এই ধরনের তৎপরতা আমাদের আশাবাদী করে, উৎসাহ দেয়
বিদেশে দায়িত্বরত হাই কমিশনার সাহেবরা নিজে উদ্যোগী হয়ে বাংলাদেশি কাউকে ফোন করেন- এই ঘটনা বিরল। ড. খলিলুর রহমান সেই কাজটিই করলেন। সকালে তিনি যখন ফোন করেন- তখন আমি একটি মিটিং এ। পর পর দুইবার অটোয়ার একই নম্বর থেকে আসা মিস কল দেখে মিটিং এ থেকে ফোন করি।
আপনার সঙ্গে কি একটু কথা বলতে পারি? আপনি কি ফ্রি আছেন এখন? প্রশ্ন করে নিজের পরিচয় দেন- আমি ড. খলিল, অটোয়ায় বাংলাদেশ হাই কমিশন থেকে।
ড. খলিলুর রহমান নতুন হাই কমিশনার হয়ে এসেছেন সেটা জেনেছিলাম। মিটিং শেষে কল ব্যাক করবো জানিয়ে ফোন রেখে দেই।
ড. খলিল ফোন করেছেন কানাডায় বাংলাদেশি পণ্যের ১০০ মিলিয়ন ডলারের বাজারের সম্ভাবনা নিয়ে 'শওগাত আলী সাগর লাইভে' গত বুধবার (১৬ ডিসেম্বর) যে আলোচনা করেছি সে সম্পর্কে জানতে। লাইভের আলোচনার বিষয়বস্তু ঢাকা এবং স্থানীয় অনেকগুলো মিডিয়ায় গুরুত্বসহকারে প্রচারিত হয়েছে।
ড. খলিল বললেন, আপনার লাইভে যে তিনজন ছিলেন, তাদের সাথে আমাকে কানেক্ট করিয়ে দেন, আমি কথা বলবো। সরকার এই বিষয়ে কাজ করতে আগ্রহী।
আগের দিন সন্ধ্যায় কমার্শিয়াল উইং এর দায়িত্বে থাকা শাকিল সাহেব ফোন করেছিলেন, আজ নতুন আসা হাই কমিশনার নিজে। মিডিয়ার খবর দেখে সরকারি বা সরকারি সংস্থার বড় কর্তারা এই ভাবে সাড়া দেন- এমন চিত্র সচারাচর দেখা যায় না। কিন্তু অটোয়ায় বাংলাদেশের নতুন হাই কমিশনার যেন সেখানে ব্যতিক্রম হয়ে উঠলেন।
কিছুদিন আগে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ডাইরেক্ট স্ট্রিমে অন্তর্ভূক্তি নিয়ে একটি লাইভ করেছিলাম। প্রসঙ্গটি তুলতেই ড. খলিল বললেন- সেটা আমি জানি। একটা রিপোর্ট আমরা তৈরি করেছি । সরকার এটি নিয়ে ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে।
ড. খলিল নতুন এসেছেন হাই কমিশনার হয়ে। আমাদের সঙ্গে এখনো আনুষ্ঠানিক পরিচয় হয়নি। তার আগেই তার সাথে কথা হয়ে গেলো, কাজের কথা দিয়েই পরিচয় হলো তার সাথে। আমলাসূলভ, সাধারন কূটনীতিকদের মতো নিজেকে খোলসের আড়ালে লুকিয়ে রাখতে চাইলেন না। দেশের স্বার্থ আছে, এমন একটি সংবাদ দেখে নিজেই খোঁজ খবর করার কাজে লেগে গেলেন। আগ্রহী হয়ে উঠলেন। এই ধরনের তৎপরতা আমাদের আশাবাদী করে, উৎসাহ দেয়।
প্রতি বুধবার রাতে 'শওগাত আলী সাগর লাইভ'-টা করি বাংলা ভাষাভাষী মানুষের জীবনের সঙ্গে সম্পর্কিত, গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনার জন্য। সেই আলোচনার দিকে সরকারের নীতি নির্ধারকদের যখন দৃষ্টি যায়, তারা কাজ করতে মাঠে নেমে পরেন- সেটি আমাদের কাজের স্পৃহাকে আরো বাড়িয়ে দেয়।
অটোয়ায় বাংলাদেশের হাই কমিশনার হিসেবে ড. খলিলুর রহমানকে স্বাগত জানাই। কানাডায় আপনার অবস্থানের সময়টা এমনই থাকুক, দেশের, দেশের মানুষের ভালো করার আকাঙ্ক্ষাই যেনো আপনাকে সারাক্ষণ ব্যস্ত রাখে। থ্যাংক ইউ ড. খলিল, মি. হাই কমিশনার।
লেখক: কানাডার বাংলা পত্রিকা ‘নতুনদেশ’ এর প্রধান সম্পাদক
(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)