ঢাকা, সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪
আপডেট : ৩১ আগস্ট, ২০২০ ২০:০১

আসছে ন্যানসির নতুন দুই গান

অনলাইন ডেস্ক
আসছে ন্যানসির নতুন দুই গান

জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী নাজমুন মুনিরা ন্যানসি। করোনার মধ্যে শোবিজ অঙ্গন অনেকটাই মন্থর গতিতে চলছে। নাটক ছাড়া সিনেমা বা গানের শিল্পীরা এখনো প্রায় ঘরে বসেই দিন কাটাচ্ছেন। এর মধ্যেও ব্যস্ত ন্যানসি। গত ঈদে তার সবচেয়ে বেশি সংখ্যক নতুন গান প্রকাশিত হয়। এমনকি একাধিক টেলিভিশন লাইভ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে দর্শক মাতান। ঈদের ছোট্ট বিরতি কাটিয়ে তিনি আবার পুরোদমে কাজে ফিরেছেন। এই অল্প কদিনেই নতুন দুটি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। একটি লিখেছেন প্রখ্যাত গীতিকবি গাজী মাজহারুল আনোয়ার। গানের প্রথম লাইন ‘আমার একটাই তো মন্দ স্বভাব’ শুনেই বোঝা যাচ্ছে দারুণ কথার এই মেলোডিয়াস গনটি দর্শকের মনে দোলা দেবে। গানটির সুর ও সংগীত করেছেন আহমেদ কিচলু। এছাড়া ইশতিয়াক আহমেদের লেখা ‘ভুল নাম’ শিরোনামে আরেকটি গান গেয়েছেন তিনি। এর সুর ও সংগীত করেছেন রাজন সাহা। নতুন গান দুটি নিয়ে ন্যানসি বলেন, ‘আমার গান যারা পছন্দ করেন বা নিয়মিত শোনেন, তারা জানেন আমি কী ধরনের গান বেশি করি। এই গান দুটিও তেমনি মেলোডিয়াস ধাঁচের। কথা ভালো না হলে আমার সে গান গাইতে আপত্তি থাকে। এ গান দুটির কথা ও সুর খুব চমৎকার। আশা করছি সবাই পছন্দ করবেন।’

তবে এখনকার গানগুলো আগের মতো সব শ্রেণির শ্রোতাদের কাছে পৌঁছায় না বলে বেশ নাখোশ ন্যানসি। তিনি বলেন, ‘আমি নিজেই খুব বেশি অনলাইননির্ভর মানুষ নই। আমার ধারণা, আমার মতো মানুষের সংখ্য খুব কম নয়। কিন্তু এখনকার গানের প্রচারণা শুধু অনলাইনেই সীমাবদ্ধ। এজন্য সব শ্রেণির দর্শক-শ্রোতা গান সম্পর্কে জানতে পারে না। এজন্য এখনকার গানগুলো আমার ক্যারিয়ারের শুরুর দিকের গানগুলোর তুলনায় ম্যাসিভ হিট করছে না।’

এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘সব গান কিন্তু প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই হিট হয় না। বেশিরভাগ গান থাকে যা ধীরে ধীরে মানুষের হৃদয়ে পৌঁছায়। এজন্য সে গানগুলো বারবার দর্শক-শ্রোতার সামনে পরিবেশন করা উচিত। কিন্তু আমাদের রেডিও, টেলিভিশনে শুধু ম্যাসিভ হিট গানগুলোই প্রচার করা হয়। এমনকি আমরা লাইভ বা স্টেজ শোতে গান গাইতে গেলেও সেই নির্দিষ্ট কিছু গানই বারবার করতে হয়। এজন্য এখনকার শিল্পীদের জনপ্রিয় গানের সংখ্যা অনেক কম। আমার যে কটি গান মানুষের মুখে মুখে বারবারই আমাকে সেগুলো গাইতে হয়। মাঝে মাঝে নিজেরই গানগুলো গাইতে ক্লান্ত লাগে।’

জনপ্রিয় গানগুলো ভিন্ন আঙ্গিকে উপস্থাপনেরও কোনো সুযোগ নেই বলে জানালেন ন্যানসি। তার কথায়, ‘জনপ্রিয় গানগুলোই যেহেতু গাইতে হয়, তাই খুব ইচ্ছে করে সেগুলোও যদি একটু ভিন্ন আঙ্গিকে পরিবেশন করা যায়। কিন্তু এ ক্ষেত্রেও সমস্যা। আমি হয়তো গায়কিতে একটু ভিন্নতা আনলাম, কিন্তু পুরো একটা ব্যতিক্রমী স্বাদ পেতে গেলে তো মিউজিকেও ভিন্নতা দরকার। কিন্তু আমাদের টিভি চ্যানেলের শো বা স্টেজ শোতে মিউজিশিয়ানদের জন্য ভালো কোনো বাজেট থাকে না। হয়তো তাদেরও ইচ্ছে থাকে, কিন্তু বাজেটের জন্য উন্নতমানের সাউন্ড সিস্টেম, এমনকি একটু বেশি মিউজিশিয়ান এফোর্ট করতে পারেন না। শুধু তাই নয়, আমাদের শোগুলোতে শিল্পীদের উপস্থাপনের ধরনও একঘেয়ে। সিনিয়র, জুনিয়র সব শিল্পীকে একইভাবে উপস্থাপন করা হয়। এজন্য কোনো শিল্পীর গ্রহণযোগ্যতা কতখানি তা দর্শক বুঝতে পারে না।’

সম্প্রতি সংগীতাঙ্গনে কপিরাইট ইস্যু নিয়ে জোর আলোচনা-সমালোচনা চলছে। এ প্রসঙ্গে ন্যানসি বলেন, ‘কে কী বলছে, সে বিষয়ে আমি যাব না। তবে এতদিন এই ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে গিয়ে মনে হয়েছে, কোম্পানি বাঁচলে আমরাও বাঁচব। আমাকে ইন্ডাস্ট্রিতে ব্রেক দিয়েছেন ফেরদৌস ওয়াহিদ, হাবিব ওয়াহিদ। তখন আমাকে কেউ চিনত না। তাই সে সময় আমার গান দিয়ে তারা যদি অনেক বেশি আয় করেও থাকেন, তাতে আমার কী? শিল্পী হিসেবে প্রত্যেকের তো এতটুকু কৃতজ্ঞতা থাকা উচিত। এখন আমার একটা অবস্থান তৈরি হয়েছে। তাই এখন আমি কার গান এককালীন টাকা নিয়ে করব আর কারটা শেয়ার রেখে করব সেটা আমার বিষয়। কারও কাছ থেকে এককালীন টাকা নিয়ে থাকলে আমি কোনোদিন তার কাছে আবার টাকা চাইতে পারি না। কোম্পানির লোক যদি এতটাই একপেশে হতেন, তবে তারা কেন কোনো চুক্তিপত্র ছাড়া শিল্পীকে বিশ্বাস করে টাকা দিয়ে দেন। আবার আমরাও তাদের বিশ্বাস করি বলেই তো কোনো চুক্তি না করে অনেক সময় গান করি। এটা শিল্পীকেই বুঝতে হবে, তার গান সে কীভাবে করতে চায়।’

 

উপরে