যেভাবে দুর্গম পাহাড় থেকে উদ্ধার হলো ৪ যুবক
কক্সবাজারের দুর্গম পাহাড়ে আটকা পড়া ৪ যুবককে উদ্ধার করলো বিমানবাহিনী। ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে হেলিকপ্টার নিয়ে তাদের দরিয়ানগর পাহাড় থেকে উদ্ধার করা হয়। শনিবার সকালে পাহাড়ে উঠার স্বপ্ন নিয়ে তারা কক্সবাজার থেকে যাত্রা শুরু করলেও একের পর এক পাহাড় পেরুতে গিয়ে পথ হারিয়ে ফেলেন। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা পর তাদের উদ্ধার করে কক্সবাজার নিয়ে আসা হয়।
উদ্ধার হওয়া চার যুবক হলেন- কক্সবাজার শহরের ঘোনার পাড়ার মুকুল পালের ছেলে অভিক পাল (২৭), বায়তুশ শরফ সড়কের ছৈয়দ আলমের ছেলে সাইমুম আলম রাফসান (২৬), দক্ষিণ রুমালিয়ারছড়ার বশির আহমদের ছেলে সাবিউল বশর মিজবাহ (২৬) এবং একই এলাকার আবীর শাহ। এদের মধ্যে দু'জন কক্সবাজার সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী। আর বাকি দু'জন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন।
জানা গেছে, সকালে কক্সবাজারের কলাতলী পাহাড়ি এলাকা থেকে যাত্রা শুরু করেছিলেন, কক্সবাজারের চার যুবক। দুই থেকে তিনটি পাহাড় পাড়ি দেন তারা। হিমছড়ি পাহাড় অতিক্রম করার ইচ্ছা ছিলো তাদের। কিন্তু দুই থেকে তিনঘণ্টা পর হারিয়ে ফেলেন পথ। পরে ট্রিপল নাইনে কল দেন তাদের মধ্যে একজন। অবশেষে পাঁচ ঘণ্টা পর সেখানে হেলিকপ্টার নিয়ে হাজির হন বিমানবাহিনীর সদস্যরা। দরিয়ানগর পাহাড় থেকে তাদেরকে উদ্ধার করে আনা হয় কক্সবাজার বিমানবন্দরে।
উদ্ধার হওয়ারা জানান, চোখের সামনে দেখছিলেন বিশাল সৈকত। কিন্তু পথ হারানোয় যেতে পারছিলেন না সেখানে।
তাদের একজন বলেন, অনেকগুলো পহাড় পাড়ি দিয়েছি। আমাদের লক্ষ্য ছিলো হিমছড়ি যাওয়া। একটা সময় দেখি, আমাদের হাতে আর সময় নেই। যেকোনোভাবে ব্যাক করতে হবে। আমরা অনেকভাবে চেষ্টা করেছি। কয়েকটা রুট ছিলো। কিন্তু আমরা কোনো গন্তব্যে যেতে পারছিলাম না। অনেক বড় খাদ ছিলো।
আরেকজন বলেন, একটা পাহাড়ের উপর আমরা অনেকক্ষণ ঘুরছিলাম। কিন্তু নিচে নামার পথ পাচ্ছিলাম না। তখন ভাবলাম এভাবে আর সম্ভব না। ওখানে কিন্তু সব জায়গায় নেটওয়ার্ক থাকে না। একটা পাহাড়ের চুড়ায় উঠে যখন নেটওয়ার্ক পেলাম তখন ট্রিপল নাইনে কল দেয়া হল।
উদ্ধারকারী কর্মকর্তা জানান, অতীতের অভিজ্ঞতা নিয়ে আটকে পড়া চারজনকে উদ্ধার করা হয়েছে।
কক্সবাজারস্থ বিমান বাহিনীর ঘাটি শেখ হাসিনার রাডার ইউনিটের অধিনায়ক গ্রুপ ক্যাপ্টেন মামুনুর রশীদ বলেন, শনিবার বিকালে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে জানানো হয় কক্সবাজারের হিমছড়ি সংলগ্ন গহীন পাহাড়ে ঘুরতে গিয়ে ৪ যুবক দিক হারিয়ে ফেলেছে। পরে তথ্য পেয়ে বিমান বাহিনীর উদ্ধার দলের সংশ্লিষ্টরা ওই যুবকদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে। একই সাথে মোবাইল ট্রাকিং করে দিকভ্রান্ত যুবকদের অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পর উদ্ধার করে কক্সবাজার বিমানবন্দরে নিয়ে আসা হয়।
তিনি বলেন, আমরা ঠিক সময়ে পৌঁছতে না পারলে রাত্রে সেখানে তাদের হয়তো কঠিন সময় কাটাতে হত।
পরে উদ্ধার হওয়া যুবকদের পুলিশের মাধ্যমে অভিভাবকদের হস্তান্তরের দায়িত্ব দেয়া হয় বলে জানান বিমান বাহিনীর উদ্ধারকারী দলের এ কর্মকর্তা।