এবার মাস্ক পরার আহ্বান ট্রাম্পের
করোনার মহামারীর শুরু থেকে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শের তোয়াক্কা না করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গোঁ ধরেছিলেন যে তিনি কিছুতেই মাস্ক পরবেন না। অবশেষে সম্প্রতি মাস্ক পরতে শুরু করলেও তিনি গত সপ্তাহে বলেন, আমেরিকান জনগণকে মাস্ক পরার নির্দেশ তিনি কিছুতেই দেবেন না। তবে সপ্তাহ পার হতে না হতে সেই অবস্থানও বদলেছেন তিনি। এবার আহ্বান জানালেন, সকল আমেরিকান যেন মাস্ক পরেন। কারণ, এটা তাদের মধ্যে একটি ‘প্রভাব’ ফেলবে এবং ‘দেশপ্রেম’ ফুটে উঠবে।
মঙ্গলবার এক ব্রিফিংয়ে ট্রাম্প জনগণকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, মহামারী ভালো দিকে যাওয়ার আগে আরো খারাপ অবস্থায় পতিত হতে পারে। যদিও ব্রিফিংকালে তিনি মাস্ক পরেননি, যাকে একটি সময় অস্বাস্থ্যকর বলে অবজ্ঞা করেছেন তিনি।
ভাইরাসটি যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে তা-ব চালাচ্ছে। জনস হপকিন্স ইউনিভার্টিসির তথ্যমতে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৩৯ লাখ মানুষ কভিডে সংক্রমিত হয়েছেন, মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ৪১ হাজার ৯৯২ জনের। এটি যেন কমার কোনো লক্ষণই নেই। এমন পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের উপদেষ্টা ও সহযোগীরাই তার ওপর চাপ সৃষ্টি করেছেন, যেন তিনি নিয়মকানুন পালনে জনগনকে উৎসাহিত করেন।
দেশের শীর্ষ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ড. অ্যান্থনি ফাউসিসহ অন্যদের সঙ্গে এতদিন একমত পোষণ না করলেও এবার তিনি স্বীকার করতে বাধ্য হলেন, ‘এটা (ভাইরাস মহমারী) ভালো হওয়ার আগে সম্ভবত দুর্ভাগ্যজনকভাবে আরো খারাপ অবস্থায় পতিত হবে। এ বিষয়টি নিয়ে এভাবে কথা বলাটা আমি মোটেই পছন্দ করি না, কিন্তু এখন সেটাই ঘটছে।’
খেয়ালী চরিত্রের এই প্রেসিডেন্ট আরো বলেন, ‘আমরা প্রত্যেককে বলছি, যখন সামাজিকভাবে দূরত্বে থাকতে পারবেন না, তখন মাস্ক পরুন, মাস্ক নিন। আপনি মাস্ক পরবেন কি পরবেন না, তার একটি প্রভাব আছে,একটি ফল আছে। আমাদের যা কিছু করা প্রয়োজন সবই করতে হবে।’
কভিড-১৯কে একটি সময় ‘চায়না ভাইরাস’ নামে ডাকা ট্রাম্প মঙ্গলবারের ব্রিফিংয়ের সময় পকেট থেকে একটি মাস্ক বের করলেও তা পরেননি। সংক্ষিপ্ত এই ব্রিফিংয়ে তিনি স্বাস্থ্য বিষয়ক কোনো বিশেষজ্ঞকেও সঙ্গে আনেননি।
স্বাস্থ্য বিধি নিয়ে তিনি আরো বলেন, ‘আমেরিকান মানুষকে আমরা মাস্ক পরার অনুরোধ করছি, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন, সুযোগ এলেই আপনার হাত ধুয়ে নিন। তরুণ আমেরিকানদের বলছি, তারা যেন ভরা পানশালা ও অন্য জনাকীর্ণ এলাকা এড়িয়ে চলেন। নিরাপদ থাকুন, সতর্ক থাকুন।’
নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি লড়বেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেনের সঙ্গে। জরিপে দেখা গেছে, পুনর্নির্বাচিত হওয়ার এ মিশনে কঠিন পরীক্ষার মুখে পড়তে যাচ্ছেন ট্রাম্প। মহামারীতে তিনি আমেরিকানদের রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন বাইডেন। সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘তিনি আপনাদের অব্যাহতি দিয়েছেন, তিনি দেশকে অব্যাহতি দিয়েছেন।’
ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের জন্যই হয়তো স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে নিজের মত পাল্টেছেন ট্রাম্প।
সূত্র: বিবিসি ও সিএনএন