করোনাই কাল হচ্ছে ট্রাম্পের!

আসছে মঙ্গলবারই চূড়ান্ত হচ্ছে পরের চার বছরের জন্য কে হচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট। দেশটির ইতিহাসের সবচেয়ে আলোচিত এ নির্বাচনে জিতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পই হোয়াইট হাইজে থাকছেন নাকি তাকে হটিয়ে সেখানকার নতুন বাসিন্দা হবেন ডেমোক্রেট জো বাইডেন তা ওইদিনই নির্ধারিত হবে। তবে এনবিসি-ওয়ালস্ট্রিট, সিএনএন-এসএসআরএস, রয়টার্স-ইপসস, সিএসবি নিউজ-ইউগভ, ইউএস টুডে, বিবিসিসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও সংস্থার জনমত জরিপ যে ফলাফল দেখাচ্ছে তাতে এবারের নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভরাডুবি হতে পারে। তার অবস্থা হতে পারে ১৯৮০ সালের নির্বাচনে ডেমোক্রেট প্রার্থী জিমি কার্টারের মতোই। অবশ্য ভোটের আগের বাকি দিনগুলোতে ট্রাম্প যদি নতুন কোনো ‘ষড়যন্ত্রতত্ত্বের’ হাজির করেন সে ক্ষেত্রে ইউটার্ন নিতে পারে জরিপের ফলাফল। তবে করোনাভাইরাস মহামারী, বর্ণবাদ, বেকারত্ব, জলবায়ুসহ বেশ কয়েকটি ইস্যুতে ট্রাম্প যেভাবে নিজেই ফাঁদে পড়েছেন তা থেকে উত্তরণের খুব একটা সুযোগ নেই বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
ট্রাম্পের পূর্বসূরি বারাক ওবামাও এবারের নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হয়ে উঠেছেন। বাইডেনের পক্ষে যেভাবে আটঘাট বেঁধে প্রচারে নেমেছেন তাও নজিরবিহীন। আগের কোনো সাবেক প্রেসিডেন্টই তার দলের প্রার্থীর জন্য এভাবে প্রচারে নামেননি। বিশেষ করে দেশটিতে যখন ৯০ লাখের মতো মানুষ আক্রান্ত হয়েছে, ২ লাখ ৩০ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে তখন তার আমলে করা অ্যাফোর্ডেবল কেয়ার অ্যাক্ট (ওবামা কেয়ার) হয়ে উঠেছে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। বারাক ওবামা নিজে যেমন নিম্ন আয়ের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা সহজলভ্য করার আইনটিকে চেপে ধরার বিষয়টি ভোটারদের সামনে নিয়ে আসছেন তেমনি বাইডেন-হ্যারিস বা হিলারির মতো ডেমোক্রেট নেতারাও সেটিকে ভোটারদের সামনে বড় করেই হাজির করছেন। ট্রাম্পের সঙ্গে শেষ বিতর্কেও বাইডেন ওবামা কেয়ারকে শক্তিশালী করে ওষুধের মূল্য কমানো ও জনগণের স্বাস্থ্যসেবা সুলভ করার পরিকল্পনার কথা বলেন।
এদিকে গত সোমবার মার্কিন সাময়িকী নিউ ইয়র্কারে ছাপা হওয়া বারাক ওবামার পরবর্তী বইয়ের কিছু অংশেও স্বাস্থ্যসেবার বিষয়টি নিয়ে লিখেছেন। সেখানে তিনি স্বাস্থ্যসেবা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকজন প্রেসিডেন্টের উদ্যোগের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন। আত্মজীবনীমূলক বইটিতে ওবামা কেয়ার ‘বাতিল’ করতে ট্রাম্প প্রশাসনের উদ্যোগের কথা যেমন থাকছে তেমনি থাকছে করোনাকালে ওবামা কেয়ার আইটি সক্রিয় রাখার প্রয়োজনীয়তার বিষয়টিও। ভোটে ঠিক আগের দিন ২ নভেম্বর সেটি বই আকারে প্রকাশিত হতে যাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে কম সময় পেলেও বইটি ভোটারদের মধ্যে প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছে সিএনএন।
