এবার শমী কায়সারের বিয়ে নিয়ে মুখ খুলেছেন তসলিমা নাসরিন
একসময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শমী কায়সার আবারও বিয়ের করেছেন। বরের নাম রেজা আমিন সুমন। তিনি পেশায় ব্যবসায়ী। অভিনেত্রীর পারিবারিক সূত্রে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। জানা গেছে পারিবারিক ভাবে গত ২৭ সেপ্টেম্বর তাদের বিয়ে হয়। শুক্রবার (৯ অক্টোবর) জমকালো অয়োজনে বিয়ের অনুষ্ঠান হয়।
নব্বই দশক মাতানো অভিনেত্রী শমী কায়সারের এটি তৃতীয় বিয়ে। শমী-রেজার চেনা জানা বছর খানেক আগে থেকেই। পূর্ব পরিচয়ের সূত্রে প্রেম ও বিয়ে।বর রেজা আমিন সুমনেরও এটি দ্বিতীয় বিয়ে। তার আগের সংসারে দুই সন্তান রয়েছে। এর আগে তিনি ১৯৯৯ সালে ভারতীয় নাগরিক ব্যবসায়ী অর্ণব ব্যানার্জী রিঙ্গোকে বিয়ে করেন। দুই বছর পর তাদের বিচ্ছেদ ঘটে। পরবর্তীতে তিনি ২০০৮ সালের ২৪ জুলাই মোহাম্মদ আরাফাতকে বিয়ে করেন। নানা কারণে সেই সংসারও টেকেনি শমীর৷ এবার তিনি ঘর বাঁধলেন রেজা আমিন সুমনের সঙ্গে।
শমী কায়সারের এই বিয়ে নিয়ে নেটিজেনরা পক্ষে-বিপক্ষে মত নিয়ে মেতে আছেন। সোজা কথা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়।
এবার এ বিষয়ে মুখ খুলেছেন তসলিমা নাসরিন। শমী কায়সারের বিয়ে নিয়ে তিনি কিছু মন্তব্য করেছেন। পাশাপাশি বলেছেন নিজের বিয়ে নিয়েও। সুপ্রিয় পাঠকদের জন্য তসলিমা নাসরিনের ফেসবুক থেকে স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো।
‘আমার মাথায় যখন বুদ্ধি সুদ্ধি বলতে কিছু ছিল না, তখন বিয়ে করেছিলাম। চাপে পড়ে এবং উপায় না দেখে মনে করেছিলাম বিয়েটা বুঝি করতেই হবে। ঘর সংসার না করলেও বিয়ে জাতীয় কিছু একটা করেছিলাম বলে তখন বিশ্বাস করেছিলাম। অবশ্য আইনের চোখে ওগুলো হয়তো বিয়েই ছিল না।
আমি অবাক হই যখন দেখি বয়স হওয়া, অভিজ্ঞতা হওয়া, মাথায় বুদ্ধি সুদ্ধি প্রচুর, উপার্জন প্রচুর, নিজের পায়ে দাঁড়ানো স্বাবলম্বী মেয়েরা এই কুৎসিত পুরুষতান্ত্রিক সমাজে বিয়ে করে ! আজ দেখলাম শমী কায়সার ভীষণ সেজেগুজে তার তৃতীয় বিয়েটি করছে। কী গ্যারেন্টি যে এই পুরুষটির সঙ্গে দীর্ঘদিন সে বাস করতে পারবে! কিছু ন্যাড়া হয়তো বারবার বেলতলায় যেতে পছন্দ করে।
শমীর যত খুশি তত বিয়ে করার স্বাধীনতা আছে। এ তার জীবন। এই জীবনকে তার পছন্দ- মতো যাপন সে করবে। কেউ বাধা দেওয়ার নেই।শমী সুখে শান্তিতে আনন্দে আহ্লাদে থাকুক।
বাংলাদেশের মতো নারীবিদ্বেষী সমাজে স্বাধীন এবং সচেতন কোনও মেয়ে এমন কোনও পুরুষ কি পেতে পারে যে-পুরুষ নারীর সমানাধিকারে একশ’ভাগ বিশ্বাস করে? আমার সংশয় হয়। শিক্ষিত, এমন কী উচ্চশিক্ষিত মেয়েদেরও নিজের স্বাধীনতা এবং অধিকার বিসর্জন দিয়ে বিয়ে টিকিয়ে রাখতে হয়।
বুদ্ধি হওয়ার পর থেকে আমি বিয়ে টিয়ে করি না। আমার সংসার আমার একার সংসার। একার সংসারের মতো চমৎকার আর কিছু নেই। বিশেষ করে স্বর্নিভর এবং সফিস্টিকেটেড মেয়েদের সংসার। যতদিন পুরুষেরা নারীবিদ্বেষী, যতদিন চারদিকে কুৎসিত পুরুষতন্ত্রের জয় জয়কার, যতদিন তারা প্রভুর ভূমিকায়, ততদিন তাদের গলায় মালা পরানোর কোনও অর্থ হয় না। জানি কেউ কেউ বলবে সব পুরুষ মন্দ নয়।
অবশ্যই নয়, মন্দ-নয়-পুরুষেরা স্ত্রীদের দেখভাল করে, স্ত্রীদের ভাত কাপড় দেয়, সম্ভব হলে গয়নাও গড়িয়ে দেয়। মন্দ-নয়-পুরুষেরাও কিন্তু অবাধ্য স্ত্রীদের সহ্য করে না। সুতরাং অবাধ্য হলে চলবে না। আমি আবার অবাধ্য মেয়েদের খুব ভালোবাসি।’