দর্শকের পছন্দের শীর্ষে মেহজাবিন
ছোট পর্দার সুপারস্টার মেহজাবিন চৌধুরী। কিন্তু এক দিনে শীর্ষ নায়িকায় পরিণত হননি তিনি। বৈচিত্র্যময় চরিত্রে নিজেকে বারবার প্রমাণ করছেন। যদিও নিজেকে নায়িকার চেয়ে অভিনেত্রী ভাবতেই পছন্দ করেন তিনি। গত কয়েক বছর মেহজাবিনের নাটক দেখতেই সবচেয়ে আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করেন দর্শক। তার নানা ধরনের দর্শক আছে। আর এই স্বপ্ন নিয়েই পথচলা শুরু করেছিলেন শোবিজে। মেহজাবিন বলেন, ‘আমাকে তৈরি করেছে দর্শক। একটি সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় বিচারক ও দর্শকের যৌথ রায়ে সেরা নির্বাচিত হয়েছিলাম। শোবিজে কাজ করতে এসে একধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ি। সেই চ্যালেঞ্জটাকে জয় করার ইচ্ছা জন্মায়। হতে চেয়েছিলাম ফার্মাসিস্ট। কিন্তু অজান্তেই অভিনয়ের প্রেমে পড়ে যাই। যখন অভিনয় নিয়ে সিরিয়াসলি ভাবতে শুরু করি, আমাকে পরিবার থেকে কোনো বাধা দেয়নি। শুধু বলেছিলেন, আমরা তোমার স্বপ্নে কোনো হস্তক্ষেপ করব না। কিন্তু আমরা বরাবরই চেয়েছি তুমি যা-ই করো, তাতে সেরার তালিকায় থাকো। যেহেতু অভিনয়েই থিতু হতে চাচ্ছ, এখানেও সেরা হতে হবে। আমি পরিবার ও নিজের চাওয়া পূরণের জন্য অনেক পরিশ্রম করেছি। আজ সেই লক্ষ্যপূরণের খুব কাছাকাছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বরাবরই চেয়েছি সব ধরনের দর্শক যেন আমার কাজ পছন্দ করেন। আমার কাজ নিয়ে যেন ড্রয়িংরুমে আলোচনা হয়। এ জন্য দর্শকের মানসিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে আমি নানা ধরনের গল্পে কাজ করি। রোমান্টিক গল্পের নাটকের প্রতি আগ্রহ সবারই একটু বেশি। আবার যখন কারও মন খারাপ থাকে, তখন যাতে আমার একটি হালকা গল্পের কমেডি ধাঁচের নাটক দেখে একটু হলেও কষ্ট ভুলতে পারে, সেই চেষ্টা করি। কিছু কাজ করি একেবারেই নিজের জন্য। আমি জানি এ ধরনের কাজ খুব বেশি দর্শক দেখবেন না। তারপরও যারা দেখবেন তারা যেন কিছু শিখতে পারেন, সেই কাজগুলো করি।’
এবার ঈদেও মেহজাবিনের কয়েকটি কাজ খুব প্রশংসিত ও আলোচিত হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এবার কমেডি ধাঁচের মধ্যে মি. অ্যান্ড মিসেস চাপাবাজ ও বউ নাটক দুটি করেছি। রোমান্টিক কমেডি গল্পের একাই একশ ও অবাক প্রেম। পিউর রোমান্টিক কাজের মধ্যে রয়েছে প্রাণপ্রিয়, কেন?, তোমায় নিয়ে ও ছায়াছবি। চরিত্রনির্ভর ভিন্ন ধাঁচের কাজের মধ্যে রয়েছে নির্বাসন, অপরূপা, তেইশে শ্রাবণ ও স্বার্থপর। প্রতিটি নাটক টার্গেট অডিয়েন্সের কাছে ভালোভাবে পৌঁছেছে বলে আমি খুশি।’
অনেকে অভিযোগ করেন, ভালো গল্পের নাটক হয় না এখন। আবার অনেকে বলেন, ভালো গল্পের নাটক হয় কিন্তু দর্শক তা দেখেন না। এখন ইউটিউব ভিউয়ের বিষয়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ প্রযোজকদের কাছে। তাই ইউটিউব দর্শক যে ধরনের গৎবাঁধা দুটি চরিত্রনির্ভর প্রেমের নাটক বা কমেডির নামে ভাঁড়ামির্নিভর নাটক দেখেন, সেগুলোই বানানো হয়। এ প্রসঙ্গে মেহজাবিন বলেন, ‘এ জন্য আমরাই দায়ী। কোনো একপক্ষকে দায়ী করা ঠিক না। আমাদের শোবিজ ইন্ডাস্ট্রিতে নারীপ্রধান কাজ খুব একটা হয় না। আবার দর্শক এ ধরনের নাটক খুব বেশি দেখেনও না। অনেকে তো চ্যালেঞ্জিং কোনো চরিত্রে আমাদের মেনেই নিতে পারেন না। এ ঈদের অপরূপা নাটকটির কথাই বলি। এখানের শেষ দিকে আমার চেহারা বিকৃত হয়ে যায়। কাজটি দেখে অনেকে বলেছেন, আমরা আপনার চেহারার এই পরিণতি মেনে নিতে পারিনি। আবার কিছু দর্শক নির্বাসিত নাটক দেখে বলেছেন, আপনার কষ্ট আমরা সহ্য করতে পারিনি। আসলে সব ধরনের দর্শকই থাকবেন। তবে তাদের তৈরি করার দায়িত্বও আমাদের। নিয়মিত ভালো গল্পের কাজ তৈরি হলে দর্শক সেগুলোই দেখবেন। সব ধরনের দর্শকের কাছে পৌঁছানোর জন্যই আমি বৈচিত্র্যময় কাজ করতে চাই।’