ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪
আপডেট : ৮ নভেম্বর, ২০২০ ০৮:০৩

বাইডেন-কমলাকে অভিনন্দন ওবামার

অনলাইন ডেস্ক
বাইডেন-কমলাকে অভিনন্দন ওবামার

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় জো বাইডেনকে অভিনন্দন জানিয়েছেন বিশ্বনেতারা। দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে জো বাইডেনকে এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। অভিনন্দন জানিয়ে টুইটে ওবামা লেখেন, ‘বন্ধু ও যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও কমলা হ্যারিসকে অভিনন্দন। আমাদের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেনকে অভিনন্দন জানানোর চেয়ে গর্বের আর কিছু নেই।’

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পরাজিত করেছেন ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রার্থী জো বাইডেন। এদিকে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রচারণা শিবির ইঙ্গিত দিয়েছে, তাদের প্রার্থী পরাজয় স্বীকার করবেন না। শনিবারের (৭ নভেম্বর) ফলাফলে ১৯৯০ সালের পর ক্ষমতাসীন কোনো প্রেসিডেন্টের প্রথম হার এটি। নির্বাচনী ফল নির্ধারণকারী পেনসেলভেনিয়া জয়ের পর প্রেসিডেন্টের আসন নিশ্চিত করলেন বাইডেন।

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ২৭০ ইলেকটোরালের লক্ষ্যমাত্রা পার হয়ে ২৭৩টি ইলেক্টরাল কলেজ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন ডেমোক্র্যেট পার্টির প্রার্থী জো বাইডেন। বর্তমান ফল অনুযায়ী ট্রাম্প ২১৪টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট পেয়েছেন। গত দুদিনের বেশি সময় ধরে ২৬৪ ইলেকটোরাল কলেজ ভোট নিয়ে এগিয়েছিলেন বাইডেন। এগিয়ে ছিলেন নেভাদায়। সেখানে ৬টি ইলেকটোরাল ভোট রয়েছে। ধারণা করা হয়েছিল সেখানে ট্রাম্পকে হারিয়েছে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে যাবেন তিনি। কিন্তু সেখানকার ফলাফল এখনো আসেনি। জর্জিয়ায় ট্রাম্পকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যান বাইডেন। ইলেকটোরাল সংখ্যা ১৬টি। তারপর শনিবার পেনসিলভেনিয়ায় এগিয়ে যান বাইডেন। সেখানে ইলেকটোরাল কলেজ সংখ্যা ২০টি। শনিবার স্থানীয় সময় দুপুরে পেনসিলভেনিয়ার রাজ্যের ভোট গণনা শেষ হয়। তারপর বাইডেনের জয়ের আনঅফিসিয়াল তথ্য প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম। ভোট গণনা শেষ হওয়ার আগে নিজেকে জয়ী দাবি করেন ট্রাম্প। পরে ডেমোক্র্যাটদের বিরুদ্ধে কারচুপি, প্রতারণার অভিযোগ তোলেন। রিপাবলিকানরা মামলাও করেন বেশ কয়েটি রাজ্যে। ট্রাম্প এই নির্বাচনে অবৈধ ভোটের অভিযোগ করে শনিবার এক টুইটে ট্রাম্প লেখেন, 'মঙ্গলবার রাত ৮টার পর কয়েক হাজার অবৈধ ভোট পড়েছে, যা নির্বাচনী যুদ্ধের ক্ষেত্রগুলোর ফলাফল পরিবর্তন করেছে।'  তিনি আরও লেখেন, ‘নির্বাচনের দিন পেনসিলভানিয়া ও এরকম আরও অন্য রাজ্য, যেখানে খুব অল্প ব্যবধান ছিল, সেখানকার ফলাফল সম্পূর্ণ ও পুরোপুরিভাবে পাল্টে দেওয়া হয়েছে।’  

ট্রাম্পের এই টুইটের প্রতিক্রিয়ায় টুইটার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই অভিযোগ 'বিভ্রান্তিকর' ও 'বিতর্কিত' হতে পারে।  

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব পরিস্থিতির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এবার আগাম ভোট পড়েছিল প্রায় ১০ কোটি। এরপর গত মঙ্গলবার (৩ নভেম্বর) ভোটগ্রহণ হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে ইতিহাস গড়েছেন কমলা হ্যারিস। তিনিই দেশটির প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ ও এশীয় নারী যিনি যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদে অধিষ্ঠিত হতে যাচ্ছেন। কৃষ্ণাঙ্গ বাবা আর ভারতীয় মায়ের সন্তান হ্যারিস ক্যালিফোর্নিয়ার সেনেটর ছিলেন। ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য ডোমোক্র্যাটিক দল থেকে মনোনয়ন পাওয়ার দৌড়ে জো বাইডেনের কাছে হেরে যান তিনি। পরে বাইডেন তাকে রানিংমেট করেন। হ্যারিস যুক্ত হওয়ায় বাইডেনের নির্বাচনী প্রচারের গতি অনেক বেড়ে যায়। বিশেষ করে ভারতীয় আমেরিকানদের কাছে ডেমোক্র্যাটিক দলের জনপ্রিয়তা বাড়ে। আমেরিকার ইতিহাসে এ পর্যন্ত মাত্র দু’জন নারী ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে লড়েছেন। ২০০৮ সালে রিপাবলিকান পার্টির হয়ে সারা পলিন, ১৯৮৪ সালে ডেমোক্রেটিক পার্টির জেরালডিন ফেরারো। তাদের কেউই নির্বাচিত হতে পারেননি। আবার বাইডেন তার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে ক্ষমতা ছেড়ে দিলে প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট পাবে যুক্তরাষ্ট্র। তখন এটা আরও বড় রেকর্ড।

কমলা যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও অর্থনীতি পড়ার পর হেস্টিং কলেজ থেকে আইনে ডিগ্রি নেন। ১৯৯০ সালে তিনি ওকল্যান্ডে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে কাজ শুরু করেন। ২০০৩ সালে তিনি সান ফ্রান্সিসকোর অ্যাটর্নি জেনারেল নির্বাচিত হন; ২০১৪ সালে পুনঃনির্বাচিত হন। ২০১৬ সালের সিনেট নির্বাচনে লোরেটা সানচেজকে পরাজিত করে বারবারা বক্সারের উত্তরসূরী হন। এর ফলে তিনি ক্যালিফোর্নিয়ার তৃতীয় নারী সিনেটর হওয়ার পাশাপাশি দ্বিতীয় আফ্রিকান-মার্কিন নারী এবং প্রথম দক্ষিণ-এশীয় বংশোদ্ভূত মার্কিনী হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইনসভার উচ্চকক্ষ সিনেটে দায়িত্ব পালন করেন।

 

উপরে