অতিরিক্ত টিভি দেখাতে শিশুদের মৃত্যু ঝুঁকি বেশি
আজকাল এমন অবস্থা হয়েছে যে, টিভি দেখতে না দিলে অনেক শিশু কান্না শুরু করে দেয়, আর টিভি চালু করলেই শিশু শান্ত। সাধারণত বাবা-মা, ভাই বোনের সাথে শিশুরা টিভি দেখে থাকে। এমনকি একাও দেখে থাকে। অনেক মায়েরা টিভি দেখতে দেখতে শিশুকে খাওয়ানোর অভ্যাস করেন।
এই অতিরিক্ত টিভি দেখা একপর্যায়ে আসক্তিতে পরিণত হতে পারে যা শিশুর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
অতিরিক্ত টিভি দেখা শিশুর জন্য কতটা ক্ষতিকর এ বিষয়ে কথা বলেছেন শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. তৌসিফ আহমেদ।
১. অতিরিক্ত টেলিভিশন শিশুকে আত্মকেন্দ্রিক, অসহনশীল ও অসামাজিক করে।
২. শিশুর বুদ্ধির বিকাশে বাধা দিয়ে সৃষ্টিশীলতা নষ্ট করে দেয়।
৩. শিশুর শারীরিক খেলাধুলার সময় কেড়ে নেয়। এতে শিশুরা শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে।
৪. শিশুর শারীরিক পরিশ্রম কমিয়ে দেয়। এতে ওজন বাড়ে।
৫. পারিবারিক সদস্যদের মধ্যে বন্ধন কমিয়ে দেয়।
৬. সামাজিক যোগাযোগ কমিয়ে দেয়।
৭. শিশুর স্বাভাবিক আচার-ব্যবহারের ওপর প্রভাব ফেলে।
৮. শিশুর মাথাব্যথা, চোখব্যথা, চোখ দিয়ে পানি পড়াসহ চোখের দৃষ্টিশক্তি নষ্ট করে।
৯. শিশুকে ধূমপান, মদ্যপানসহ মাদকে আসক্ত করে। ১০. অতিরিক্ত টেলিভিশন শিশুর ভবিষ্যতে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোকসহ নানা জটিলতা বাড়ায়।
প্রতিকার
১. শিশুরা অনুকরণপ্রিয়, তাই আপনাকে আগে টিভি দেখা কমাতে হবে এবং অতিরিক্ত টিভি দেখার কুফল শিশুকে বোঝাতে হবে।
২. শিশুকে প্রতিদিন আধঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টার বেশি টিভি দেখতে দেবেন না।
৩. শিশুর ঘুমানোর ঘরে টিভি রাখবেন না।
৪. শিশুর খাওয়ার সময় টিভি দেখাতে দেখাতে শিশুকে খাবার খাওয়াবেন না।
৫. টিভির বিকল্প বিনোদনের ব্যবস্থা করুন। শিশুর জন্য যাতে টিভির প্রতি অতিরিক্ত আসক্তি কমে।
৬. সপ্তাহে একদিন শিশুকে টিভি দেখা থেকে বিরত রাখুন।
৭. বাসার পড়াশোনা বা হাতের কাজ করার সময় শিশুকে টিভি দেখতে দেবেন না।
৮. মা-বাবা সবাই ব্যস্ত, শিশুটি তাদের কাজে বিঘ্ন বা জ্বালাতন করছে, এ অবস্থায়ও শিশুদের টিভি দেখাতে বসিয়ে এ বিষয়ে আসক্ত করবেন না। যদি সুস্থ থাকতে চান তাহলে অযথা টেলিভিশনের সামনে বসে সময় কাটানোর পরিমাণ কমিয়ে দিন। কারণ এর মাধ্যমে শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে।