অভয়নগরে ভুয়া ম্যাজিস্ট্রেটসহ আটক ৪
যশোরের অভয়নগর উপজেলায় ভুয়া নারী ম্যাজিস্ট্রেটসহ চার প্রতারককে আটক করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপজেলার সীমান্তবর্তী ঢাকুরিয়া বাজার থেকে তাদের আটক করা হয়।
তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকার পরিচয়পত্র, সিল, একটি পিএম টিভির লোগোসহ বুম, লাঠি, ভিজিটিং কার্ড, তথ্য প্রাপ্তির আবেদন ফরম ও নগদ টাকা।
তা ছাড়া পুলিশ জব্দ করেছে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত একটি প্রাইভেটকার (ঢাকা মেট্রো গ- ২৩-৪৩২৯) ও দুটি ওয়াকিটকি।
আটকরা হলেন, খুলনা জেলার খালিশপুর থানার গোয়ালখালী এলাকার আবদুর রাজ্জাকের মেয়ে ভুয়া নারী ম্যাজিস্ট্রেট জান্নাতুল ফেরদাউস ইতি (২২), সহযোগী একই থানার গোয়ালখালী এলাকার এসএম বাবর আলীর ছেলে মোস্তফা ফয়সাল (৩৪), খুলনার দৌলতপুর থানার দক্ষিণ পাবলা এলাকার নূর মোহাম্মদের ছেলে শাহাদাত হোসেন (৩৫) ও কোটচাঁদপুরের অলকদী গ্রামের শহিদুল ইসলামের ছেলে জহিরুল ইসলাম (৪০)।
অভয়নগর থানার ওসি মো. তাজুল ইসলাম যুগান্তরকে জানান, মঙ্গলবার বিকালে উপজেলার সীমান্তবর্তী ঢাকুরিয়া বাজারে এক নারী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা হচ্ছিল। তাদের আচরণ সন্দেহ হলে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা তাদের আটক করে পুলিশে খবর দেয়।
পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে এক নারী ও তিন পুরুষকে একটি প্রাইভেটকারসহ উদ্ধার করে রাতে থানায় নিয়ে আসে।
আটককৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা নিজেদের বিভিন্ন পত্রিকার সাংবাদিক দাবি করেন এবং পরিচয়পত্র দেখান। এসময় তাদের ব্যাগ তল্লাশি করা হলে দুটি সিল, একটি পিএম টিভির লোগোসহ বুম, দুটি লাঠি, অসংখ্য ভিজিটিং কার্ড, তথ্য প্রাপ্তির দুটি আবেদন ফরম ও নগদ ২৯ হাজার ৯০০ টাকা পাওয়া যায়।
ওসি আরও জানান, একটি প্রতারকচক্র ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয়ে গত ২৩ আগস্ট অভয়নগরের প্রেমবাগ গেটের দুই হোটেল মালিক ও মাগুরা বাজারের এক রাইস মিল মালিকের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়।
মঙ্গলবার ওই প্রতারকচক্র ঢাকুরিয়া বাজারে ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয়ে অভিযান করছে, এমন সংবাদের ভিত্তিতে এসআই নাসির উদ্দিন, এএসআই তরিকুল ইসলামসহ সঙ্গীয় ফোর্স তাদের আটক করে থানায় নিয়ে আসেন।
রাতে আটকদের সামনে অভিযোগকারী ওই তিন ব্যবসায়ীকে আনা হলে দধিঘরের মালিক মতিয়ার রহমান বলেন, জান্নাতুল ফেরদাউস ইতি নিজেকে ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয় দিয়ে দুই লাখ টাকা জরিমানা করলে অবশেষে পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে আমি মুক্তি পাই। প্রেমবাগের বনলতা সুইটসের মালিক মুরাদ হোসেন জানান, এই নারীসহ আটক তিন ব্যক্তি আমার দোকানে অভিযান চালিয়ে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে মিষ্টি তৈরি করার দায়ে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করেন। আমি ১০ হাজার টাকা দিলে তারা চলে যায়।
মাগুরা গ্রামের রাইস মিল মালিক আবদুল মজিদ জানান, গত ২৩ আগস্ট বিকালে এই আটক চারজন আমার মিলে নিজেদের ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন কাগজপত্র দেখতে চান। কাগজপত্র ও পরিবেশ অধিদফতরের লাইসেন্স নাই এমন অভিযোগে তারা দুই লাখ টাকা দাবি করেন। এসময় বাকবিতণ্ডার শুরু করলে তারা বেরিয়ে যায়।
আটকরা জানান, আমরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা নিলেও নিজেদের ম্যাজিস্ট্রেট দাবি করিনি। এ ঘটনায় আটককৃতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।