ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪
আপডেট : ২১ জুলাই, ২০২০ ১৮:১৩

প্রতি পাঁচজনে একজন বেকার, নেতানিয়াহুকে আর চায় না ইসরায়েলিরা

অনলাইন ডেস্ক
প্রতি পাঁচজনে একজন বেকার, নেতানিয়াহুকে আর চায় না ইসরায়েলিরা

করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে নাকানিচুবানি খাওয়া সরকারের বিরুদ্ধে সোচ্চার ইসরায়েলের নাগরিকরা৷ প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভে উত্তাল রাজপথ৷

টানা ২ ঘণ্টা গাড়ি চালিয়ে উত্তর ইসরায়েলের শহর পারডেস হানা থেকে তেলআবিবে পৌঁছেন ম্যাগি শাহার৷ কিন্তু তাঁর কোনো ক্লান্তি নেই৷ এতদূর এসেই সোজা যোগ দিলেন নেতানিয়াহুর বাসভবনের সামনে চলমান প্রতিবাদে৷

শাহার বলেন, 'বর্তমান পরিস্থিতি খুবই খারাপ৷ আমি জানি না কোনো বদল আসবে কি না; কিন্তু চুপ থাকা এখন অসম্ভব আমার পক্ষে৷ আমাদের প্রধানমন্ত্রীকেই দেখুন৷ তাঁর বিরুদ্ধে জমা অভিযোগের ফলে বিচারাধীন তিনি৷ কিন্তু তা-ও অনায়াসে ক্ষমতায় বসে আছেন৷ তারপর করোনা সংক্রমণের কথা ভাবুন৷ কোনো কিছুই নিয়ন্ত্রণে নেই৷ একদিকে আছেন নেতানিয়াহু ও তাঁর বন্ধুরা, আর অন্যদিকে আমরা সাধারণ জনগণ৷'

সবাই চান সরে যাক নেতানিয়াহু

দুই সপ্তাহ ধরে সমাজের বিভিন্ন অংশ থেকে উঠে আসা মানুষ তাদের পেশা ও আর্থিক সামর্থ্য-নির্বিশেষে রাস্তায় নেমেছে৷ ইসরায়েলের রাজধানী তেলআবিবের রাজপথ মুখর হয়ে আছে করোনা সংক্রমণ রোধে সরকারের ব্যর্থতার পাশাপাশি আর্থিক মন্দার বিরুদ্ধেও৷ সোমবার, এই প্রতিবাদে শিক্ষক, ছোট ব্যবসায়ী, সমাজকর্মীদের পাশাপাশি নার্সরাও যোগ দেন৷

প্রতিবাদী জনতার মত, বর্তমান সরকার নাগরিকদের অশ্রদ্ধা করছে৷ সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাই সরে যাক, তা না চাইলেও নেতানিয়াহুকে আর রাষ্ট্রনেতা হিসেবে দেখতে চায় না তারা৷

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিধ্বস্ত ইসরায়েল

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংক্রমণের শুরুর দিকে যদিও প্রশংসিত হয় নেতানিয়াহুর কড়া হাতে সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত; কিন্তু পরে যখন এপ্রিলের শেষের দিকে মন্দা গ্রাস করতে থাকে দেশের অর্থনীতিকে, সমালোচনার মুখে পড়তে শুরু করেন নেতানিয়াহু৷ মে মাসের শুরুতে সংক্রমণ কমে এলে বিধি-নিষেধ কিছুটা শিথিলও করা হয়৷ কিন্তু এর দুই মাস পর, বর্তমানে দ্বিতীয় দফার সংক্রমণের মুখোমুখি ইসরায়েল৷ এখন দিনে প্রায় ২০০০ নতুন সংক্রমণ দেখা যাচ্ছে সেখানে৷

স্বাস্থ্য ও অর্থনীতি বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, দূরদৃষ্টির অভাব, কর্তৃপক্ষের তাড়াহুড়া করে নেওয়া সিদ্ধান্ত ও স্বচ্ছতার অভাবের কারণেই এই পরিস্থিতি৷ অন্যদিকে আরো খারাপ হতে থাকা কর্মসংস্থানের হার মানুষের ক্ষোভ বাড়াচ্ছে৷ প্রতি পাঁচজনে একজন ইসরায়েলি বর্তমানে বেকার।

কিন্তু এত কিছুর পরও বিচারাধীন মামলার বিষয়ে নির্লিপ্ত প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু৷ গত রবিবার তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের একটি মামলা আদালতে ওঠার দিনেও তাঁকে হাজিরা দিতে দেখা যায়নি৷

তাঁর বিরুদ্ধে জনরোষ কিছুটা ঠেকাতে নেতানিয়াহু নাগরিকদের মধ্যে নগদ অর্থ বিতরণের প্রকল্প হাতে নেন৷ তিনি বলেন, এই টাকা দিয়ে জিনিস কিনলে দেশের অর্থনীতি কিছুটা চাঙ্গা হবে৷ প্রায় ছয় বিলিয়ন শেকেল (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা) খরচ করেও এই প্রকল্প থেকে আশানুরূপ ফল মেলেনি৷

প্রতিবাদে অংশগ্রহণকারী স্কুলশিক্ষক হাদেরা বলেন, 'এটা কিছুই নয়, হাস্যকর ব্যবস্থা৷ মনে হচ্ছে, নেতানিয়াহু এটা করছেন, যাতে আমরা তাঁকে ধন্যবাদ দিয়ে খুশি হয়ে ঘরে বসে থাকি৷'

সূত্র : ডয়েচে ভেলে।

 

উপরে