ঢাকা, শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫
আপডেট : ১৪ জুলাই, ২০২০ ১৭:৪৭
সূত্র :

আগামীকাল চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন প্লে-ব্যাক সম্রাট এন্ড্রু কিশোর

অনলাইন ডেস্ক
আগামীকাল চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন প্লে-ব্যাক সম্রাট এন্ড্রু কিশোর

বাবা মায়ের পাশেই আগামীকাল ১৫ জুলাই চির নিদ্রায় শায়িত হবেন প্লে­ব্যাক সম্রাট এন্ড্রু কিশোর (৬৫)।

গত ৬ জুলাই ক্যান্সার রোগে ভুগে তিনি রাজশাহীর মহিষবাথান এলাকায় একটি ক্লিনিকের আইসিইউতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

তার অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী একমাত্র পুত্র ও কন্যা দেশের বাইরে থাকায় এতোদিন মরদেহ সমাহিত না করে রামেক হাসপাতালের হিমঘরে রাখা ছিলো। তার ছেলে এন্ড্রু জুনিয়র সপ্তক গত ৭ জুলাই এবং মেয়ে সংঘা গত ১৩ জুলাই দেশে ফিরেছেন।

এন্ড্রুকিশোরের দুলাভাই ডা. প্যাট্রিক বিপুল বিশ্বাস জানান, শিল্পী এন্ড্রু কিশোরের মরদেহ এখন হিমঘরে রয়েছে। সেখান থেকে আগামীকাল ১৫ জুলাই সকাল ৯টায় মরদেহটি বের করে নগরীর চার্চ অব বাংলাদেশে নিয়ে ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান পালন করা হবে। এরপর সকাল ১১ টার দিকে এই চার্চের নিজস্ব কবরস্থান সার্কিট হাউসের উল্টোপাশে যেখানে তার বাবা-মায়ের সমাধি আছে সেখানে নেয়া হবে। সেখানে জনসাধারণের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য কিছুক্ষন রাখা হবে। দুপুর ১ টার দিকে লাশটি সমাহিত করা হবে।

এর আগে এন্ড্রু কিশোরকে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য লাশ সকাল ১১ টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে রাখার কথা থাকলেও তা বাতিল করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ‘মরদেহ খুব ভাল নেই। বেশ কয়েকদিন হয়ে গেছে। বিদ্যুৎ ঠিকমত ছিলো না। এ অবস্থায় দুর্গন্ধ হতে পারে। একারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য লাশ নেয়া সম্ভব হচ্ছে না।

তিনি বলেন, করোনার কারণে আমরা চাইনা অনেক লোকজন উপস্থিত হোক। করোনায় রাজশাহীর অবস্থা ভাল নেই। বেশি মানুষ এসে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হোক তা আমরা চাইনা। যত কম লোক উপস্থিত হবেন, ততটাই সবার জন্য মঙ্গল হবে।

এন্ড্রু কিশোরের জন্ম রাজশাহীতে। এখানেই কেটেছে তাঁর শৈশব ও কৈশোর। এন্ড্রু কিশোর প্রাথমিকভাবে সংগীতের পাঠ শুরু করেন রাজশাহীর ওস্তাদ আবদুল আজিজ বাচ্চুর কাছে। পড়াশোনা করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। একসময় গানের নেশায় রাজধানীতে ছুটে যান। মুক্তিযুদ্ধের পর তিনি রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলসংগীত, আধুনিক গান, লোকগান ও দেশাত্মবোধক গানে রেডিওর তালিকাভুক্ত শিল্পী হন।

১৯৭৭ সালে আলম খানের সুরে ‘মেইল ট্রেন’ চলচ্চিত্রে ‘অচিনপুরের রাজকুমারী নেই যে তাঁর কেউ’ গানের মধ্য দিয়ে এন্ডু কিশোরের চলচ্চিত্রে প্লে­ব্যাক যাত্রা শুরু হয়। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। এন্ডু কিশোরের খুব জনপ্রিয় গানের মধ্যে রয়েছে ‘জীবনের গল্প আছে বাকি অল্প’, ‘হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস’, ‘ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে’, ‘আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি’, ‘আমার বুকের মধ্যেখানে’, ‘আমার বাবার মুখে প্রথম যেদিন শুনেছিলাম গান’, ‘সবাই তো ভালোবাসা চায়’, ‘পড়ে না চোখের পলক’, ‘ওগো বিদেশিনী’, ‘তুমি মোর জীবনের ভাবনা’, ‘আমি চিরকাল প্রেমেরও কাঙ্গাল’ প্রভৃতি। এন্ডু কিশোর আটবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন।

 

উপরে