এদিকে মহামারীর পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ভূমিকা নিয়েও তার পক্ষে-বিপক্ষে কথা হচ্ছে। ট্রাম্প যেসব ব্যবস্থা নিয়েছেন তার পক্ষে সমর্থন তুঙ্গে ওঠে মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময়ে। তখন তিনি সারা দেশে জরুরি অবস্থা জারি করেছিলেন এবং ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে রাজ্যগুলোর জন্য ঘোষণা করেছিলেন ৫ হাজার কোটি ডলার। জরিপ কোম্পানি ইপসসের হিসাব অনুসারে সে সময় ৫৫ শতাংশ আমেরিকান তার গৃহীত পদক্ষেপের প্রতি সমর্থন জানিয়েছিলেন। কিন্তু অক্টোবরে এসে সেই সমর্থন ৩০ শতাংশে কাছাকাছি ঠেকেছে। সর্বশেষ জরিপে দেখা যাচ্ছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সমর্থকরাও এখন তার নেওয়া পদক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। বিশেষ করে দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর পরিস্থিতি খারাপ হওয়ার পর ট্রাম্প প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে তারা সমালোচনায় সরব হয়েছে।
অনেকেই বলছেন, ট্রাম্প হয়তো এ কারণে করোনাভাইরাস সম্পর্কে তার বক্তব্য পরিবর্তন করছেন। এ অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে তিনি নিজে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর। হাসপাতাল থেকে ফিরেই ট্রাম্পে উপেক্ষা করতে শুরু করেন নানা স্বাস্থ্যবিধি।
মার্চে নিজ দলে এ ইস্যুতে ট্রাম্পের সমর্থন ছিল প্রায় ৯০ শতাংশের মতো। কিন্তু গতকাল ২৭ অক্টোবরের হিসাব দেখাচ্ছে তা ৭৫ শতাংশে নেমে এসেছে। শুরুর দিকে ডেমোক্রেট দলেরও অনেকে ইস্যুটিতে ট্রাম্পকে সমর্থন দিয়েছিলেন। মার্চে করোনা মোকাবিলায় নেওয়া ট্রাম্পের পদক্ষেপ সমর্থন পেয়েছিল প্রায় ৩০ শতাংশ ডেমোক্রেটদের। কিন্তু গতকাল তা ১০ শতাংশের কাছাকাছি নেমে এসেছে।
এছাড়া করোনা ইস্যুতে ট্রাম্প হোয়াইট হাউজের বিশেষ টাস্কফোর্সের প্রধান ও যুক্তরাষ্ট্রের সংক্রামকব্যাধি বিশেষজ্ঞ অ্যান্থনি ফাউসিকে মতামত উপেক্ষ করে এবং তাকে নানাভাবে অপদস্থ করেও কিছুটা চাপে পড়েছেন ট্রাম্প। সপ্তাহখানেক আগেই ফাউসিকে পাগল আখ্যা দেন ট্রাম্প।
এদিকে গত সোমবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের চিফ অব স্টাফ মার্ক মেডৌস করোনাভাইরাস মহামারী নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রশাসনের অপারগতার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, তারা বরং এ রোগের প্রতিকারের দিকটিতেই বেশি মনোনিবেশ করছেন। মেডৌস সিএনএনের ‘স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন’ ভাষণে বলেন, আমরা মহামারীকে নিয়ন্ত্রণে আনতে যাব না। বরং আমরা টিকা, থেরাপি চিকিৎসা এবং রোগ প্রশমনের অন্যান্য ব্যবস্থা হাতের নাগালে রাখব।
