৩৫ বছরের মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ায় রেকর্ড ঠান্ডা
প্রচণ্ড ঠান্ডায় কাঁপছে দক্ষিণ কোরিয়া। ৩৫ বছরের মধ্যে দেশটিতে সবচেয়ে বেশি ঠান্ডা বিরাজ করেছে শুক্রবার। এদিন উত্তর মেরু থেকে আসা শীতল বাতাস দক্ষিণ কোরিয়াকে ঠান্ডায় বিপর্যস্ত করেছে। ফলে জারি করা হয়েছে আবহাওয়া সতর্কতা। খবর দ্য কোরিয়া হেরাল্ডের।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ভয়াবহ এই ঠান্ডায় ট্রাফিক এবং পথচারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্যও সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে। কারণ, ঠান্ডায় অভ্যন্তরীণ অঞ্চলে জমাটবদ্ধ তুষারপাত রাস্তাঘাট এবং ফুটপাতকে পিচ্ছিল করে তুলবে এবং সর্বত্র চলাফেরা কঠিন হবে।
শুক্রবার দেশটির গাংওয়ান প্রদেশের একটি পর্বতে মাইনাস ২৯ দশমিক ১ ডিগ্রি এবং উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের সিউলে মাইনাস ২১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া জংনো-গুতে সারারাত ধরে সর্বনিম্ন মাইনাস ১৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, যা ১৯৮৬ সালে ৫ জানুয়ারির পরে সর্বনিম্ন বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
৩৫ বছরের ইতিহাসে দক্ষিণ কোরিয়া এমন ঠান্ডা আগে কখনো দেখেনি। ভয়াবহ এই ঠান্ডায় নদীর পানি বরফ খণ্ডে পরিণত হয়েছে। গাছ, বাড়িঘর, গাড়ি ও রাস্তাঘাটের ওপর বরফ জমে গেছ।
হায়াংবোবং পর্বতে মাইনাস ২৯ দশমিক ১ ডিগ্রি, সেওরাকসান পর্বতে মাইনাস ২৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি, চুনচিওনে মাইনাস ২১ দশমিক ৮ ডিগ্রি, ওঞ্জুতে মাইনাস ১৪ দশকিক ৮ডিগ্রি এবং গাংনিংয়ে মাইনাস ১৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলিসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
একপর্যায়ে হায়াংবোংয়ে মাইনাস ৪৪ দশমিক ১ ডিগ্রি এবং চুনচিওনে মাইনাস ২৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। তীব্র বাতাসের কারণে আরো বেশি শীত অনুভূত হতে পারে বলে জানা গেছে।
এদিকে, দেশটির পূর্ব উপকূলীয় শহরগুলোসহ গাংওয়ান প্রদেশের অবশিষ্ট ১৩টি শহর ও কাউন্টিদের জন্য আবহাওয়া সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
কোরিয়া আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, উত্তরাঞ্চল থেকে ঠান্ডা বাতাসের প্রবাহ দুর্বল হওয়ায় শনিবার তাপমাত্রা কিছুটা বাড়বে। তবে শীতকালীন কিছুটা সময় চলতে থাকবে। তবে জেওলা প্রদেশের কিছু অংশ, জেজু, উলিওংডো এবং ডকডো দ্বীপপুঞ্জে রবিবার জুড়ে তুষারপাত অব্যাহত থাকবে।
ভয়াবহ এই ঠান্ডা হাত থেকে বাঁচতে আউটডোর কর্মীদের অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করার পাশাপাশি প্রবীণ নাগরিক এবং স্বাস্থ্য সমস্যাজনিত লোকদের পরামর্শ দিয়েছে কোরিয়া আবহাওয়া অধিদপ্তর।
আবহাওয়া অফিস থেকে বলা হয়েছে, অতিরিক্ত ঠান্ডায় পানির পাইপগুলো হিমশীতল এবং ফেটে যেতে পারে। এছাড়া ভিনাইল গ্রিনহাউসগুলো এবং মাছের খামারগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে উচ্চ সতর্কতা জানানো হয়েছে।