ঢাকা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪
আপডেট : ৩ অক্টোবর, ২০২০ ১৬:৩৯

ট্রাম্প দায়িত্ব পালনে অক্ষমতার কথা জানালে দায়িত্ব পাবেন পেন্স

অনলাইন ডেস্ক
ট্রাম্প দায়িত্ব পালনে অক্ষমতার কথা জানালে দায়িত্ব পাবেন পেন্স

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এই অবস্থায় চিকিৎসা-সংক্রান্ত কোনো কারণে দায়িত্ব পালনে ট্রাম্প অক্ষম হয়ে পড়লে, সাময়িক দায়িত্ব যেতে পারে ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের কাছে। এর আগে দুজন মার্কিন প্রেসিডেন্টের এমন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছিল।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন সংবিধানের ২৫তম সংশোধনীর সেকশন-৩ অনুযায়ী ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজের অক্ষমতার কথা লিখিতভাবে জানিয়ে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পেতে পারেন। ১৯৬৩ সালে জন এফ কেনেডি হত্যার প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে ১৯৬৭ সালে এই সংশোধনীটি করা হয়েছিল।

ডোনাল্ড ট্রাম্প এমন কোনো ঘোষণা দিলে মাইক পেন্স ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। যদিও ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবেই গণ্য হবেন। নিজের পূর্ণ ক্ষমতা ফেরত পেতে হলে প্রেসিডেন্টকে আবার লিখিতভাবে তা জানাতে হবে। রয়টার্স জানায়, একই সংশোধনীর চতুর্থ সেকশনে আরেকটি বিধান রয়েছে, যেখানে মন্ত্রিসভা যদি মনে করে প্রেসিডেন্ট দায়িত্ব পালনে সক্ষম নন, তবে তারা তাঁকে সাময়িকভাবে অব্যাহতি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তবে এই বিধান কখনো প্রয়োগ করা হয়নি।

এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের দুজন প্রেসিডেন্ট এই সংশোধনী বলে তাঁর ভাইস প্রেসিডেন্টের কাছ সাময়িকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছিলেন। রয়টার্স জানায়, ১৯৮৫ সালের ১৩ জুলাই তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান কিছু সময়ের জন্য তাঁর ভাইস প্রেসিডেন্ট এইচ ডব্লিউ বুশের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছিলেন। সেকশন-৩-এর কথা উল্লেখ না করলেও চিকিৎসা-সংক্রান্ত কারণে তিনি লিখিতভাবেই এ দায়িত্ব হস্তান্তর করেন। ওই দিন আট ঘণ্টার জন্য প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন এইচ ডব্লিউ বুশ। পরে রিগ্যান আবার লিখিতভাবে নিজের সক্ষমতার কথা জানালে তিনি দায়িত্বে ফিরে আসেন।

দ্বিতীয় ঘটনাটি বেশি আগের নয়। ২০০২ সালের ২৯ জুন চিকিৎসা-সংক্রান্ত কারণে ভাইস প্রেসিডেন্ট ডিক চেনির কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেছিলেন তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ। ওই দিন দুই ঘণ্টার কিছু বেশি সময় ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন ডিক চেনি। এর পর ২০০৭ সালের ২১ জুলাই জর্জ বুশ আবারও কিছু সময়ের জন্য ডিক চেনির দায়িত্ব হস্তান্তর করেছিলেন। দুবারই তিনি ২৫তম সংশোধনীর সেকশন-৩ এর কথা উল্লেখ করে লিখিতভাবে দায়িত্ব হস্তান্তর করেছিলেন।

রয়টার্স জানায়, সেকশন-৪ অনুযায়ী একবার দায়িত্ব হস্তান্তরিত হলে ফিরে পাওয়াটা সহজ নয়। এই অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, ভাইস প্রেসিডেন্ট ও মন্ত্রিসভা অনুরূপ কোনো সত্বার সংখ্যাগরিষ্ঠ যদি মনে করে প্রেসিডেন্ট দায়িত্ব পালনে সক্ষম নন, তবে তারা বিষয়টি সম্পর্কে কংগ্রেসের উভয় কক্ষকে অবহিত করবে এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিয়ে নেবেন। প্রেসিডেন্ট নিজেকে সক্ষম মনে করলে একইভাবে তিনি সে সম্পর্কে কংগ্রেসের উভয় পক্ষকে অবহিত করবেন। তখন ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য সভায় বাসবে উভয় কক্ষ। প্রতিনিধি পরিষদ ও সিনেটের দুই-তৃতীয়াংশ যদি মনে করে, প্রেসিডেন্টের দাবি সঠিক, তবে তিনি তাঁর দায়িত্ব ফিরে পাবেন। না হলে একজন পূর্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্টকে পাওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে পরবর্তী নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। সে পর্যন্ত দায়িত্বে থাকবেন ভাইস প্রেসিডেন্টই।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবরে মার্কিন সংবাদমাধ্যমে এখন সংবিধানের এই ২৫তম সংশোধনী নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। তবে যত দূর খবর পাওয়া গেছে, প্রেসিডেন্ট ও ফার্স্ট লেডি দুজনই বেশ সুস্থ আছেন।

সূত্র: প্রথম আলো

উপরে