হুতিদের সন্ত্রাসী তালিকা থেকে বাদ দিলেও মনোভাব বদলে যাওয়া নয় : যুক্তরাষ্ট্র
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নেতৃত্বাধীন নতুন প্রশাসন ইয়েমেনের ইরান সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীদের সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার চিন্তা করছে। তবে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেছেন, সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার মানে হুতিদের সম্পর্কে এবং তাদের ‘নিন্দনীয় আচরণ’ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাব বদলে যাওয়া নয়।
ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের মেয়াদ শেষের আগের দিন, গত ১৯ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের সদ্যবিদায়ী পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও হুতিদের কালো তালিকাভুক্ত করেন। এর দুই সপ্তাহ পর, নতুন প্রশাসনের কাছ থেকে সিদ্ধান্তটি বদলের ইঙ্গিত এলো। বাইডেন প্রশাসনের এই পরিকল্পনাকে স্বাগত জানিয়েছেন ডেমোক্র্যাট সিনেটর ক্রিস মারফি। “(হুতিদের) সন্ত্রাসী তকমা দেওয়ায় ইয়েমেনের ভেতর খাবার ও অন্যান্য জরুরি ত্রাণ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল; এটি সম্ভবত কার্যকর রাজনৈতিক মধ্যস্থতার পথেও অন্তরায় হয়ে দাঁড়াত, বলেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর পরিদর্শনে গিয়ে বাইডেন ইয়েমেনে সৌদি নেতৃত্বাধীন বাহিনীর সামরিক অভিযানে সহযোগিতা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছিলেন। ইয়েমেনে যুদ্ধের অবসান ঘটাতে হবে বলেও মন্তব্য করেছিলেন তিনি। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ইয়েমেনের অমানবিক পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করেই তারা হুতিদের সন্ত্রাসী তকমা তুলে নেওয়ার কথা ভাবছেন। ইয়েমেনের জনসংখ্যার ৮০ শতাংশের এই মুহূর্তে জরুরি ত্রাণ সহায়তা দরকার বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ; সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের অভিযান ও অবরোধের কারণে দেশটিকে এ ভয়াবহ দুর্ভোগ মোকাবেলা করতে হচ্ছে। দেশটির বর্তমান অবস্থা বিশ্বের সবচেয়ে বাজে মানবিক সংকট হিসেবে উল্লেখ করেছে জাতিসংঘ।
ইয়েমেনের হুতি হচ্ছে একটি শিয়া সম্প্রদায়। যারা দেশটির রাজধানী সানা ও উত্তরাঞ্চলে বসবাস করে থাকে, এই হুতিদের একটি অংশ ইয়েমেনের সীমান্তবর্তী সৌদি আরবের দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলা নাজরানেও বসবাস করে থাকে। ইয়েমেনে ৯৯.৫ শতাংশ মুসলমান, যার মধ্য ৭০ শতাংশ সুন্নী ও ৩০ শতাংশ শিয়া। এই ৩০ শতাংশ শিয়ারাই মূলত হুতি সম্প্রদায়। এই হুতিদের ইরানের শিয়া সরকার, ইরাকের শিয়া সরকার ও লেবাননের হিজবুল্লার সহযোগী সংগঠন বলে মনে করা হয়।