রাজশাহীতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের ভিত্তি স্থাপন
রাজশাহীতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। বুধবার বিজয় দিবসের সকালে রাজশাহী মহানগরীর প্রাণকেন্দ্র সোনাদীঘি এলাকার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড সার্ভে ইনস্টিটিউটের পরিত্যক্ত জায়গায় এই ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান কৌঁসুলি ও ভাষাসৈনিক বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট গোলাম আরিফ টিপু।
এরপর তিনি সেখানে একটি প্রতীকি শহীদ মিনারে একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে সেখানে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, রাজশাহী সদর আসনের এমপি ফজলে হোসেন বাদশা, ভাষাসৈনিক আবুল হোসেন, ভাষাসৈনিক মোশাররফ হোসেন আখুঞ্জিসহ আরও অনেকে শ্রদ্ধা জানান। প্রতীকি এই শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে ঢল নামে অসংখ্য মানুষের। শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সেখানে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সার্ভে ইনস্টিটিউটের এই জায়গাটি জেলা পরিষদের। সার্ভে ইনস্টিটিউট অন্যত্র স্থানান্তরের পর পরিত্যক্ত ভবন নিয়ে জায়গাটি পড়ে আছে। সেখানে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের একটি প্রকল্পে সাড়ে ১৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু জেলা পরিষদ এই জায়গায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণে আগ্রহী ছিল না। সেখানে বহুতল বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণের জন্য জেলা পরিষদ মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছিল। এ খবরে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে রাজশাহীবাসী। সাধারণ শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার রাজনৈতিক নেতারা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণের দাবিতে কর্মসূচি পালন শুরু করেন। মাঠে নামেন সিটি মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন এবং এমপি ফজলে হোসেন বাদশাও। তারা বিজয় দিবসেই সেখানে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের ঘোষণা দেন। এমন পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার (১৫ ডিসেম্বর) জেলা পরিষদ একটি বিশেষ সভা করে সিদ্ধান্ত নেয়- সেখানে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারই হবে, তবে সেটি জেলা পরিষদের অর্থায়নে এবং ব্যবস্থাপনায়। এ নিয়ে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হবে।
সমাবেশে সিটি মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, রাজশাহীতে এতদিন কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ছিল না। আজ ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হলো। দ্রুতই বাস্তবায়ন করা হবে। তিনি বলেন, শহীদ মিনার একটা আবেগের জায়গা। এখানে সভা-সমাবেশ হবে। মানুষ এসে তার মনের কথা বলবে। ঢাকায় যেমন বিশিষ্ট কোন ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করলে তার মরদেহ শহীদ মিনারে রেখে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়, তাকে শেষ বিদায় জানানো হয়, এখানেও তেমন হবে। দ্রুতই সবাইকে নিয়ে সভা করে দরপত্র প্রক্রিয়ায় হাত দেব।
সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন- ভাষাসৈনিক গোলাম আরিফ টিপু, ভাষাসৈনিক আবুল হোসেন, ভাষাসৈনিক মোশাররফ হোসেন আখুঞ্জি, বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল আলম (বীর প্রতীক), রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মনিরুজ্জামান মনি, প্রবীণ সাংবাদিক মুস্তাফিজুর রহমান খান আলম প্রমুখ।