ধর্মানুভূতিতে আঘাত, তিশাকে আইনি নোটিশ
ধর্মানুভূতিতে আঘাত দেওয়ায় নুসরাত ইমরোজ তিশাসহ বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন এক আইনজীবি। নাটকের মাধ্যমে সনাতনী সম্প্রদায়কে কটাক্ষ এবং ধর্মান্তরকরণ ও সাম্প্রদায়িকতা উস্কে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা ও তার একটি নাটকের সহঅভিনেতা, পরিচালক এবং প্রযোজকের বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগ এনেই লিটন কৃষ্ণ দাসের পক্ষে তাদের বিরুদ্ধে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন আইনজীবী সুমন কুমার রায়।
তিনি বলেন, দুর্গাপূজা উপলক্ষে নির্মিত ‘বিজয়া’ নামের নাটকে সনাতনী সম্প্রদায়ের ধর্মানুভূতিতে আঘাত করা হয়েছে। সেজন্য এ নাটকের অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা, অভিনেতা ইরফান সাজ্জাদ, রচনাকারী সালেহ উদ্দীন সোয়েব চৌধুরী (গণমাধ্যমে প্রচার হওয়া নাম শোয়েব চৌধুরী) ও পরিচালক আবু হায়াত মাহমুদ ভুঁইয়াকে (গণমাধ্যমে প্রচার হওয়া নাম আবু হায়াত মাহমুদ) নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
নোটিশে আইনজীবী সুমন উল্লেখ করেছেন, ‘আমার মক্কেল বিভিন্ন সােস্যাল মিডিয়া ও পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে জানিতে পেরেছেন আপনি শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে ‘বিজয়া’ নামে একটি নাটক নির্মাণ করেছেন। উক্ত নাটকের ট্রায়াল ভার্সন বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় ও সােস্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত হওয়ার সাথে সাথে লক্ষ লক্ষ সনাতনী সম্প্রদায় অত্যন্ত আগ্রহ সহকারে নাটকটি দেখার জন্য ব্যাকুল হয়েছিল। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, নাটকটি পর্যাবেক্ষণ করে দেখা যায় যে এ নাটকটিতে সুক্ষ্ম ও তিক্ষ্মভাবে সনাতন ধর্মাবলম্বী নারীদের চরিত্র হনন করা হয়েছে এবং সনাতন পুরুষদের মদ্যপ, নিষ্ঠুর আচরণকারী, অক্ষম ও উদাসীন হিসাবে তুলে ধরা হয়েছে। যার মাধ্যমে অত্যন্ত সুক্ষ্ম ও পরিকল্পিতভাবে পরকীয়া ও ধর্মান্তরকে উৎসাহিত করা হয়েছে।
দুর্গাপূজা উপলক্ষে নির্মিত ‘বিজয়া’ নাটকটির ট্রায়াল ভার্সন ইতিমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে যা সারা বিশ্বের বিনােদনপ্রেমীদের নিকট থেকে সমালোচিত হয়েছে। ‘বিজয়া’ নাটকটির ট্রায়াল ভার্সন পর্যবেক্ষণ করে সারা বিশ্বের কোটি কোটি সনাতন ধর্মাবলম্বীরা চরমভাবে হতাশ, মারাত্মক মর্মাহত আহত হয়েছেন। সামাজিক যােগাযােগ মাধ্যমে তারই ব্যাপক ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটে।
এ বিতর্কিত নাটকটি সনাতনী সম্প্রদায়ের অনুভূতিতে সুপরিকল্পিতভাবে আঘাত করেছে। নাটকটিতে সম্প্রদায়িক মনােভাব স্পষ্ট। তাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইতিমধ্যে এ নাটকটি ট্রায়াল ভার্সন প্রত্যাহার ও নাটকটি সর্বমহলে বয়কটের দাবি উঠেছে। স্বজ্ঞানে সাম্প্রদায়িকতা উস্কে দেওয়ার মানসে ও সনাতন ধর্ম অনুভূতিতে আঘাত আনার অভিপ্রায়ে পরস্পর যােগসাজসে পরিকল্পিতভাবে এ বিতর্কিত নাটকটি নির্মাণ করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয় নোটিশে।
আইনজীবী সুমন বলেন, ‘নাটকটির ট্রায়াল ভার্সন সোস্যাল মিডিয়া ও বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রচারিত হওয়ার সাথে সাথে আমার মক্কেল ও লক্ষ লক্ষ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মতাে মর্মাহত ও হতভম্ব, হতবাক ও আহত হয়েছেন। এই নির্মিত নাটকটি সম্প্রদায়িকতা সৃষ্টিসহ অসম্প্রদায়িক বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। নাটকটি বর্তমান আকারে ও প্রকারে যদি প্রচারিত হয় তবে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আমার মক্কেল লক্ষ লক্ষ সনাতন সম্প্রদায়ের পক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য থাকবেন।’
লিগ্যাল নােটিশ প্রাপ্তির ৭ দিনের (১২ অক্টোবর থেকে শুরু) মধ্যে সনাতন সম্প্রদায়ের ভাবাবেগ ও সনাতন ধর্ম অনুভূতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বিতর্কিত ‘বিজয়া’ নাটকটি প্রত্যাহার করতে নােটিশে উল্লেখিত অভিযুক্তদের প্রতি বিনীত অনুরােধ করা হয়েছে। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে দেশে প্রচলিত যেকোন দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালতের আশ্রয় নেয়া হবে।