ঢাকা, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪
আপডেট : ২৭ ডিসেম্বর, ২০২০ ১০:৩০

নাটোরে বাজারে নতুন পিয়াজ

অনলাইন ডেস্ক
নাটোরে বাজারে নতুন পিয়াজ

নাটোরের হাট-বাজারগুলোতে উঠতে শুরু করেছে নতুন পিয়াজ। বাজারে নতুন পিয়াজ সরবরাহের সাথে সাথে কমেছে পুরাতন দেশি পিয়াজের দামও। এতে চাহিদা কমতে শুরু করেছে খোলা বাজারে বিক্রি হওয়া ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পিয়াজ।

বাজারে নতুন পিয়াজ পাইকারি প্রতিকেজি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পিয়াজের বিকল্প হিসেবে পিয়াজ পাতা বা ফুলকাও ১০ থেকে ১২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। পুরাতন দেশি পিয়াজের দাম নেমে এসেছে কেজি প্রতি ৫০ টাকায়।

পিয়াজের দাম কমার সাথে সাথে কমে গেছে টিসিবির পিয়াজ বিক্রি। তুরস্ক থেকে আমদানিকৃত টিসিবির পিয়াজ দিনশেষে অবিক্রিতই থেকে যাচ্ছে। ট্রাক ভর্তি পেঁয়াজ নিয়ে এলেও পরিমাণে সামান্যই বিক্রি করতে পারছেন ডিলাররা। ডিলারদের মতে, এই পেঁয়াজের বিক্রি এতোটাই কমে গেছে যে প্রতিদিন পরিবহন খরচ তুলতেই যথেষ্ট বেগ পেতে হচ্ছে। শনিবার (২৬শে ডিসেম্বর) নাটোরের সর্ববৃহৎ কাঁচা তরকারির বাজার নলডাঙ্গা হাট, নাটোর স্টেশন, নীচাবাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্র এসেছে।দেখা যায়, রফিকুল ইসলাম নামের এক কৃষক জমি থেকে তোলা বিপুল পরিমাণে ফুলকার পসরা নিয়ে বসেছেন নলডাঙ্গা ব্রিজের উপর।

তিনি জানান, সকালে এই ফুলকা তিনি ১৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছেন। বেলা গড়ানোর সাথে সাথে দাম নেমেছে ১০ থেকে ১২ টাকায়। গত বছর একই সময় তিনি এই ফুলকা বিক্রি করেছেন কয়েকগুণ বেশি দামে। তখন চপ-সিঙ্গারার দোকানেও পেঁয়াজের বিকল্প হিসেবে এই ফুলকার ব্যাপক চাহিদা ছিলো। তবে এ বছর পেঁয়াজের দাম স্থিতিশীল থাকায় ফুলকার সাথে পাল­া দিয়ে পেঁয়াজও বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজের দাম কমলে ফুলকার দামও কমার সম্ভাবনা আছে।

এদিকে, একই সময় নলডাঙ্গা হাটে ওঠা হালকা খোসাযুক্ত নতুন পেঁয়াজও উঠেছে। এই পেঁয়াজ পাইকারী প্রতিকেজি ৩২-৩৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি পুরাতন দেশি পেঁয়াজ প্রতিকেজি ৩৫-৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে শহরের কাঁচাবাজারগুলোতে কেজিপ্রতি ৫ থেকে ১০ টাকা বেশি দামে একই পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। কমেছে পুরাতন পেঁয়াজের দামও।

খুচরা ব্যবসায়ীরা জানান, দেশি পেঁয়াজের চাহিদা বাজারে বরাবরই বেশি ছিলো। কিন্ত দাম বাড়ার কারণে অনেক ভোক্তাই খোলা বাজারে বিক্রি হওয়া আমদানী করা পেঁয়াজ কেনা শুরু করেন। এখন দাম স্বাভাবিক হচ্ছে। চাষীরা জমির পেঁয়াজ স¤পূর্ণ তুললে বাজারে আরও সরবরাহ বাড়বে।

এদিকে, বিকেলে শহরের কানাইখালী এলাকায় ট্রাক ভর্তি করে টিসিবির পেঁয়াজ বিক্রি হতে দেখা যায়। দাম প্রতিকেজি ২০ টাকা হলেও ক্রেতার সংখ্যা হাতেগোণা।

এই পেঁয়াজের ডিলার জনি সাহা জানান, তাদের দিনপ্রতি বরাদ্দ ২ টন। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ২ টন পেঁয়াজের মধ্যে বিক্রি হয়েছে মাত্র ২ মণ। এতে পরিবহন খরচ বাবদ ৫ হাজার টাকা তোলাই কঠিন হয়ে পড়েছে। অবিক্রিত পেঁয়াজ পচে লোকসানের কবলে পড়তে হয়েছে।

সিংড়ার ডিলার মানিক কুমার সাহা বলেন, পেঁয়াজের দাম যখন ১০০ টাকার বেশি ছিলো তখন কয়েক ঘণ্টায় দুই টন পেঁয়াজ বিক্রি করেছি। এখন দাম কমে গেছে, নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসছে তাই টিসিবির পেঁয়াজের দামও কমে গেছে। আগে নির্দিষ্ট পরিমাণ বিক্রির বাধ্যবাধকতা ছিলো। দুই কেজি, তিন কেজি এমনিক পাঁচ কেজি প্যাকেট করে রাখা থাকছে পেঁয়াজ।

টিসিবির রাজশাহী বিভাগীয় সহকারি পরিচালক রবিউল মোরশেদ বলেন, পেঁয়াজের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি রোধেই টিসিবির কার্যক্রম শুরু হয়েছিলো। বাজারে নতুন পেঁয়াজ সরবরাহের প্রেক্ষিতে টিসিবির পেঁয়াজের দাম ও চাহিদা কমবে এটাই স্বাভাবিক। তবুও মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জনস্বার্থে খোলা বাজারে এই বিক্রি কার্যক্রম চালু থাকবে।

উপরে