ঢাকা, রবিবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৪
আপডেট : ১ মে, ২০২১ ০৫:৪৫

মুনিয়াকে শারুনের প্ররোচনা: ‘তুমি কিছু করলে বসুন্ধরা গ্রুপ শেষ হয়ে যাবে’

অনলাইন ডেস্ক
মুনিয়াকে শারুনের প্ররোচনা: ‘তুমি কিছু করলে বসুন্ধরা গ্রুপ শেষ হয়ে যাবে’

রাজধানীর গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে মোসারাত জাহান মুনিয়ার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের ঘটনায় হুইপপুত্র শারুন চৌধুরীর সঙ্গে তার কিছু কথোপকথনের স্ক্রিনশটে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। 

হুইপপুত্র শারুন চৌধুরীর সঙ্গে মুনিয়ার কথোপকথনের স্ক্রিনশটের সূত্র ধরে মঙ্গলবার বিকেলে একটি সূত্র তার কাছে কিছু তথ্য জানতে চায়। 

শারুন বলেন, সূত্রের জানতে চাওয়া বিষয়গুলো তিনি জানিয়েছেন। 

তবে কোন সূত্র তাকে ফোন করেছিলেন সে ব্যাপারে তিনি কিছু বলতে চাননি।

শারুন জানান, তার কাছ থেকে গতকাল (মঙ্গলবার) বিকেলে একটি সূত্র মুনিয়ার সঙ্গে কথোপকথনের প্রতি ইঙ্গিত দিয়ে জানতে চেয়েছেন, তিনি তাকে চেনেন কি না। শারুন সূত্রকে জানান, মুনিয়ার সঙ্গে তার পরিচয় ছিল। গত বছর মুনিয়া ফেইসবুকে তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন।

শারুনের দাবি, মুনিয়ার মৃত্যুর পর ফেইসবুকে তার সঙ্গে কথোপকথনের যে স্ক্রিনশট ছড়ানো হচ্ছে, সেগুলো মিথ্যা। স্ক্রিনশট থেকে জানা যায়, ওই তরুণীর সঙ্গে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে গ্রেপ্তার ও বহিষ্কৃত যুবলীগ নেতা ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটেরও সম্পর্ক ছিল। 

সেই চ্যাটে মুনিয়া শারুনকে লেখেন, ‘সম্রাট চলে যাওয়ার পর আপনি তো জানেন আমি কত কষ্টে ছিলাম। আর লাস্ট ইয়ারে তো আমি খুবই কষ্টে ছিলাম। আপনি ওই টাইমে আমার পাশে না থাকলে আমি কী করতাম জানি না।’ 

একটি চ্যাটে শারুন মুনিয়াকে প্ররোচনা দিয়ে লেখেন, ‘তুমি কিছু করলে বসুন্ধরা গ্রুপ শেষ হয়ে যাবে।’

গত ২৬ এপ্রিল গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে মুনিয়ার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। গুলশান বিভাগের উপকমিশনার সুদীপ চন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, কোন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে মুনিয়া আত্মহত্যা করেছেন, তদন্ত করে দেখবে পুলিশ। 

এ ঘটনায় ওই তরুণীর বোন বাদী হয়ে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। মামলায় ওই তরুণীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে।

জানা যায়, আলোচিত হুইপপুত্রের সঙ্গে মুনিয়ার নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। হোয়াটসঅ্যাপ ও টেলিগ্রামে নিয়মিত বসুন্ধরার এমডি সায়েম সোবহান আনভীর সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য শারুনকে জানাতেন মুনিয়া। তাদের আলাপের স্ক্রিনশট থেকে জানা যায়, আক্ষেপ করে মুনিয়া শারুনকে বলতেন, ‘আপনার লাইফে আপনার ওয়াইফের আগে যদি আমি আসতাম।’ এর উত্তরে শারুন বলেছেন, ‘আমি ভালো মানুষ না। জাস্ট উপকার করি।’ হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাটে মুনিয়া আরও লেখেন, ‘আমার আপনার ভেতরে যা হয়েছে ওইটা কেউ জানবে না। আপনি আমার জন্য অনেক করেছেন।’

নিজেদের মধ্যকার এসব চ্যাট নিয়ে অবশ্য উৎকণ্ঠায় ছিলেন শারুন। সেই কথাও জানান মুনিয়াকে। উত্তরে মুনিয়া লিখেছিলেন, ‘জি না, আমি ডিলিট করে দিই সব।’ ছড়িয়ে পড়া স্ক্রিনশটে কথোপকথন কত তারিখের, তা স্পষ্ট নয়।

ওই কথোপকথনের একটিতে মুনিয়া শারুনকে লেখেন, তিনি ভালো নেই। এরপর লেখেন, ‘উনি তো আমাকে বিয়ে করবে না। কী করব আমি?’ জবাবে শারুন লেখেন, ‘আগেই বলেছিলাম, ওর কথা শুইনো না। ও আমার বউকে বলছে বিয়ে করবে, কিন্তু করে নাই।’

স্ক্রিনশট বিষয়ে শারুন চৌধুরী আরও বলেন, ‘মেয়েটার সঙ্গে আমার গত এক বছরে কোনো যোগাযোগ হয়নি। হোয়াটসঅ্যাপে কোনোদিন কথাই হয়নি।’

চট্টগ্রাম-১২ আসনের সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরীর ছেলে শারুন চৌধুরীর বিরুদ্ধে সম্প্রতি এক ব্যাংক কর্মকর্তাকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগও ওঠে।

উপরে