার ও ওয়ারী দুই জায়গায় এটা হয়েছে। এটা বড় সাফল্য।
সংক্রমণ কমার ক্ষেত্রেও সংখ্যাতাত্ত্বিক ফল ভালো উল্লেখ করে এই বিশেষজ্ঞ বলেন, ওয়ারীতে সংক্রমণ কমেছে; বিশেষ করে সংক্রমণ শনাক্ত করা বড় সাফল্য। নিজের থেকেই রোগীরা এসে নমুনা দিয়েছে। সাধারণ সময়ে অনেকেই ভিড়ের ভয়ে আসেনি, নানা ধরনের ভয় ছিল। লকডাউন হওয়ায় ওয়ারীতে বাড়ি বাড়ি এসে স্বেচ্ছাসেবক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা মানুষকে নমুনা দিতে উদ্বুদ্ধ করেছেন। ফলে মানুষ লক্ষণ দেখলেই নমুনা দিতে এসেছে। মানুষও দেখল তারা পজিটিভ হলেই সামাজকিভাবে একঘরে হবে না।
এ ব্যাপারে ওয়ারীর ৪১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার সারোয়ার হোসেন আলো দেশ রূপান্তরকে বলেন, লকডাউন খুব ভালো হয়েছে, সফল হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারাও সন্তুষ্ট। লকডাউন সফলের পেছনে সবার সহযোগিতা ও রোগ শনাক্ত হয়েছে, এগুলোই কারণ। ৮০ জনের মতো রোগী শনাক্ত হয়েছে। এই ৮০ জন তো ৮০০ জনের মধ্যে ছড়াত এই রোগটা। সেই ছড়ানো থেমে গেল। ফলে সংক্রমণ কমে গেল।
ঢাকায় সংক্রমণ ধীরগতিতে বাড়ছে : ডা. মুশতাক হোসেন দেশ রূপান্তরকে বলেন, ঢাকা শহরে করোনা সংক্রমণ ধীরগতি, কিন্তু প্রকোপ কমেনি। বাংলাদেশের এক-চতুর্থাংশ রোগী ঢাকা শহরে। বাকি তিন-চতুর্থাংশ ঢাকার বাইরে। তার মধ্যে শহরের আশপাশে ও গ্রামাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে। বিভিন্ন উপজেলায়ও ছড়িয়ে পড়েছে। ঢাকা বিভাগে এখনো মোট মৃত্যুর অর্ধেক। চট্টগ্রামে প্রায় ২৫ শতাংশ। ফলে বোঝা যায় ঢাকায় ধীরগতি হলেও সংক্রমণ বাড়ছে।
অনেকে বলতে চাইছেন ঢাকায় করোনার সর্বোচ্চ সংক্রমণ বা ‘পিক’ পার হয়ে গেছে, এটা ঠিক না উল্লেখ করে এই বিশেষজ্ঞ জানান, কারণ এখন টেস্ট কম হচ্ছে। এখনো সারা দেশে সংক্রমণ হার ২৪ শতাংশের মধ্যেই ওঠানামা করছে। অর্থাৎ বাড়ছে। কারণ ২০ থেকে ২২ শতাংশ হয়েছিল। তার মানে মাঝেমধ্যেই ছোট লাফ দিচ্ছে। এই সংক্রমণের বেশির ভাগই ঢাকায়। সুতরাং ‘পিক’ চলে গেছে বলা যাবে না। মানুষ বিভ্রান্তিতে পড়বে।
এই রোগতত্ত্ববিদের মতে, এ মাসে ঢাকাসহ গোটা দেশেই সংক্রমণের ধীরগতি দেখা যাবে। কারণ বৃষ্টি ও বন্যার কারণে মানুষের সামাজিক দূরত্ব কমে। যদি এ সময় সারা দেশে গ্রিন ও রেড জোন করে একসঙ্গে লকডাউন দেওয়া যেত তাহলে একটা ফল পাওয়া যেত। কিন্তু সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।
ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, ঢাকায় সংক্রমণ কমছে বা ধীরগতির সংক্রমণ এটা আপেক্ষিক। কাজেই এই ধীরগতিতে আশ্বস্ত হওয়ার কারণ নেই। যদি আমরা সংক্রমণ থামিয়ে বা কমিয়ে দিতে পারি, তবেই আশ্বস্ত হওয়া যাবে। ঢাকায় সংক্রমণের যেসব পকেট ছিল, সেখানে সংক্রমণ ছড়িয়েছে। ওই সব এলাকায় প্রচুর মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে ও বাড়ছে। কাজেই আক্রান্তের সংখ্যাটা ঢাকায় বেশি, হার ধীরগতির। ঢাকার বাইরে সংখ্যা কম হলেও হার বেশি। কাজেই দুটোই আমাদের জন্য বিপজ্জনক।