যুক্তরাষ্ট্র কেন এ মহামারী নিয়ন্ত্রণে আনার পথে যাচ্ছে না এ প্রশ্নের জাবাবে মেডৌস বলেন, কারণ এ ভাইরাস ফ্লুর মতোই মারাত্মক সংক্রামক। যদিও আমরা এটা নিয়ন্ত্রণের যথেষ্ট চেষ্টা করছি। তবে ঠিক কী করলে এ রোগের প্রশমন হবে আমাদের এখন সেদিকে মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন। এটা হতে পারে ওষুধ বা টিকা বা কোনো ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি। এ রোগে আক্রান্ত হয়ে আর কোনো মানুষ মারা যাবে না, আমাদের এখন সেটিই নিশ্চিত করতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটের মাত্র ছয় দিন আগে হু হু করে বাড়তে থাকা করোনাভাইরাস সংক্রমণের মধ্যে মেডৌসের এ বক্তব্য যে মহামারী নিয়ন্ত্রণে ট্রাম্প প্রশাসনের ব্যর্থতারই স্বীকারোক্তি তা দিনের আলোর মতোই পরিষ্কার।
করোনাভাইরাসের পাশাপাশি এবারের নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হয়ে উঠেছে বর্ণবাদ ও সাম্প্রদায়িক ইস্যুও। চলতি বছরের মে মাসে পুলিশের হেফাজতে জর্জ ফ্লয়েড নামে এক কৃষ্ণাঙ্গের মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে যুক্তরাষ্ট্র। সেই আন্দোলনের ঢেউ কাঁপিয়ে দেয় সিডনি থেকে শুরু করে লন্ডনের রাজপথ। অথচ ট্রাম্প তার মধ্যেই শে^তাঙ্গদের পক্ষে সাফাই গেয়ে বর্ণবাদী বক্তব্য দিয়েছেন।
তবে এ জায়গায় এগিয়ে গেছেন বাইডেন। নিজে রানিং মেট হিসেবে বেছে নিয়েছেন কৃষ্ণাঙ্গ ভারতীয় কমলা হ্যারিসকে। তাকে যেদিন রানিং মেট হিসেবে ঘোষণা করা হয় সেদিনও ট্রাম্প তার সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ বর্ণবাদী বক্তব্য দিয়েছেন। এর প্রভাবে কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে দেখা গেছে আগাম ভোট দিতে আসা ভোটারদের মধ্যে। কৃষ্ণাঙ্গদের বেশিরভাগই এক প্রকার প্রকাশ্যেই বাইডেনকে ভোট দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমকে।
এবার নির্বাচনের ফলাফলে ভূমিকা থাকবে ৩৫ লাখের বেশি মুসলিম ভোটারেরও। গত সপ্তাহে কাতারভিত্তিক আল-জাজিরা এক বিশেষ প্রতিবেদনে জানায়, সংখ্যায় খুব বেশি না হলেও, যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ব্যাটল গ্রাউন্ড হিসেবে পরিচিতি অঙ্গরাজ্যগুলোর ফল নির্ধারণে বড় ভূমিকা পালন করতে পারে মুসলিম ভোট। মিশিগান, ফ্লোরিডা, উইসকনসিন ও পেনসিলভানিয়ার মতো সুইং স্টেটে জনঘনত্ব একটি বড় বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব অঙ্গরাজ্যে মুসলিমদের ভোট একটি বড় প্রভাবক হয়ে উঠতে পারে।
