রংপুরে রিকশাচালককে পিটিয়ে হত্যা, স্ত্রীসহ পুলিশ সদস্য জেল হাজতে
রংপুরে শারীরিক প্রতিবন্ধী রিকশাচালক নাজমুল ইসলামকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য ও তার স্ত্রীকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
বুধবার রাতে নিহতের স্ত্রী শ্যামলী বেগম বাদী হয়ে পুলিশ কনস্টেবল হাসান আলী ও স্ত্রী সাথী বেগমকে আসামি করে মামলা করলে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। পরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের (তাজহাট) বিচারক ফজলে ইলাহী খান পরবর্তী তারিখে রিমান্ড শুনানির আদেশ দিয়ে তাদের জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আশরাফুল ইসলাম। তিনি জানান, পরবর্তী তারিখে রিমান্ড আবেদনের শুনানি হবে।
এদিকে, হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরীর পার্কের মোড়ে এলাকাবাসী ও অটো শ্রমিকরা বিক্ষোভ মিছিল করেন। এসময় বিক্ষোভকারীরা পুলিশ সদস্য হাসান আলীর শাস্তি দাবি করে ঢাকা-রংপুর-কুড়িগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করলে প্রায় ঘণ্টাখানেক যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে।
এর আগে, নগরীর শাপলা চত্বরে অটো রিকশাচালক শ্রমিকলীগ ও দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বাংলাদেশ ছাত্র ও যুব অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা ওই ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেন।
বুধবার সন্ধ্যায় পুলিশ সদস্য হাসান আলীর আশরতপুর কোর্টপাড়া এলাকার ভাড়া বাসা থেকে রিকশাচালক নাজমুল ইসলামের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে কনস্টেবল হাসান ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করে এলাকাবাসী। ঘটনার দিনই ওই পুলিশ সদস্য ও তার স্ত্রীকে আটক করা হয়।
নিহত রিকশাচালক নাজমুল হোসেন লালমনিরহাটের মুস্তফির এলাকার আশরাফ আলীর ছেলে। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও তিনি রংপুরের আশরতপুর ঈদগা পাড়ায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে হাসান আলীর একটি ব্যাটারিচালিত রিকশা ভাড়ায় চালাতেন।
মঙ্গলবার রাতে ওই রিকশা চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাসান আলীর সঙ্গে নাজমুলের বিরোধ হয়। এরই জেরে তাকে মারধর করেন হাসান আলী। একপর্যায়ে অবস্থা আশঙ্কাজনক হলে তাকে কোর্টপাড়ার বাড়িতে নিয়ে যান হাসান। বুধবার বিকেলে হাসানের ভাড়া বাসায় প্রতিবন্ধী নাজমুলের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
তাজহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আখতারুজ্জামান প্রধান জানান, গ্রেফতারকৃত পুলিশ সদস্য হাসান আলী ও তার স্ত্রীকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।