নতুন আঙ্গিক পাচ্ছে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা
নতুন আঙ্গিক পাচ্ছে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা। উন্নয়ন হচ্ছে অবকাঠামোর। দৃষ্টিন্দন ও নান্দনিক হচ্ছে পুরো অবয়ব। করা হচ্ছে নানা সৌন্দর্যবর্ধন কাজ। বাড়ছে পরিধি। রবিবার দুপুরে দুই কোটি ১৫ লাখ টাকার দুইটি উন্নয়নমূলক কাজের উদ্বোধন এবং একটি উন্নয়নমূলক কাজের ভিত্তি প্রস্তর করা হয়। চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন এসব কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চিড়িয়াখানা ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব মোহাম্মদ রুহুল আমীন ও রাউজান উপজেলা চেয়ারম্যান এহসানুল হায়দার চৌধুরী বাবুল প্রমুখ।
জানা যায়, চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার সৌন্দর্যবর্ধন (পাহাড়ে নির্মিত সিঁড়ি) কাজের উদ্ধোধন করা হয়। সিড়িটির দৈর্ঘ্য এক হাজার ৫২ ফুট। একই সঙ্গে চিড়িয়াখানার নতুন বর্ধিতাংশে সিড়ি নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয়।
সিড়িটির দৈর্ঘ্য এক হাজার ৪৪২ ফুট। তাছাড়া চিড়িয়াখানায় সম্প্রসারণ করা হয় প্রস্তুত করা হয় বাঘের খাঁচার। আগে বাঘের খাচা ছিল প্রায় ৩ হাজার ২০০ বর্গফুট। সম্প্রসারণের পর আরও প্রায় ৪ হাজার ৩১২ বর্গফুট প্রশস্ত হবে। এখন বাঘের খাচার আয়তন হবে প্রায় ৭৫০০ বর্গফুট। চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন বলেন, চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। এক সঙ্গে দুই কোটি ১৫ লাখ টাকার দুইটি উন্নয়নমূলক কাজের উদ্বোধন এবং একটি উন্নয়নমূলক কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। বলা যায়, এটি দেশের অন্যতম সমৃদ্ধ এবং সুন্দর একটি চিড়িয়াখানা।
চিড়িয়াখানা ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব মোহাম্মদ রুহুল আমীন বলেন, গত পাঁচ বছরে চিড়িয়াখানায় অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। যোগ করা হয়েছে বাঘ, সিংহ, হরিণসহ বিভিন্ন প্রাণী। চিড়িয়াখানার টিকিট বিক্রির অর্থেই গত পাঁচ বছরে অন্তত ছয় কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ করা হয়েছে।
চিড়িয়াখানা সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের তৎকালীন জেলা প্রশাসক মানুষের বিনোদন, শিশুদের শিক্ষা এবং গবেষণার জন্য নগরের খুলশিস্থ ফয়েজ লেকের পাশে ৬ একর জমির উপর চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা প্রতিষ্ঠা করেন। দেশে প্রথমবারের মতো নিজস্ব প্রযুক্তিতে উদ্ভাবিত ইনকিউবেটরে অজগরের ২৬টি বাচ্চা ফোটানো হয়েছে এ চিড়িয়াখানায়। করোনাকালে জন্ম নিয়েছে বিভিন্ন শ্রেণীর প্রায় একশত প্রাণী। চিড়িয়াখানায় আছে দেশের একমাত্র দুর্লভ সাদা বাঘ। দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ৩৩ লাখ টাকা ব্যয়ে আনা হয়েছিল একটি বাঘ ও একটি বাঘিনী। আছে জেব্রা, সিংহ, হরিণ, ভালুক, বানর, কুমির। আছে ন্যাচারাল মিনি এভিয়ারি (পক্ষীশালা)। ৬০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ২৫ ফুট প্রস্থের পক্ষীশালায় আছে ৬ প্রজাতির ৩০০ পাখি। পাখির মধ্যে আছে, লাভ বার্ড ২০ জোড়া, লাফিং ডাভ ৫০ জোড়া, ফিজেন্ট ১০ জোড়া, রিংনেড পারোট ১০, কোকাটেইল ৫০ ও ম্যাকাও ১ জোড়া। শিশুদের জন্য তৈরি করা হয়েছে কিডস জোন। দৃষ্টিনন্দন করা হয়েছে অভ্যন্তরীণ পথগুলো। বর্তমানে চিড়িয়াখানায় ৩৬০ প্রজাতীর প্রাণী আছে।