পথে নেমে ভোটের ঘণ্টা বাজিয়ে দিলেন মমতা
লক্ষ্য ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচন। নিজের দূর্গ ধরে রাখতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই শনিবার পথে নামলেন তৃণমূল নেত্রী ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।
বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশের হাথরসের ধর্ষণকাণ্ডকে সামনে রেখে এ দিন গোটা রাজ্যেই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে তৃণমূল কংগ্রেস। কলকাতায় নেতৃত্ব দেন স্বয়ং মমতা।
বছরের শুরুতেই পশ্চিমবঙ্গের ভোট। ইতোমধ্যেই শাসক দল তৃণমূলকে বড় চ্যালেঞ্জ দিয়েছে বিজেপি। কোভিড-পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক কর্মসূচি থেকে বিরত ছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা। ফের নামলেন পথে।
উত্তরপ্রদেশের হাথরসের ধর্ষণকাণ্ডে নিহতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে নিগৃহীত হন তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ওব্রায়েন। মূলত তারই প্রতিবাদে এ দিন কলকাতার বিড়লা তারামন্ডল থেকে ময়দানে মহাত্মা গান্ধী মূর্তির পাদদেশ পর্যন্ত হাতে কালো কাপড় নিয়ে মিছিল করেন মমতা।
কয়েকদিন আগে কংগ্রেসের সাবেক সভাপতি রাহুল গান্ধীও হাথরস যেতে গিয়ে উত্তর প্রদেশ পুলিশের নিগ্রহের শিকার হন। কংগ্রেসও শুক্রবার দেশ জুড়ে বিক্ষোভ করে। তৃণমূলের তরফ থেকে আগামী দশদিন ধরে বিজেপির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
এ দিন মিছিলেন পর বিক্ষোভ সমাবেশে বিজেপির বিরুদ্ধে কড়া ভাষায় আক্রমণ করেন মমতা। তিনি বলেন, 'বিজেপিই সবচেয়ে বড় অতিমারি'। যেকোনো মূল্যে বিজেপি রুখতে হবে বলে দলীয় কর্মীদের নির্দেশ দেন তিনি।
হাথরসের ঘটনা ছাড়াও বিজেপির বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ তোলেন। তার মতে, দেশে নৈরাজ্য চালাচ্ছে বিজেপি। কেন্দ্রীয় কৃষি বিলেরও বিরোধিতা করেন তিনি। জানান, আসন্ন দুর্গা পূজা পর্যন্ত তৃণমূল স্থানীয়স্তরে নিয়মিত বিক্ষোভ কর্মসূচি করবে।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'করোনা কমিউনিটি স্প্রেড করেছে। এতো নিরাপত্তা নিয়েও করোনা আটকানো যাচ্ছে না।' বিজেপি করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও রাজনৈতিক কর্মসূচি চালাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বসে নেই বিজেপিও। রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষসহ পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি নেতারা দিনভর একগুচ্ছ রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করেছে শনিবার। কৃষি বিলের সমর্থনে তাদের কর্মসূচিতে অবশ্য হাথরস নিয়ে বিরোধীদের বিরুদ্ধে 'মিথ্যা রাজনীতির’ অভিযোগ করা হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গে আগামী বছর এপ্রিল-মে মাসে ভোট। এবারই প্রথম বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের মূল লড়াই হতে চলেছে। তৃণমূলকে ভাঙিয়ে বিজেপিই এখন প্রধান বিরোধী শক্তি। শক্ত চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে তৃণমূলকে। মমতাও লড়াকু নেত্রী বলেই পরিচিত। এখন থেকেই পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক উত্তাপ টের পাওয়া যাচ্ছে।