বিয়েতে অস্বীকৃতি প্রেমিকের, চিরকুট লিখে আত্মহত্যা প্রেমিকার!
টানা ছয় মাস প্রেম করার পর বিয়ের আশ্বাস দিয়েও বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায় ক্ষোভে এক তরুণী আত্মহত্যা করেছে বলে চিরকুট থেকে জানা গেছে। এ ঘটনায় মামলা না করতে প্রেমিকের পরিবার তরুণীর পরিবারকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। আত্মহত্যার শিকার ঐ তরুণীর পরিবার বর্তমানে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। সোমবার সন্ধ্যায় ভুলতা ইউনিয়নের পাড়াগাঁও এলাকায় ঘটেছে এ ঘটনা। ঘটনাটি এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
তরুণীর পিতা আবু সামাদ জানান, তার স্ত্রী আঙ্গুরী বেগম ও তার মেয়ে পাপিয়া বেগম গত ৭ মাস আগে উপজেলার ভুলতা ইউনিয়নের পাড়াগাঁও এলাকার শফি মিয়ার বাড়িতে ভাড়া আসেন। আবু সামাদ স্থানীয় টেক্সটাইলের শ্রমিক। গত ৬ মাস পূর্বে পার্শ্ববর্তী হারিজ মিয়ার ছেলে মুড়াপাড়া কলেজের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রাজন মিয়ার সঙ্গে পাপিয়ার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। একপর্যায়ে তাদের সম্পর্ক প্রণয়ে পরিণত হয়। এনিয়ে পাপিয়া চাপাচাপি করলে রাজন তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখায়। গত এক সপ্তাহ আগে পুনরায় পাপিয়া রাজনকে বিয়ের জন্য চাপ প্রয়োগ করে। পরে রাজন ২০ ডিসেম্বর বিয়ের করার আশ্বাস দেয়। সোমবার ২১ ডিসেম্বর দুপুরে বিয়ের ব্যাপারে জানতে রাজনকে ফোন দেয়। এতে অস্বীকৃতি জানালে পাপিয়া ক্ষোভে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। এর পূর্বে গত ৪ দিন আগে রাজনের পরিবারের লোকজন পাপিয়ার বাসায় এসে তার মা-বাবাকে মেয়েকে নিয়ে এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য শাসায়। নতুবা জুতার মালা গলায় পড়িয়ে এলাকা ছাড়া করা হবে বলে হুমকি দেয়।
পাপিয়ার পিতা আরো জানান, রাজন প্রায় সময়ই তার মেয়েকে নিয়ে বাহিরে বেড়াতে যেতো। এসব খরচ বহন করতো পাপিয়া। বিয়ে করার প্রলোভন দেখিয়ে প্রায় সময়ই পাপিয়ার নিকট থেকে টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিতো। প্রেমিকের মন রক্ষার্থে পাপিয়া তার শেষ অবলম্বন কানের দুল আর শখের পায়ের নূপুরও বিক্রি করে দিয়েছিলো। তারপরও মন পায়নি পাষন্ড প্রেমিকের। জানা গেছে, মৃত্যুর আগে পাপিয়া তার ডায়রিতে রাজনের প্রেমের সম্পর্ক ও আত্মহুতির বিষয়ে লিখে গেছে। পাপিয়ার মা আঙ্গুরি বেগম বুকফাঁটা আর্তনাদ করে বলেন, 'আমার সোনার টুকরা মাইয়াডা ওই রাজনের লেইগ্যা মইরা গেছে। ও কইছে বিয়া করবো। বিয়া করার কতা কইয়া আমার মাইয়াডার ইজ্জত নষ্ট করছে। আল্লায় ওগো ইজ্জত শেষ কইরা দিবো। আমরা গরীব মানুষ। আমাগো কেউ খবর লয়না।' স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, রাজন স্থানীয় ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার কারণে ও তাদের পরিবার প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ মুখ খুলতে সাহস করছে না। বিষয়টি স্থানীয় মাতব্বরদের জানিয়েও কোন সুফল মেলেনি।
ভুলতা ফাড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) রিপন বলেন, খবর পেয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। তবে প্রেমিক রাজনের ব্যাপারে তরুণী পাপিয়ার বাবা-মা অভিযোগ করলে মামলা নেওয়া হবে।