২০১৭ সালের ২০ জানুয়ারি অভিষেকের পরপর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে কয়েকটি নির্বাহী আদেশ দেন, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কয়েকটি দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী নেওয়া তার এ পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের ভেতরে-বাইরে থাকা মুসলিম সম্প্রদায়কে ক্ষুব্ধ করে। সুপ্রিম কোর্ট ট্রাম্প আরোপিত এ ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার একটি পরিমার্জিত সংস্করণকে অনুমোদন দেয়, যার সরাসরি প্রভাব পড়ে মুসলিম জনগোষ্ঠীর ওপর।
নির্বাচনের ফলে ভূমিকা রাখবে জলবায়ু ইস্যুও। কারণ ভোটের ফলাফলের ওপর নির্ভর করছে কার্বন নিঃসরণ কমানোর বৈশ্বিক লড়াইয়ের ভবিষ্যৎ। গত চার বছরে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জলবায়ু নিয়ে যে ধরনের নেতিবাচক একাধিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তাতে বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, তিনি পুনর্নির্বাচিত হলে উষ্ণতা বৃদ্ধির বিপর্যয় রোধ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে। ২০১৬ সালের নির্বাচনী প্রচারের সময় থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত জলবায়ু পরিবর্তনের সংকটকে ট্রাম্প ‘ভুয়া সমস্যা’ হিসেবে অভিহিত করে এসেছেন। তার চার বছরের শাসনকালে জীবাশ্ম জ¦ালানির ব্যবহার পূর্বসূরি বারাক ওমাবার সময়ের তুলনায় দ্বিগুণ বেড়েছে। এতে ট্রাম্পের প্রত্যক্ষ সমর্থন ছিল। পরিবেশ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বরাবরের অবস্থান থেকেও সরে গেছেন তিনি।
অন্যদিকে জো বাইডেন ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি জয়লাভ করলে দায়িত্ব নেওয়ার পর তার প্রথম কাজই হবে জলবায়ু চুক্তিতে ফিরে যাওয়া। এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তন রোধে বিজ্ঞানীদের দেওয়া পরামর্শ মেনে ব্যবস্থা নেবেন তিনি। এরই মধ্যে ৩ ট্রিলিয়ন অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন বাইডেন।
মহামারী করোনার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে হু হু করে বাড়ছিল বেকারত্বের হার। চলতি বছরের আট মাসে যুক্তরাষ্ট্রে চাকরি হারিয়েছেন ২০ লাখ মার্কিনি। পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা যায়, ট্রাম্পের সময়কালের বেকারত্বের হার অন্য প্রেসিডেন্টের সময়ের তুলনায় বেশি।
২০১৭ সালে ট্রাম্প দায়িত্ব গ্রহণের সময় যুক্তরাষ্ট্রের বেকারত্ব হার ছিল মাত্র ৪ দশমিক ৭ শতাংশ। এরপর ধীরগতিতে বাড়তে থাকে বেকারত্বের হার। করোনা মহামারীর লকডাউনে যা ১৪ দশমিক ৭ শতাংশে পৌঁছায়। এরপর আবার কমতে কমতে আগস্টে প্রথমবারের মতো ৮ দশমিক ৪ শতাংশ হয়েছে বেকারত্ব হার। দেশটির শ্রম অধিদপ্তর বলছে, ট্রাম্প দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের বেকারত্ব হার সর্বোচ্চ বেড়েছে। এর মধ্যে কয়েক লাখ মানুষ চাকরি ফিরে পেলেও সেই সংখ্যা তুলনামূলক খুবই কম। তাই এ বিষয়টিও ট্রাম্পের জন্য বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করা হচ্ছে।
