ঢাকা, বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪
আপডেট : ১ অক্টোবর, ২০২০ ০০:৪৩

রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলায় ওআইসির সহায়তা চাইলেন রাষ্ট্রদূত জাবেদ পাটোয়ারী

অনলাইন ডেস্ক
রোহিঙ্গা গণহত্যা মামলায় ওআইসির সহায়তা চাইলেন রাষ্ট্রদূত জাবেদ পাটোয়ারী

আইসিজেতে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত গণহত্যার মামলা পরিচালনায় ওআইসি সদস্য রাষ্ট্রের অধিকতর সহায়তা চাইলেন সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী। আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের মামলা পরিচালনার জন্য ওআইসি ও এর সদস্য দেশগুলোর কাছে তহবিল গঠনে সহায়তা চাইলেন সৌদি আরবে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ও ওআইসিতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম (বার)।

বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রিয়াদে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য জবাবদিহিতা সম্পর্কিত ওআইসির এ্যাডহক মন্ত্রিসভা কমিটি আজ এক পরামর্শমূলক সভায় রাষ্ট্রদূত এ আহবান জানান। এতে বাংলাদেশ, তুরস্ক, গাম্বিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, নাইজেরিয়া, সুদান, ও জিবুতির স্থায়ী প্রতিনিধিগন এবং ওআইসির মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধি অংশগ্রহন করেন। রাষ্ট্রদূত ওআইসির মহাসচিবকে আইসিজে মামলায় রোহিঙ্গাদের সহায়তা প্রদানের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী রোহিঙ্গাদের দুর্দশা লাঘবে সকলের সহায়তা কামনা করেন। তিনি বলেন অনির্দিষ্টকালের জন্য রোহিঙ্গাদের এ সমস্যা চলতে পারেনা এবং গণহত্যার দায়ে দোষীরা শাস্তি এড়াতে পারেনা।   সভায় ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) এর মহাসচিব ড. ইউসুফ আল ওথাইমিন রোহিঙ্গাদের দুর্দশা বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সংবেদনশীল করতে ওআইসির গৃহীত পদক্ষেপগুলি পর্যালোচনা করেন যা রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রেক্ষিতে ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করবে বিশেষতঃ মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে দায়ের করা মামলার কাঠামোর মধ্যে। ওআইসি মহাসচিব রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দেয়া ও তাঁদের নিরাপদ প্রত্যাবসনের জন্য অগ্রণী ভূমিকা পালন করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রশংসা করেন।

মহাসচিব ড. ইউসুফ আল ওথাইমিন আইসিজে তে মামলা পরিচালনা করার ব্যায়ভার বহন করার জন্য যারা ইতিমধ্যে তহবিলে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছেন তাঁদের প্রশংসা করেন। তিনি অন্যান্য সদস্য দেশগুলোকে মানবাধিকার রক্ষায় এই মামলায় সহায়তা করার আহবান জানান। সভায় অংশগ্রহণকারীরা মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে আলোচনা করেন এবং সমর্থনের বিষয়ে একমত প্রকাশ করেন।

এর আগে ওআইসি মহাসচিব এর কাছে ক্রেডেনশিয়াল পেশ করেন রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী। সৌদি আরবে নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী বিপিএম (বার) ২৮ সেপ্টেম্বর ওআইসি মহাসচিব ড. ইউসুফ বিন আহমেদ আল ওথাইমিন এর কাছে তাঁর ক্রেডেনশিয়াল পেশ করেন। রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী ওআইসির বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করবেন।

এ সময় রাষ্ট্রদূত ওআইসির মহাসচিবের সাথে দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। বাংলাদেশের সাথে সংস্থাটির আরও সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। রাষ্ট্রদূত রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত গণহত্যার জন্য আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে চলমান মামলার বিষয় উল্লেখ করলে মহাসচিব মামলার তহবিল বাড়াতে সম্পূর্ণ সহায়তা প্রদান ও বাংলাদেশকে এ বিষয়ে রাজনৈতিক ও নৈতিক সহায়তা প্রদানের আশ্বাস প্রদান করেন। রাষ্ট্রদূত রোহিঙ্গাদের দ্রুত মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেয়ার বিষয়ে ওআইসির পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য মহাসচিবকে অনুরোধ করেন।

বাংলাদেশকে ওআইসির সক্রিয় সদস্য হিসাবে উল্লেখ করে মহাসচিব বাংলাদেশে বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুরোধ করেন যা সংস্থাটির সাথে বাংলাদেশের সম্পৃক্ততা বাড়াতে সাহায্য করবে। এছাড়া বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়সমুহে ওআইসির সদস্যভুক্ত নাগরিকদের বৃত্তির তথ্য প্রদানের অনুরোধ করা হয় যা ওআইসির ডাটাবেজে প্রকাশ করা হবে।

বাংলাদেশকে নারীর ক্ষমতায়নের রোল মডেল হিসাবে প্রশংসা করে মহাসচিব বলেন, এ সফলতা অর্জনে বাংলাদেশের জন্য ওআইসি গর্বিত। বৈঠকে মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের জন্মভুমিতে মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তন ও আইসিজেতে রোহিঙ্গাদের গণহত্যার বিরুদ্ধে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য ওআইসি সর্বদা বাংলাদেশের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন মহাসচিব।

উপরে