চীন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে ‘বিশ্বস্ত উৎস’ খুঁজছে ভারত
টেলিকম সরঞ্জাম কেনার জন্য ‘বিশ্বস্ত উৎসের’ তালিকা প্রস্তাব করেছে ভারত সরকার। এটি এমন একটি পদক্ষেপ যা ভারতের বাজার থেকে চীনা প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে ও জেডটিইকে বিতাড়িত করতে পারে।
প্রস্তাবটি টেলিকম খাতের প্রথম জাতীয় নিরাপত্তা নির্দেশিকা আকারে এসেছে, যা বুধবার জারি করা হয়েছে। প্রস্তাবটি অনুমোদিত হলে, তা ১৮০ দিনের মধ্যে কার্যকর হবে।
এই লক্ষ্যে সরকার উপ-জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার নেতৃত্বে একটি জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি গঠন করছে। এই কমিটিতে থাকবেন সংশ্লিষ্ট বিভাগ/মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, শিল্প খাত থেকে দুইজন এবং একজন স্বাধীন সদস্য। ন্যাশনাল সাইবার সিকিউরিটি কো-অর্ডিনেটরের অধীনে পরিচালিত এই কমিটি ‘বিশ্বস্ত উৎস-পণ্যের’ এর একটি তালিকা তৈরি করবে। দেশের টেলিকম কোম্পানিগুলো ওইসব বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠান থেকেই সরঞ্জাম কিনবে। তবে বর্তমানে যেসব সরঞ্জাম ব্যবহার করা হচ্ছে, তা বাধ্যতামূলক প্রতিস্থাপন করতে হবে না।
এ উদ্যোগ ‘আত্মনির্ভর ভারত’ উদ্যোগের গতি বাড়াবে বলে আশা করা হচ্ছে।
টেলিকম সরঞ্জাম বিক্রেতারা তাদের পণ্য বিক্রি বা লাইসেন্স করতে চাইলে অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। পুরো প্রক্রিয়াটি কীভাবে চলবে সে বিষয়ে একটি গাইডলাইন তৈরি করবেন সাইবার কো-অর্ডিনেটর। আর পুরো বিষয়টি দেখভাল করবে টেলিকম বিভাগ।
জাতীয় নিরাপত্তা নির্দেশিকায় চীন বা অন্য কোন দেশের কথা উল্লেখ করা হয়নি। কিন্তু লাদাখে তার সামরিক পদক্ষেপ এবং ভারতে চীনা টেলিকম সরঞ্জামের ব্যাপক ব্যবহারের কারণে, কর্তৃপক্ষ পরিষ্কারভাবে বিদ্যুৎ, ব্যাংকিং ও অর্থ, পরিবহনসহ ডিজিটাল অবকাঠামো সুরক্ষিত করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছে।
এই নির্দেশিকায় গত বছরের চার লাখ সাইবার ঘটনা এবং এ বছরের আগস্ট পর্যন্ত ভারতীয় সরকারি সংস্থা, বেসরকারি ব্যবসা এবং ভারতীয় নাগরিকদের ওপর সাত লাখ সাইবার হামলার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। নির্দেশিকায় উল্লেখ করা হয়েছে, সাইবার হামলার সম্মুখীন বিশ্বের শীর্ষ তিনটি দেশের মধ্যে ভারত অন্যতম। গত বছর ভারতে সাইবার অপরাধের কারণে ১ লাখ ২৪ হাজার কোটি টাকা লোকসান হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, সাইবার হামলা সাধারণত আন্তঃসংযুক্ত নেটওয়ার্ক এবং ডিভাইসের মাধ্যমে সংঘটিত হয়, এছাড়াও টেলিকম নেটওয়ার্কের আপোস করা হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার উপাদানের মাধ্যমে। এটি সতর্ক করে দিয়েছে যে ইন্টারনেট অফ থিংস ডিভাইসের ক্রমবর্ধমান ব্যবহারের সাথে সাথে ঝুঁকি বহুগুণ বৃদ্ধি পেতে থাকবে এবং ৫জি প্রযুক্তির আবির্ভাব টেলিকম নেটওয়ার্কের ফলে নিরাপত্তা উদ্বেগ আরও বাড়াবে। উপরন্তু, ইলেকট্রনিক উপাদান সহ সরবরাহ শৃঙ্খলের অখণ্ডতা বজায় রাখা, ম্যালওয়্যার সংক্রমণ থেকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।