উল্লিখিত বিষয়গুলো ছাড়াও এবারের নির্বাচনে ট্রাম্প আমলের সামগ্রিক সাফল্য ও ব্যর্থতা, সুপ্রিম কোর্ট, অর্থনীতি, সহিংসতা এবং নির্বাচনের বিশুদ্ধতার বিষয়গুলোতে নজর রাখছেন ভোটাররা। ভোট দেওয়ার আগে বিষয়গুলো ভোটারদের নজরে থাকবে বলে মনে করছে সিএনএন।
এবার ট্রাম্প ও বাইডেন যে দুটি বিতর্কে অংশ নিয়েছেন তার দুটিতেই বাইডেন জয়ী হয়েছেন বলে জরিপে দেখা গেছে। প্রথম বিতর্কে সাফল্য ও ব্যর্থতার খতিয়ান, সুপ্রিম কোর্ট, করোনাভাইরাস মহামারী, অর্থনীতি, বর্ণবৈষম্য ও সহিংসতা এবং নির্বাচনের বিশুদ্ধতার বিষয়গুলো আলোচ্য ছিল। বিতর্কে সিএনএনের জরিপে ৬০ শতাংশের দৃষ্টিতে বাইডেন আর ২৮ শতাংশের দৃষ্টিতে ট্রাম্প জয়ী হয়েছেন। সিবিএসের জরিপে ৪৮ শতাংশের দৃষ্টিতে বাইডেন, ৪১ শতাংশের দৃষ্টিতে ট্রাম্প জয়ী।
শেষ বিতর্কেও করোনাভাইরাস নিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছেন দুই প্রার্থী। সিএনএন তাদের জরিপের ভিত্তিতে জানিয়েছে, দ্বিতীয় ও শেষ বিতর্কে জয়লাভ করেছেন জো বাইডেন। জরিপ অনুযায়ী, ৫৩ শতাংশ দর্শক বলেছেন, শেষ বিতর্কে বাইডেন জয়লাভ করেছেন। অন্যদিকে ৩৯ শতাংশ দর্শক বলেছেন, এ বিতর্কে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জিতেছেন। সিএনএন ছাড়াও আরও দুটি জরিপে বিতর্কে বাইডেন জয়ী হয়েছেন বলে দর্শকরা মত দিয়েছেন।
এদিকে বিবিসি জানাচ্ছে, রয়টার্স-ইপসসের সর্বশেষ জরিপে ট্রাম্পের চেয়ে ১০ পয়েন্টে এগিয়ে রয়েছেন বাইডেন। ওই জরিপে বাইডেন ৫২ শতাংশ সমর্থন পাচ্ছেন আর ট্রাম্প পাচ্ছেন ৪২ শতাংশ। এছাড়া এনবিসি-ওয়ালস্ট্রিট, সিএনএন-এসএসআরএস, সিএসবি নিউজ-ইউগভ, ইউএস টুডে, বিবিসিসহ আরও কয়েকটি জরিপেও বাইডেন গড়ে ৯ থেকে ১০ পয়েন্ট এগিয়ে আছেন ট্রাম্প থেকে। সবগুলোর জরিপের এক গড় সমম্বয় থেকে দেখা যাচ্ছে বাইডেন মিশিগান, পেনসিলভানিয়া এবং উইসকনসিন রাজ্যে এগিয়ে আছেন। এসব রাজ্যে ২০১৬ সালের নির্বাচনে ট্রাম্প বিজয়ী হয়েছিলেন।
এছাড়া ব্যাটলগ্রাউন্ড স্টেটগুলোতে ২৭ অক্টোবরের হালনাগাদ তথ্য বলছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প যেসব রাজ্যে এগিয়ে আছেন সেগুলো হচ্ছেÑ জর্জিয়া, আইওয়া ও টেক্সাস। কিন্তু এখানে ব্যবধান খুব সামান্য। গত নির্বাচনেও এসব রাজ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ী হয়েছিলেন। কিন্তু ভোটের ব্যবধান ছিল আরও অনেক বেশি।
অ্যারিজোনা, ফ্লোরিডা, মিশিগান, মিনেসোটা, নেভাদা, নিউ হ্যাম্পশায়ার, নর্থ ক্যারোলাইনা, ওহাইও, পেনসিলভানিয়া, ভার্জিনিয়া এবং উইসকনসিনে জো বাইডেন এগিয়ে আছেন। বাইডেনের জন্যে ভালো খবর হচ্ছে এসব রাজ্যে তিনি বড় রকমের ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন। শুধু তাই নয়, ২০১৬ সালের নির্বাচনে এসব রাজ্যের অধিকাংশগুলোতেই ব্যাপক ভোটে জয়ী হয়েছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু এসব রাজ্যে এখন এগিয়ে গেছেন বাইডেন। ট্রাম্পের জন্য এখন এটাই দুশ্চিন্তার কারণ।