নতুন পরিকল্পনা কী : নানাবিধ সংকটের কারণে বড় আকারে জোনভিত্তিক লকডাউন কার্যক্রম থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সরে এসেছে বলে জানিয়েছেন অধিদপ্তর ও আইইডিসিআরের কর্মকর্তারা। তারা দেশ রূপান্তরকে বলেন, জেলা-উপজেলা নিয়েও নতুন করে চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। এ ছাড়া রাজধানীর বিষয়ে আগের অবস্থান থেকে সরে এসে ছোট ছোট এলাকা ধরে লকডাউনের কথা ভাবা হচ্ছে। সেটি সম্ভব না হলে করোনা পজিটিভ শনাক্ত ব্যক্তির বাসস্থান বা বাড়ি লকডাউনের কথা ভাবা হচ্ছে। তবে এ কাজটি আদৌ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে কি না কিংবা কবে নাগাদ বাস্তবায়ন করা হবে, সে সম্পর্কে কেউ নিশ্চিত নন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা দেশ রূপান্তরকে বলেন, জুনের প্রথম সপ্তাহেই আমরা রেড জোনের নতুন ম্যাপ করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে বুঝিয়ে দিয়েছি। এক কিলোমিটারেরও কম জায়গা নিয়ে শতাধিক স্পট করা হয়েছে। একসঙ্গে লকডাউন হবে না এখানে। সিদ্ধান্ত হয়েছে একটার পর একটা করবে।
লকডাউন কেন হচ্ছে না : স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, একযোগে লকডাউন না করার পেছনে মূল কারণ সরকার মনে করছে করোনা পরিস্থিতি বর্তমানে স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। এক মাস ধরে শনাক্ত ও মৃত্যু কমছে না বাড়ছেও না। এমন অবস্থায় সরকার এত তাড়াতাড়ি এভাবে লকডাউনে যেতে চায় না। ঢাকার বাইরে যেহেতু ছোট ছোট এলাকায় হচ্ছে, মানুষ কম, সেটা স্থানীয় প্রশাসন ব্যবস্থা করতে পারছে। কিন্তু ঢাকায় একযোগে সম্ভব নয়।
তবে কর্মকর্তারা জোনভিত্তিক লকডাউন শুরু করতে না পারার জন্য স্বাস্থ্য বিভাগ, সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর কাজকর্মে সমন্বয়হীনতাকে কারণ বলে মনে করছেন। তারা জানান, জোনভিত্তিক কার্যক্রম শুরুর জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিদায়ী মহাপরিচালক ডা. আবুল কালাম আজাদকে প্রধান করে ১৩ সদস্যের একটি কেন্দ্রীয় কারিগরি কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটি ১৩ জুন রাজধানীর ৪৫টি ও চট্টগ্রামের ১০টি এলাকার পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও নরসিংদীর কিছু এলাকাকে রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত করে কার্যক্রম বাস্তবায়নের সুপারিশ করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার বাইরে কয়েকটি এলাকায় রেড জোনে কার্যক্রম শুরু করা গেলেও রাজধানীর দুটি এলাকা ছাড়া অন্যান্য রেড জোনে কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হয়নি।