আসা-যাওয়ার মধ্যে থাকবেন তৌকীর
জনপ্রিয় অভিনেতা তৌকীর আহমেদ এখন পরিচালনা নিয়ে বেশি ভাবছেন। এরইমধ্যে ‘অজ্ঞাতনামা’, ‘হালদা’, ‘ফাগুন হাওয়ায়’, ‘জয়যাত্রা’, ‘দারুচিনি দীপ’সহ আরও কয়েকটি সিনেমা পরিচালনা করেছেন। সিনেমাগুলোর মান নিয়ে কারও কোনো আক্ষেপ নেই, পেয়েছে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন উৎসবের সম্মাননা। কিন্তু তৌকীর আহমেদ তা নিয়ে তুষ্ট নন। তিনি বলেন, ‘আমি সেদিন আনন্দিত হব যেদিন অজ্ঞাতনামার মতো সিনেমা মাসের পর মাস হলে চলবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এখনো আমাদের দেশে ভালো সিনেমা নির্মাণ ও পৃষ্ঠপোষকতার রেওয়াজ চালু হয়নি। আমি এক একটি সিনেমা করতে গিয়ে লগ্নিকারক সংক্রান্ত যে সমস্ত সমস্যার মুখে পড়েছি তাতে অন্য দেশের নির্মাতা হলে কাজই করতেন না। কিন্তু আমি চলচ্চিত্রকে সত্যি ভালোবাসি, নিজের না বলা গল্পকে চলচ্চিত্রের ভাষায় বলতে চাই। এজন্য শত বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে এক একটি সিনেমা নিয়ে হাজির হই। প্রতিবার নতুন প্রত্যাশা থাকে, স্বপ্ন থাকে। সব প্রত্যাশা পূরণ হয় না। কিন্তু আমি হাল ছেড়ে দেওয়ার পাত্র নই। আমি মনে করি একদিন চলচ্চিত্রে সুবাতাস বইবে।’
চলচ্চিত্রাঙ্গনের এই সমস্যা কীভাবে কাটানো যায় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রথমেই দর্শকের রুচি তৈরি করতে হবে। এজন্য নিয়মিত ভালো গল্পে সিনেমা বানাতে হবে। দর্শক কী পছন্দ করছে তা মেনে নিয়ে সিনেমা করলে আমাদের সিনেমার মান আর বাড়বে না। তারচেয়ে বরং দর্শককে বৈচিত্র্যময় গল্পের ব্যতিক্রম নির্মাণের সিনেমা উপহার দিলে তারা সেটা দেখতেই অভ্যস্ত হয়ে পড়বে। আমাদের এক শ্রেণির দর্শক তৈরি আছে ভালো সিনেমা দেখার জন্য। তারা নেটফ্লিক্স দেখছে, বিদেশি সিনেমা দেখছে। সুতরাং তাদের হলমুখী করতে হবে। এজন্য বেশ কিছু ভালো সিনেমা হলও প্রয়োজন।’ তিনি আরও বলেন, ‘এখনই সময় চলচ্চিত্রের মাধ্যমে দেশকে বিশ্বের দরবারে ইতিবাচকভাবে পরিচিত করানো। এতে দেশ ও দেশের মানুষেরই সম্মান বৃদ্ধি পাবে। তার জন্য সিনেমা অঙ্গনে শিক্ষিত ও রুচিশীল মানুষের খুব দরকার।’
এদিকে, এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে চিত্রকলা প্রদর্শনীর জন্য আমেরিকায় গিয়েছিলেন তৌকীর আহমেদের স্ত্রী ও জনপ্রিয় অভিনেত্রী বিপাশা হায়াত। করোনার কারণে তিনি আর ফিরতে পারেননি দেশে। অবশেষে চলতি মাসে দুই সন্তানসহ তৌকীর আহমেদ গিয়ে বিপাশার সঙ্গে যোগ দেন। এখন তারা নিউ ইয়র্কে অবস্থান করছেন। সপরিবারে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দেওয়ায় অনেকে ভাবতে শুরু করেছেন, এই তারকা দম্পতি বুঝি স্থায়ীভাবেই যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন। এ প্রসঙ্গে তৌকীর আহমেদ বলেন, ‘আমেরিকায় স্থায়ী হওয়ার বিষয়টা মানুষ যেভাবে ভাবছে আসলে তেমনটা নয়। আমরা নিজেদের কথা ভাবলে অনেক আগেই যেতে পারতাম। কিন্তু তা না করে দেশের শিল্প-সংস্কৃতি বিকাশে কাজ করেছি। শিল্পী পরিচয়েই এখনো স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। কিন্তু আমাদের সন্তানদের উন্নত সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করতে পারি না। মূলত ছেলেমেয়ের পড়ালেখার কারণেই আমরা যুক্তরাষ্ট্রে এসেছি। এখন তাদের স্কুলে ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করব। এরপর স্থায়ীভাবে থাকার জন্য যেসব শর্ত আছে, সেগুলো পূরণ করার চেষ্টা করর।’ তিনি আরও বলেন, ‘অল্প সময়ের মধ্যেই আমি আবার দেশে চলে আসব। আমি অবশ্য যাওয়া-আসার মধ্যেই থাকব। বিপাশা সেখানে সন্তানদের সঙ্গে অবস্থান করবে।’
যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার আগে তৌকীর আহমেদ ‘রূপালী জোছনায়’ নামের একটি ধারাবাহিক নাটক নির্মাণ করছিলেন। এটি চ্যানেল আইতে প্রচার হচ্ছে। এই নাটকের শ্যুটিং এখনো বাকি আছে।