মন্ত্রণালয়ের ব্যয় কমানোর নির্দেশ
মহামারী করোনাভাইরাসের প্রভাবে বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দা চলছে। বাংলাদেশেও সরকারের ব্যয় বাড়লেও কমে গেছে রাজস্ব আদায়। এমন পরিস্থিতিতে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে ব্যয় কমানোর নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী সরকারি কর্মকর্তাদের মিতব্যয়ী হওয়ার নির্দেশ দিয়ে বলেন, করোনার কারণে সরকারের রাজস্ব আদায় কমে গেছে। তাই এখন থেকে সবাইকে সাশ্রয়ী হতে হবে। ভার্চুয়াল সভায় অংশ নিয়ে শেখ হাসিনা আরও বলেন, সরকারি ব্যয় কমাতে এরই মধ্যে প্রকল্পের আওতায় নতুন গাড়ি কেনা স্থগিত করা হয়েছে। আরও অনেক খাত আছে, যেখানে থেকে টাকা সাশ্রয় করা যেতে পারে। বৈঠক শেষে এক ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে পরিকল্পনামন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণ, বিমান ভাড়া, হোটেলে থাকা-খাওয়াতে অনেক টাকা খরচ হয়। এই খাতে টাকা সাশ্রয় করার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। কোনো একটি সভা-সেমিনার করতে গেলে সেখানে খাতা-কলম, ফোল্ডার দেওয়া হয়। মন্ত্রণালয়ে চা-চিনি বাবদ টাকা খরচ হয়। এসব জায়গা থেকে টাকা বাঁচানোর কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। সরকারি কর্মকর্তাদের বিভিন্ন সভা-সেমিনারে গেলে সম্মানী দেওয়া হয়; জ্বালানি খরচও কম নয়। এসব খাত থেকেও টাকা সাশ্রয় করা যেতে পারে। কৃচ্ছ্র সাধন করতে এরই মধ্যে উপসচিবদের গাড়ি কেনার সুবিধাও স্থগিত করা হয়েছে। সব মিলিয়ে বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার কারণে সরকারের ব্যয় কমাতে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান পরিকল্পনামন্ত্রী।
এছাড়া বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী সিটি করপোরেশনকে নিজস্ব খরচে চলার নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, কেন্দ্র থেকে টাকা দেওয়া যাবে না। সিটি করপোরেশন নাগরিকদের সেবা দেয়। তাই সংস্থা নিজের অর্থায়নেই চলতে হবে। সরকারের দিকে তাকিয়ে না থেকে নিজেদের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য সিটি করপোরেশন ও স্থানীয় সরকার সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন তিনি।
গতকালের বৈঠকে জনপ্রতিনিধিদের অনুরোধে যত্রতত্র সেতু নির্মাণের বিষয়টিও উঠে আসে। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রত্যেকে নিজেদের বাড়ির সামনে সেতুর স্বপ্ন দেখেন। এটা ঠিক নয়। দেশে এমনিতেই প্রচুর সেতু হয়েছে। নতুন সেতু নির্মাণে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।
পাহাড়ের প্রতিটি ঘরে বিদ্যুতের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেখানে পল্লী বিদ্যুতায়নের লাইন দেওয়া সম্ভব সেখানে লাইন দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। যেখানে লাইন দেওয়া সম্ভব নয়, সেখানে সৌর বিদ্যুতের ব্যবস্থা করতে হবে। সব মিলিয়ে পার্বত্য জেলায় প্রতিটি ঘরেই বিদ্যুতের ব্যবস্থা নিশ্চিত করার তাগিদ দেন শেখ হাসিনা।